আন্তর্জাতিক নিলামে আবারো কমেছে দুগ্ধপণ্যের দাম। মঙ্গলবার নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয় গ্লোবাল ডেইরি ট্রেডের (জিডিটি) সর্বশেষ বৈশ্বিক নিলাম। নতুন মৌসুমের প্রথম নিলামে পণ্যটির মূল্যসূচক দশমিক ৯ শতাংশ কমে যায়। এ নিয়ে দুই মাসে টানা চারটি নিলামে মন্দার মুখে পড়ে পণ্যটি। দুগ্ধপণ্যের বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সর্বশেষ জিডিটি নিলামে দুগ্ধপণ্যের মূল্যসূচক কিছুটা কমলেও আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির বলিষ্ঠ চাহিদা রয়েছে, বাজারদরও শক্তিশালী।
সর্বশেষ নিলামে সর্বোচ্চ ২৬ হাজার ৪৭০ টন দুগ্ধ সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে বিক্রি হয়েছে ২২ হাজার ৮২৫ টন। দাম কমলেও আগের নিলামের তুলনায় সরবরাহ ও বিক্রি বেড়েছে। গত ১৮ মে অনুষ্ঠিত ওই নিলামে সরবরাহ করা হয়েছিল ২৩ হাজার ৬৩০ টন দুগ্ধপণ্য। এর মধ্যে বিক্রি হয় ২০ হাজার ২০ টন।
সর্বশেষ নিলামে প্রতি টন দুগ্ধপণ্যের গড় দাম ওঠে ৪ হাজার ১৫০ ডলারে। গত নিলামের তুলনায় গড় দাম ২২ ডলার কমেছে। এবারের নিলামে ১৬৫ জন ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। এর মধ্যে ১১৬ জন সর্বোচ্চ দামে দুগ্ধপণ্য কিনতে সক্ষম হন।
নিউজিল্যান্ডভিত্তিক সংবাদমাধ্যম স্টাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, নিলামে যেসব দুগ্ধপণ্য সরবরাহ করা হয়, এর মধ্যে একমাত্র ননিযুক্ত গুঁড়ো দুধ থেকেই সরাসরি লাভবান হন খামারিরা। এশিয়ার বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় গত কয়েকটি নিলামে পণ্যটির দাম ঊর্ধ্বমুখী ছিল। তবে সর্বশেষ নিলামে এ পণ্যের দামও কমে যায়। ননিযুক্ত গুঁড়ো দুধের দাম দশমিক ৫ শতাংশ কমে টনপ্রতি ৪ হাজার ৬২ ডলারে নেমে গেছে। তবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এটির দাম ৪৭ শতাংশ বেড়েছে।
এনএক্সজেডের দুগ্ধপণ্যের বাজার বিশ্লেষক স্টুয়ার্ট ডেভিসন বলছেন, মৌসুমের প্রথম নিলামে মূল্যসূচক কমলেও বাজারে ননিযুক্ত গুঁড়ো দুধের দাম বলিষ্ঠ রয়েছে। দুগ্ধপণ্যের নতুন মৌসুম খুব ভালোভাবেই শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। একইভাবে ননিবিহীন গুঁড়ো দুধের দাম দশমিক ৫ শতাংশ কমে ৩ হাজার ৪১৫ ডলারে নেমেছে। তবে এর আগের নিলামে পণ্যটির দাম বাড়তির দিকে ছিল।
আগের নিলামে সরবরাহ করা না হলেও সর্বশেষ নিলামে নানা নাটকীয়তার মুখোমুখি হয় মাখনযুক্ত গুঁড়ো দুধের মূল্যসূচক। পণ্যটির দাম ৭ দশমিক ৫ শতাংশ কমে যায়। নিলামে প্রতি টন মাখনযুক্ত গুঁড়ো দুধের দাম ওঠে ৩ হাজার ৮১০ ডলারে। মাখনের দামে বড় ধরনের পতন দেখা গেছে। ৫ দশমিক ৪ শতাংশ কমে প্রতি টন মাখনের দাম ৪ হাজার ৬৯০ ডলারে নেমেছে। নিলামে সরবরাহকৃত সব দুগ্ধপণ্যের মধ্যে শুধু চেডার পনিরের দাম বাড়তির দিকে ছিল। পণ্যটির দাম দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ৪ হাজার ৩২৪ ডলারে পৌঁছে। অন্যান্য দুগ্ধপণ্যের মধ্যে অ্যানহাইড্রাস মিল্ক ফ্যাটের দাম দশমিক ৮ শতাংশ কমে টনপ্রতি ৫ হাজার ৬৫৪ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ল্যাকটোজের দাম ১ দশমিক ৬ শতাংশ কমে প্রতি টনের দাম ১ হাজার ২৩৬ ডলারে নেমেছে। গতবারের মতো এবারো নিলামে সুইট হুইট মিল্ক পাউডার সরবরাহ করা হয়নি।
আয়ারল্যান্ডভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এগ্রিল্যান্ড জানায়, উৎপাদনকারীরা যাতে বেশি দামে দুগ্ধপণ্য বিক্রি করতে পারেন, সেই দাবি তুলেছেন ইউরোপের খামারিরা। এ দাবিতে তারা চলতি মাসজুড়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কর্মসূচি পালন করবেন। ইউরোপিয়ান মিল্ক বোর্ড (ইএমবি) এ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে।