প্রায় শতাধিক ভারতীয় চাল বোঝাই ট্রাকচালকরা চরম দুর্ভোগে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে। খালাসের অপেক্ষায় ৫ থেকে ১০ দিন যাবৎ এই বন্দরে পড়ে আছেন তারা। খাদ্য-খাবার সহ বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে দিনাপাতি করছেন বলে অভিযোগ ট্রাক চালকদের। সোমবার (১৫ মার্চ) সকালে হিলি স্থলবন্দর ঘুরে ভারতীয় চাল বোঝাই ট্রাকচালকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৫ থেকে ১০ দিন ধরে তারা এই বন্দরে চাল নিয়ে এসেছে। বন্দরের ভিতরে প্রায় শতাধিক চালের গাড়ি লোড অবস্থায় অবস্থান করছে। চালক এবং হেলপাররা দুই থেকে তিন দিনের খাদ্য সামগ্রী সাথে নিয়ে এসে ছিলো। বর্তমান কয়েক দিন তাদের নিকট কোন খাবার নেই, এমন কি টাকাও ফুরিয়ে গেছে। চাল আমদানির পর থেকে আমদানি কারকরা তাদের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ করছেন না। তারা তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহের জন্যও বন্দর কর্তৃপক্ষ গেটের বাহিরে বের হতে দিচ্ছে না। সব মিলে জানা যায় ভারতীয় ট্রাক চালকরা এক মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ডই ৬৫ঈ০২৮২ নাম্বারের ট্রাক চালক রতন রায় বলেন, আমি ১০ দিন ধরে চাল নিয়ে এসেছি। চালের পার্টির কোন খোঁজ খবর নেই। খাবার-দাবার যা সঙ্গে নিয়ে আসছিলাম তা অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। খুব কষ্টে আছি দাদা। সুভাস বর্মন ডই৬১অ৭৪৫৮ নাম্বারের চালক বলেন, আমি ৫ দিন হলো আসছি,আর কতদিন থাকতে হবে জানি না। সন্তোষ মন্ডল ডই৬৫৬৪৮৬৮ গাড়ি নাম্বার তিনি বলেন, দুই দিনের আশায় বাংলাদেশে আসলাম, আজ তো ৫ দিন হয়ে যাচ্ছে। বাড়িতে বউ বাচ্চা আছে, তারা অনেক চিন্তায় আছে। ৫ দিন ধরে অবস্থান রত মিন্টু সরকার বলেন, দাদা আমরা এখানে কুকুরের মতো পড়ে আছি। খোঁজ কেউ নেয় না। গেটের বাহিরে বের হতে দিচ্ছে না। কবেই দরকারি সব শেষ হয়ে গেছে। ক’দিন থেকে আমরা ঠিকমতো খাবার পাচ্ছি না। না খেয়েও থাকতে হচ্ছে। পরেশ সিং বলেন, এখানে এতো মশার উৎপাত,সবাইকে খেয়ে শেষ করে ফেলছে। আবার আমাদের এই চালের গাড়িগুলোার সাথে পাথর লোড-অনলোড করা হচ্ছে। ভেকুর শব্দ আর পাথরের ধুলায় আমাদের জীবন শেষ। ভারতীয় ট্রাক মালিক দিলীপ ঘোষ বলেন, আমার দুইটি গাড়ি, (ডই৫৯অ২৩৭১) ও (ডই৬১৩২৯৭)। আমার বাড়ি ভারত হিলিতে, ৭দিন হলো চালকরা চাল নিয়ে আসছে। গতকাল সকালে ফোনে বলল আমাদের খাবার শেষ, কি খাবো। গেলো রাতে তারা না খেয়ে ছিলো। তাই নিরুপায় হয়ে আজ ভারত থেকে পাথর বোঝাই ট্রাক চালকদের জন্য খাদ্য আার দেখা করতে আসসছি। তিনি আরও বলেন, এই চালগুলো কবে যে পার্টিরা আনলোড করে আমার গাড়ি ছেড়ে দিবে, বলতে পারছি না। এবিষয়ে হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কারকের সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন জানান, সরকারি শুল্ক কমানোর জন্য হয় তো চাল আমদানি কারকরা বন্দর থেকে চাল বের করছে না। দীর্ঘ সময় ধরে চাল বোঝাই ট্রাক গুলো বন্দরে আটকে থাকার কারণে চালকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ভারতীয় রপ্তানি কারকরা অনেক সময় সার্বিক চিন্তা না করে,এই সব পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি করে। আর তার জন্য ট্রাকচালকদের অসুবিধায় পড়তে হয়।