শরীয়তপুর শহরের উত্তরবাজার বড় মসজিদের সামনে শতবর্ষী এক বৃদ্ধকে কে বা কারা শনিবার বিকেলে ঝড়ের সময় ফেলে চলে যায়। বৃদ্ধ এখন নিরুপায়। পরনে তেমন কোন জামা কাপড় ছিলনা। স্থানীয় লোকজন তাকে এ অবস্থায় দেখতে পেয়ে একটি লুঙ্গি কিনে দিয়েছে। অপর এক ব্যক্তি তাকে গায়ে একটি চাদর জড়িয়ে দেয়। গত শনিবার রাতে সে উত্তর বাজার বড় মসজিদের পাশে শুইয়ে ছিল। ভোরে সে মসজিদ থেকে বের হয়। মসজিদের সামনের রাস্তায় পেয়ে অনেকেই তাকে দেখে নানা কথা জানতে চায়। কেউ রুটি ভাজি কিনে দেয়। কেউ ছবি তুলে। আবার কেউবা তার কথা গুলো ভিডি ও করে। হাটতে চলতে পারেনা বৃদ্ধ লোকাটি। বৃদ্ধ বাড়ির ঠিকানাটা ও সঠিক ভাবে বলতে পারেনা। বলেন ভুলে যাই। মনে থাকেনা। মাস খানেক পূর্বে তার স্ত্রী ও মারা গেছেন। এ কারনে তার দুরবস্থা বলে জানান বৃদ্ধ। তাকে আপাতত দেখার কেউ নেই। তার ভাষ্যমতে তার বাড়ি মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলাধীন রাস্তি ইউনিয়নে। তার নাম চানমিয়া সেক বাবার নাম মৃত মৈজদ্দিন সেক। তার দুইটি ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে। তাদের বিয়ের পর থেকেই তারা ও বাবা/মাকে পরিচয় ও দেখা শুনা করেনা। দশ দুয়ার থেকে চেয়ে চেয়ে এনে তাকে খাইয়ে পরিয়ে রাখতেন তার স্ত্রী। ১ মাস পূর্বে সে ও তাকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। এখন তার উপায় কি?। এত নিষ্ঠু পৃথিবী। যে বাবা মা ছোট বেলা খেয়ে না খেয়ে সন্তান কে লালন পালন করে বড় করেছেন। বট বৃক্ষের মত ছায়া দিয়ে নিজের সুখ শান্তির কথা চিন্তা না করে সন্তানের কথা ভেবেছেন। সে বাবা আজ রাস্তায় ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে দশ দুয়ারে ঘুরছেন। আর তার সেই ছেলে মেয়ে বড় হয়ে তার পরিবার পরিজন নিয়ে সুখ শান্তি ভোগ করছেন। অথচ অসহায় বাবার খোজ রাখেনা। কত নিষ্ঠু ও নির্মম হতে পারে এ সমাজ ব্যবস্থা।যে বাবা/মা আল্লাহর পক্ষ থেকে সন্তানের জন্য হচ্ছে নিয়ামত। যে ছেলে মেয়েকে আদর করে কোলে ফিঠে মানুষ করেছেন আজ সেই বৃদ্ধ বাবা ছেলে মেয়ের নাম উ”চারন করতে ও কুন্ঠাবোধ করছেন। বলছেন বাবা সন্তানেরা আমার পরিচয় দেয়না। তারা কেমন আছে কোথায় আছে জানিনা। আমার একটু বাড়ি ছিল তাও অন্য মানুষে নিয়ে গেছে। আমার কিছুই নেই। আমি এখন নিঃস্ব।এই বৃদ্ধ লোকটি কিভাবে এখানে আসছেন কে তাকে এখানে রেখে গেছেন। তা তিনি ভাল ভাবে বলতে পারছেনা।শুধু বলতে পারেন গাড়িতে রিক্সায় এসেছেন। এ অসহায় বৃদ্ধের দায়িত্ব এখন কে নিবে?। বিষয়টি পালং মডেল থানার ওসি তদন্ত মোঃ আতিকুর রহমান কে অবহিত করা হয়েছে। তিনি বলছেন ঘটনাস্থলে গিয়ে জেনে শুনে ব্যবস্থা নিবেন।