লকডাউনের কারণে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বিকল্পভাবে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে করে রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকা থেকে পাটুরিয়া ঘাটে আসছেন যাত্রীরা। ফেরিঘাটে আসা ওই যাত্রী মানছেন না কোন স্বাস্থ্য বিধি। ফেরিতে রীতিমতো গাদাগাদি আর গা–ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে পার হচ্ছেন তারা। তাদের মধ্যে নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকছে না। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বাড়ছে। গত রোববার বিকাল পাঁচটার দিকে পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় গিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাটুরিয়া ফেরিঘাটে আসতে প্রত্যেক যাত্রীকে গাবতলি থেকে ৪০০ টাকা এবং সাভার থেকে ৩০০ টাকা করে ভাড়া গুণতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা গেছে, গত সোমবার লকডাউনের শুরুতে সীমিতভাবে ফেরি চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়। শুধু রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স পারাপার ও রাষ্ট্রীয় কাজে ছোট ফেরি চলাচল করবে। এছাড়া রাতে জরুরি পণ্যবাহী যানবাহন ফেরিতে পারাপার হবে। কিন্তু পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ফেরিঘাটে আসা পণ্যবাহী যানবাহনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসকে পারাপার করছে ফেরি কর্তৃপক্ষ। চিত্র দেখে যে কেউ মনে করবে, লকডাউন নয় যেন স্বাভাবিকের মতোই ফেরি চলাচল অব্যাহত রয়েছে। ফেরি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রোববার এই নৌপথে ছোটবড় ১৩টি ফেরি চলাচল করেছে।
রোববার বিকেলে পাটুরিয়া ফেরিঘাটে দেখা যায়, প্রাইভেটকার, হাইয়েচ, মাইক্রোবাস ও মোটরবাইকে করে বাড়ি ফিরছে মানুষ। লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ। এ কারণে এই নৌপথ পাড়ি দেওয়ার একমাত্র মাধ্যম ফেরিতে যানবাহনের সঙ্গে সাধারণ যাত্রীরাও পারাপার হচ্ছেন। বিকেল পাঁচটার দিকে পাটুরিয়ার তিন নম্বর ঘাটে যানবাহনের সঙ্গে যাত্রীরা ছোট ফেরি রজনীগন্ধায় ওঠে পড়েন। গাদাগাদি করে যাত্রীদের ফেরিতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব বজায় নেই। ঢাকার মিরপুর থেকে আসা শান্তি সরদারের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানালেন, পরিবারের তিনিসহ চারজন যাবেন যশোরের পাঁচবাড়ি গ্রামের নিজ বাড়ি। রোববার দুপুরের পর একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করে গাবতলি থেকে স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে পাটুরিয়া ঘাট আসেন। তিনি জানান, চলমান লকডাউনের দুইদিন পর দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। তবে আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোরভাবে লকডাউন চলবে। সবকিছু বন্ধ থাকবে, তাই পুরো পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফিরছেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বি আইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক মহিউদ্দিন রাসেলের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোটবড় মিলে ১৩টি ফেরি চলছে। পণ্যবাহীসহ ব্যক্তিগত যানবাহনের সঙ্গে যাত্রীরা ছুটছেন। তবে ফেরি কর্তৃপক্ষ থেকে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার অনুরোধ জানানো হলেও বিষয়টি উপেক্ষিত হচ্ছে।