বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের দুর্ভাগ্য ৫০ বছর পরও দেশের এরকম ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি দেখতে হচ্ছে। এ থেকে মুক্তি পেতে অবশ্যই নিরপেক্ষ সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন হতে হবে। যারা ক্ষমতা দখল করে আছে তাদের সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গত রোববার (২ মে) দুপুরে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। শনিবারের বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকার মাফিয়াদের নিয়ে দেশ চালাচ্ছে। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই মাফিয়ারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশের পরিণতি যে এটা হবে, সেটা আগে কখনও কল্পনাও করতে পারিনি। সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন করার জন্য একটি নিরপেক্ষ সরকার দরকার। এজন্য জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যারা ক্ষমতা দখল করে আছে তাদের সরিয়ে সত্যিকার অর্থে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক কোটি শ্রমিকের বহুমুখী কল্যাণে এই অনির্বাচিত সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা, শ্রমিকদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের নিশ্চয়তা প্রদান, শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা ও তাদের সন্তানদের উপযুক্ত শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারেনি সরকার। বিশেষ করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ফলে লকডাউনে চাকরিচ্যুতি, বেতন না পাওয়া, শ্রমিকদের মানবেতর জীবনের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
অবিলম্বে সবধরনের শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ, কর্মের নিশ্চয়তা ও লকডাউনে কর্মচ্যুত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ, খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান ফখরুল। বিএনপির প্রস্তাবিত প্রণোদনা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের কমপক্ষে তিন মাসের জন্য ১৫ হাজার টাকা হারে এককালীন অনুদান দেওয়ার করার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘শনিবার দলের স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়াল সভায় ভ্যাকসিনের অভাবে হঠাৎ করে টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে সব বিষেশজ্ঞ এবং বিএনপি এই বিষয়ে প্রথম থেকেই সরকারকে সতর্ক করেছে। কিন্তু সরকার কোনো কর্ণপাত না করে সরকারের নিজস্ব দুর্নীতি পরায়ন কোম্পানির মাধ্যমে শুধু ভারত থেকে একটি কোম্পানির ভ্যাকসিন সংগ্রহ করতে কার্যক্রম নেওয়ায় করায় আজ সমগ্র জাতি বিপদগ্রস্ত হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব জানান, সভায় সম্প্রতি ভারত কর্তৃক একতরফাভাবে অক্সিজেন রপ্তানি বন্ধের ঘোষণায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বিশেষ করে করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য অত্যন্ত জরুরি অক্সিজেন রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত কোনমতেই বন্ধুসুলভ আচরণ হতে পারে না। ইতোপূর্বেও বাংলাদেশের জরুরি প্রয়োজনের সময় বিভিন্ন জরুরি পণ্যের রপ্তানি একতরফাভাবে বন্ধ করায় বাংলাদেশের চরম বিপদাপন্ন হয় বলে সভা মনে করে।
সভায় শুধুমাত্র ভারতের ওপর নির্ভর না করে বিকল্প উৎস থেকে অক্সিজেনসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয় এবং দেশে অক্সিজেন উৎপাদনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল।