জেলার বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেতে আউশ আবাদের ধুম পড়ে গেছে। লাভের আশায় কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন চাষিরা। সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতেই মাঠে মাঠে আউশ রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। স্থানীয় চাষিরা জানান, টানা বর্ষণ আর গত কয়েকদিনর বৈরী আবহাওয়ার কারণে বেশ ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছিলেন অনেক চাষি। সেই সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্যই ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা আশায় বুক বেঁধেছেন আউশ আবাদে। মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আউশের ফলন অনেক ভালো হবে বলে মনে করছেন চাষিরা। তাই বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেতে আউশ ধান রোপণ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা। বর্তমানে ক্ষেতের অবস্থা নিয়েও সন্তুষ্ট চাষিরা। কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার আউশ চাষি কামরুজ্জামান বাসসকে বলেন, লাভবান হওয়ার আশায় ১৮০ শতাংশ জমিতে আউশের আবাদ করেছি, এখন পর্যন্ত ক্ষেতের অবস্থা ভালো।
কৃষক আবদি মিয়া বলেন, গত বছর আউশ আবাদে আমার অনেক লাভ হয়েছে, আশা করছি এবারও লাভের মুখ দেখতে পারবো। কৃষক তোফায়েল ও করিমসহ অন্যরা জানান, জমিনে রোপা আউশের বয়স ৮/১০ দিন হয়েছে, এবার ফলন অনেক ভালো হবে। আগে যাদের ক্ষতি হয়েছে তারা এবার পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। অনেকে এখনো আউশ রোপণ করছেন, কেউ আবার ক্ষেত পরিচর্চা শুরু করেছেন।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, এ বছর জেলার ১৫ উপজেলায় ১৩ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে স্থানীয় ও উফশি জাতের আউশ ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার ৬৫ ভাগ ধান ইতোমধ্যে রোপণ শেষ হয়েছে। মোট আবাদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৭৯ হাজার ৫১১ মেট্রিক টন চাল।
কুমিল্লা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বাসসকে বলেন, কৃষকদের আউশ ধান আবাদে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যাতে করে কৃষকরা বাড়তি আউশ আবাদ করে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে। বর্তমানে ধানের দাম ভালো থাকায় অনেকেই আউশ আবাদে ঝুঁকে পড়েছেন, আমরাও তাদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সব জমি যেন কৃষি আবাদের আওতায় আসে সে লক্ষ্যে কুমিল্লাতে কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ৪ হাজার ৩২০ জন কৃষককে সবজি বীজও দেওয়া হচ্ছে, যাতে এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় এখনো আউশ আবাদ করছেন চাষিরা। আমরাও তাদের উৎসাহ দিচ্ছি।