গ্রাম বাংলায় এখনও রয়েছে কু-সংস্কার ও অন্ধ বিশ্বাসের ব্যাপক প্রচলন। বিজ্ঞানের জয় যাত্রায় বিভিন্ন আবিস্কার আর চিকিৎসা বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিস্কার এই অন্ধ বিশ্বাস কমাতে সহায়তা করলেও আজও গ্রামাঞ্চলে মানত প্রথা প্রচলিত রয়েছে। তেমনি এক অন্ধ বিশ্বাস হলো আঁচল বিছিয়ে সন্তান লাভের আশায় ভিক্ষা। ভক্তদের বিশ্বাস নিঃসন্তান বন্ধা মহিলারা মা কালী চোরাচন্ডি মন্দিরে সদ্য¯œান শেষে ভেজা কাপড়ে বসে আঁচল বিছিয়ে সন্তান লাভের জন্য ভিক্ষা মাংবেন। তাদের বিশ্বাস যদি মা কালী চোরাচন্ডি মন্দিরের ফুলধুলি মাথায় ঠেকিয়ে ওই ফুলধুলি একটি তাবিজে ভরিয়ে হাতে কিংবা গলায় পড়লে নিঃ সন্তান নারী সন্তান লাভ করবে। এমন আতœবিশ্বাসে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত ভক্তরা বগুড়ার জেলার আদমদীঘি উপজেলার ডহরপুর গ্রামে মা কালী চোরাচন্ডি মন্দিরে মানত করতে আসে। সরজমিনে দেখা যায়, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা সদরের ডহরপুর গ্রামে মা কালী চোরাচন্ডি মন্দিরে কয়েক জন নারী ¯œান করে ভেজা কাপড়ে ভক্তি ভরে মায়ের মন্দিরে আঁচল বিছিয়ে সন্তান লাভের প্রার্থনা করছে। এ সময় মন্দিরে নিয়োজিত পুরোহিত ভক্তদের হাতে ফুল ধুলি তুলে দিচ্ছে। মন্দিরের পুরোহিত গোপাল চন্দ্র জানান, এখানে মাসের প্রতি সপ্তাহের শনিবার ও মঙ্গলবার পুজা অর্চনা ও মানত কার্যক্রম চলে। তবে অগ্রহায়ন মাসের প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার ধুমধামে মানত ও পুজা অর্চনা হয়। এখানে শত শত ভক্তরা সন্তান লাভের আশায় কিংবা মনের বাসনা পুর্ন হবার পর মায়ের চরনে পুজা দেয়ার জন্য কলা পাষান, সন্দেশ-বাতাসা, ফলমুল, পাঠা, কবুতর মানত দিতে নিয়ে আসে। যে সব ভক্তদের সন্তান লাভ হয় তারা তাদের সন্তানদের এখানে নিয়ে এসে মাথার চুর ন্যাড়া করে ওই চুল মায়ের চরনে নিবেদন করেন। এছাড়াও ভক্তদের আনা প্রসাদ সামগ্রী মা কালীর চরনে নিবেদন করার পর পাঠা খড়গো দিয়ে বলি করা হয় এবং কবুতর গুলো মুন্ড ছিন্ন করা হয়। আগত ভক্ত শিল্পী রানীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি সন্তান লাভের জন্য মা কালী চোরাচন্ডি মন্দিরে পুজা দিতে এসেছি। মন্দিরে আরোও এক ভক্ত ময়না রানী বলেন, আমি মানত করে সন্তান লাভ করেছি তাই আমার সন্তানকে নিয়ে মায়ের কাছে পুজা দিতে এসেছি। আরেক ভক্ত বলেন আমার ছেলের বিয়ে তাই বিয়ের পূর্বে মঙ্গল কামনায় মায়ের কাছে পুজা দিতে এসেছি। বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ আদমদীঘি উপজেলা কমিটির সভাপতি অসিত দেবনাথ ও সাধারন সম্পাদক মিহির কুমার সরকার জানান, পূর্ব পুরুষ থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ভক্তরা সন্তান লাভের আশায় মানত করে মা কালী চোরাচন্ডি মন্দিরে। মানত করার পর তাদের আশা পুর্ন হয় বলেই মায়ের মন্দিরে প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার ভক্তদের সমাগম ঘটে।