বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৪ পূর্বাহ্ন

প্রণোদনা প্যাকেজ: দ্বিতীয় ধাপের ঋণ বিতরণ ১ জুলাই শুরু

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৯ জুন, ২০২১

করোনায় সৃষ্ট আর্থিক দুর্যোগ থেকে পরিত্রাণ দিতে এখন পর্যন্ত ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। অর্থের পরিমাপে প্রণোদনা প্যাকেজের আকার ১ লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। বিশাল অংকের এ প্রণোদনার মধ্যে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকাই ঋণ হিসেবে বিতরণের নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই মধ্যে এসব ঋণের সিংহভাগ বিতরণও হয়েছে। এখন দ্বিতীয় ধাপের ঋণ বিতরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামী ১ জুলাই থেকে প্রণোদনা প্যাকেজের দ্বিতীয় ধাপের ঋণ বিতরণ শুরু হবে। ঋণ হিসেবে বিতরণযোগ্য প্রতিটি প্রণোদনা প্যাকেজের জন্য গত বছরের এপ্রিলে পৃথক নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। নীতিমালায় বলা হয়েছিল, প্রণোদনা প্যাকেজগুলোর মেয়াদ হবে তিন বছর। তবে একজন উদ্যোক্তা কেবল এক বছরের জন্য স্বল্প সুদের ঋণ সুবিধা ভোগ করবেন। ঋণ বিতরণের দিন থেকে এক বছর পার হলে সে ঋণের বিপরীতে সরকার থেকে কোনো সুদ ভর্তুকি দেয়া হবে না। ঋণটি আদায় না হলে সেটি বিতরণকারী ব্যাংকগুলোর স্বাভাবিক ঋণ বলে গণ্য হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারীকৃত নীতিমালার আওতায় এরই মধ্যে বৃহৎ শিল্প ও সেবা খাতের জন্য ঘোষিত ৪০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে বিতরণকৃত বেশির ভাগ ঋণের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এজন্য দ্বিতীয় মেয়াদে ওই প্যাকেজ থেকে ঋণ বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ প্যাকেজ থেকে একজন উদ্যোক্তা তার ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ ঋণ নিতে পারবেন। এ হিসাবে যদি কোনো উদ্যোক্তা এরই মধ্যে ৩০ শতাংশ ঋণ নিয়ে থাকেন, তাহলে তিনি দ্বিতীয়বার প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে কোনো ঋণ নিতে পারবেন না। প্রথমবার যদি কোনো উদ্যোক্তা ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের ৩০ শতাংশ অর্থ না নিয়ে থাকেন, তবে দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি অবশিষ্ট অংশের ঋণ নিতে পারবেন বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজগুলোর বেশির ভাগ ঋণই প্রথম দফায় বিতরণ হয়েছে। প্রতিটি প্যাকেজের জন্যই পৃথক নীতিমালা দেয়া হয়েছে। এখন নীতিমালা অনুযায়ী দ্বিতীয় দফায় ঋণ বিতরণ শুরু হবে। রফতানিমুখী শিল্পের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল জোগানোর মাধ্যমে শুরু হয় প্রণোদনা প্যাকেজের। এরপর ক্ষতিগ্রস্ত বৃহৎ শিল্প ও সেবা খাতের জন্য ৪০ হাজার কোটি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ২০ হাজার কোটি, কৃষি খাতের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন প্রকল্প, নিম্ন আয়ের পেশাজীবী কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ৩ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন প্রকল্পসহ প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকার স্বল্প সুদের ঋণ প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিসংখ্যানে বলা হয়, গত মে পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৮৩ হাজার ৫৩ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করে। এর মধ্যে ১২টি প্যাকেজের আওতায় প্রায় ১ কোটি ২৪ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ সুবিধাভোগী হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যে বলা হয়, সরকার ঘোষিত ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজে মোট অর্থের পরিমাণ ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা। এসব প্যাকেজের আওতায় ৫ কোটি ৮১ লাখ ১৫ হাজার ২১১ জন ব্যক্তি ও ১ লাখ ৪ হাজার ৯৯৬টি প্রতিষ্ঠান প্রত্যক্ষ সুবিধা পেয়েছেন বলে দাবি করা হয়। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় বিতরণকৃত ঋণের একটি অংশ ব্যাংকে ফিরেছে। তবে কিছু উদ্যোক্তা যথাযথভাবে ফেরত দিতে পারছে না। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা সত্ত্বেও উদ্যোক্তারা যে হারে অর্থ ফেরত দিচ্ছেন, তাতে আমরা হতাশ নই। প্যাকেজের আওতায় বিতরণকৃত অনেক ঋণের মেয়াদই এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ি, ১ জুলাই থেকে দ্বিতীয় মেয়াদের ঋণ বিতরণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com