উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগীতে পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৩০ মণ ওজনের একটি ষাঁড় প্রস্তুত করেছেন এক খামারি। আট ফুট লম্বা কালো রঙের ষাঁড়টির বয়স চার বছর। এর দাম হাঁকা হয়েছে ১৩ লাখ টাকা। উপজেলার সবচেয়ে বড় এই ষাঁড়টির নাম ভালোবেসে রাখা হয়েছে ‘মহারাজ’। প্রতি বছর কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ওজন এবং দামে আলোচনায় উঠে আসে নানা বাহারি নামের ষাঁড়। এবার সেই তালিকায় উঠে এসেছে বেতাগীর ‘মহারাজ’। উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানায়, এ খামারে মত উপজেলায় আরও ৩৫১ টি খামার রয়েছে। তবে এতো বড় ষাঁড় আর কোথাও নেই। অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের এ ষাঁড়টিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বটতলা গ্রামের উদ্যোক্তা হাফিজুর রহমান সোহাগ চার বছর ধরে লালন-পালন করে আসছেন। তার জাহানারা এগ্রো ফার্মেই মহারাজের জন্ম। সোহাগের খামারে মহারাজ ছাড়াও আসন্ন কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে চারটি ষাঁড়। এর মধ্যে ৩০ মণ ওজনের মহারাজের দাম হাঁকা হচ্ছে ১৩ লাখ টাকা। জানা গেছে, শান্ত প্রকৃতি ও কালো রঙের অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের এ ষাঁড়টির উচ্চতা পাঁচ ফুট এবং লম্বায় আট ফুট। এটির ওজন ৩০ মণ বা এক হাজার ২০০ কেজি হবে বলে সোহাগ দাবি করেন। প্রতিদিন মহারাজের খাদ্য তালিকায় ৩০ কেজি দানাদার খাবর ও সবুজ ঘাস থাকে। শুধু মহারাজের দেখাশোনার জন্যই খামারে রয়েছে আলাদা একজন লোক। চার বছর বয়সী মহারাজকে আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য প্রস্তুুত করা হয়েছে। ইতেমধ্যে মহারাজের হাঁক-ডাক চারদিকে ছড়িয়ে পরায় প্রতিদিনই তাকে দেখতে খামারে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা। প্রতিদিনই অনেকেই এটি দেখতে আসেন। এমনই একজন জেলা শহর বরগুনা থেকে মহারাজকে দেখেতে আসেন মোহাম্মদ রফিক উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘কয়েকজনের কাছে মহারাজের নাম শুনে দেখতে এলাম। এত বড় ষাঁড় দেখে অবাক হয়েছি।’ স্থানীয় মেসার্স জাহানারা এগ্রো ফার্মের মালিক হাফিজুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘ষাঁড়টির রং কালো। আদর করেই এর নাম রাখা হয় মহারাজ। মহারাজ খুবই শান্ত প্রকৃতির। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরামর্শে সম্পূর্ণ দেশীয় খাবার খাওয়ানো হয়েছে। ক্ষতিকর কোনো ওষুধ কিংবা বিকল্প খাবার ছাড়াই মহারাজের ওজন প্রায় ৩০ মণ। এর দাম চাইছি ১২ লাখ টাকা।’ এদিকে করোনার এ সময়ে হাটে মহারাজকে বিক্রি করা নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন সোহাগ। তিনি আরও বলেন, ‘মহারাজের পেছনে প্রতিদিন অনেক টাকা খরচ হয়। তার নিরাপত্তা দিতেও এখন রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমাদের মতো ছোট খামারির ঘরে এত বড় ষাঁড় রাখাও কঠিন। এ ঈদে মহারাজকে বিক্রি করতে না পারলে আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হব।’ সোহাগ জানান, দশ বছর আগে ২০১১ সালের শেষের দিকে মাত্র একটি গরু দিয়ে খামার শুরু করেন তিনি। বর্তমানে তার খামারে ১২টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে চারটি ষাঁড় এবার কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘এ উপজেলায় এই ষাঁড়ই সবচেয়ে বড়। স্থানীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরামর্শে দেশীয় খাবার খাইয়ে ষাঁড়টিকে লালন-পালন করা হচ্ছে। আমরা ষাঁড়টিকে নিয়মিত দেখাশোনা করছি।