দীর্ঘ ২০ বছর বন্ধ থাকার পর শনিবার আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে বহুকাক্সিক্ষত ফেরি সার্ভিস চালু হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আনুষ্ঠানিকভাবে এই ফেরি সার্ভিসের উদ্বোধন করেন। এসময় অনুষ্ঠানে ছিলেন মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এএম নাঈমুর রহমান দুর্জয়। ফেরিঘাট চালুর খবরে খুশি যমুনা নদীর দুই প্রান্তের লাখো মানুষ। ফেরি চলাচল শুরুর মধ্য দিয়ে ফের ব্যবসা বাণিজ্যসহ অন্যান্য বিষয়ের উন্নয়ন হবে বলে ধারণা এলাকাবাসীর। ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু করতে যমুনা নদীতে নতুন করে চ্যানেল তৈরিতে ১২ লাখ ঘন-মিটার বালু ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে অপসারণ করা হয়েছে। দুপারের ঘাট-পন্টুন নির্মাণ, বিকন বাতি, মার্কিং বাতিসহ আনুসাঙ্গিক অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারের এখন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১৪ কোটি টাকা। এদিকে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর নতুন করে ফেরি চলাচল শুরুর বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম জানান, বিআইডব্লিউটিসি এবং বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা ছিল বলে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে বছর দুয়েক আগে ফেরি চলাচল চালু করার পর তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে এবার তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আগের মত আর বন্ধ হয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক জানান, আগে ড্রেজিং সক্ষমতা ভালো না থাকায় ফেরি চলাচলের উদ্যোগ নেওয়ার পরও তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে বি আইডব্লিউটিএ এর এখন ৪৫টি ড্রেজার রয়েছে। এখন ড্রেজিং সক্ষমতা ভালো। কাজেই নাব্য সংকটের অজুহাতে এখন ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে জানান তিনি। ১৯৬৩ সালের ৩১ মার্চ কর্ণফুলী নামের একটি ফেরি দিয়ে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু করা হয়। এরপর ওই নৌরুটে যুক্ত হয়েছিল ছোট বড় মিলে ২৮টি ফেরি। ১৯৯৭ সালে যমুনা সেতু উদ্বোধনের পর গুরুত্ব কমতে থাকে আরিচা ঘাটের। পদ্মা-যমুনার নাব্য সংকট ও দূরত্ব কমানোর জন্য ২০০১ সালের ২২ ফেরুয়ারি আরিচা থেকে পাটুরিয়ায় স্থানান্তর করা হয় ফেরি সার্ভিস। সবশেষ ২০০২ সালের ১৫ নভেম্বর আরিচা ঘাট থেকে শেষ দুটি পন্টুন পাটুরিয়া ঘাটে নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটের ফেরি চলাচল। এর আগে গত ৩ ফেব্রুয়ারি এই রুটে একটি ফেরি পরীক্ষামূলকভাবে চলাচল শুরু করে।