বহুদিন পর গুয়ারেখা ইউনিয়নে হিন্দু মুসলিম ভোটাররা বেজায় খুশি সদ্য শেষ হওয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে। স্বাধীনতার পর যেন আর একটা স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে ভোট দেওয়ার পরিবেশ দেখে। স্ব স্ব ভোট প্রয়োগ করার স্বাধীনতা ছিল না বিগত সময়ে। সাধারণ ভোটাররা ছিল এক ধরনের কাঠের পুতুল। বিগত সময়ে বছরের পর বছরের অতীত ইতিহাস সকল ভোটারদের মনের মধ্যে লুকিয়ে ছিল।এবারের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দাঁত ভাঙা জবাব দিতে ভুল করেনি শান্তি প্রিয় হিন্দু মুসলিম ভোটাররা। এবারের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন একটা ইতিহাস সৃষ্টি করে সর্ব মহলের কাছে। নৌকা নয় বরং যোগ্য নেতা ও সময় উপযোগী প্রার্থী দরকার ছিল গুয়ারেখা ইউনিয়নে। এদিকে সমগ্র উপজেলার মধ্যে দু,একটি বাদে বাকি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে নৌকার কঠিন পরাজয় হয়েছে।আসলে নৌকা বা ধানের শীষ নয় বরং যোগ্য প্রার্থী দরকার স্ব স্ব ইউনিয়নের মধ্যে। দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষের প্রাণের দাবী,আমার ভোট আমি দিবো,যাকে খুশি তাকে দিবো। আর হ্যা আমরাও সাধারণ ভোটাররা সেই কঠিন কাজটি করতে সক্ষম হয়েছি। গুয়ারেখা ইউনিয়ন সহ স্বরূপকাঠি সদর ইউনিয়ন, আটঘর কুডিয়ানা ইউনিয়ন, জলাবাড়ী ইউনিয়ন, সারেংকাঠী ইউনিয়ন, সোহাগ দল ইউনিয়ন, বলদিয়া ইউনিয়ন, সুটিয়াকাঠী ইউনিয়ন ও দৈহারী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে একটা ইতিহাস সৃষ্টি হয়। তবে কমবেশি বিতর্ক রয়েছে সমুদয়কাঠী ও সুটিয়াকাঠীর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে।সমগ্র বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বহুকাল পর শান্তির প্রতিক ও সাদা মনের মানুষ মাননীয় মন্ত্রী এ্যাড শ ম রেজাউল করিমের আর্শীবাদে নেছারাবাদ উপজেলায় একটা চমৎকার নির্বাচন হয়েছে। দলমত নির্বিশেষে সাধারণ ভোটাররা চমৎকার পরিবেশ দেখে বেজায় খুশি। স্বরূপকাঠি উপজেলার মধ্যে দু,একটি বাদে বাকী সকল ইউনিয়নে চমৎকার ভাবে স্থানীয় নির্বাচন পরিচালনা করেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা।তবে নির্বাচনী প্রচারণা সহ পরবর্তী সময়ে সমুদয়কাঠীর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে অবাধ ও সুষ্ঠুতা নিয়ে শংকা ছিল। এদিকে গুয়ারেখা ইউনিয়নে বহু দিন পর সাধারণ ভোটাররা বেজায় খুশি জন নন্দিত, সদালাপী ও মাটির মানুষ বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ রব সিকদারকে জয়ী করতে পেরে। ভোটারদের আর্শীবাদ নিয়ে শেষ সময়ে দারুণ মুন্সিয়ানার ছাপ দিয়ে নৌকার কান্ডারী ও বর্তমান চেয়ারম্যান বাবু শুভ্রত ঠাকুরকে ঘায়েল করেন। সাদা মনের মানুষ হিসেবে নিজেকে মেলে ধরতে সক্ষম হয়েছিল বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ রব সিকদার। নিজ গ্রাম পাটিকেলবাড়ী সহ ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামের অসহায় পরিবারের সদস্যরা মন খুলে কথা বলতে পারেন। আর সেই আলোকে সাধারণ ভোটাররা দাঁত ভাঙা জবাব দিয়েছেন স্ব স্ব ভোট প্রয়োগ করার মধ্য দিয়ে। এ ব্যাপারে নির্বাচনের পর সরে জমিনে জেলার ও স্থানীয় গণ মাধ্যম কর্মীরা গুয়ারেখা ইউনিয়নে যান। নৌকার হেভিওয়েট প্রার্থী ও সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান বাবু শুভ্রত ঠাকুরের পরাজয়ের বিশেষ বিশেষ কারণ জানতে।সাধারণ ভোটাররা পরাজয়ের প্রধান প্রধান কারণ গুলো তুলে ধরেন অকপটে। প্রথমত স্থানীয় রাজনীতির মাঠে তিনটি গ্রুপে বিভক্ত ইউনিয়ন রাজনীতি। মাঠ পর্যায়ে সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান শুভ্রত ঠাকুরের অবস্থান ছিল প্রায় শ্যাম রাখি না কুল রাখির মত। যদিও সামনা সামনি কেহই মুখ খুলতো না। দ্বিতীয়ত সরকারি ভাবে ইউনিয়ন পরিষদ হল পাটিকেলবাড়ী এলাকায়। বিগত সময় থেকে কোন সময়ই পরিষদে বসেননি নিজ ইচ্ছায়। বরং বিগত সময়ে বাটনাতলাতেই প্রধান অফিসে পরিনত করাও পারজেরর আর একটি কারণ ।তৃতীয়ত সাধারণত মানুষের সাথে মিশতে না পারাও পরাজয়ের অন্যতম কারণ। চতুর্থত ইউনিয়ন পর্যায়ে আহামরি উন্নয়ন করতে শতভাগ ব্যার্থ। পঞ্চমত গত উপজেলা নির্বাচনে নৌকার প্রতিকের বিরুদ্ধে ভোট চাওয়ার পাশাপাশি সরাসরি নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়াও কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।ষষ্ঠ কারণ বহু হিন্দু পরিবারের সদস্যরা সরাসরি বিপক্ষে চলে যাওয়াও আর একটি কারণ। সপ্তমত প্রবীণ শিক্ষক শৈলেন হালদার সহ সাবেক চেয়ারম্যান সরাসরি মুসলিম বিদ্যোষী। সাবেক স্কুল শিক্ষক শৈলেন হালদার মোবাইলে মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রচারণাও কাল হয়ে দাঁড়ায়। অষ্টমত এলাকায় শালিসি বৈঠক না করে সরাসরি থানায় পাঠিয়ে দেওয়াও নির্বাচনে কাল হয়ে দাড়িয়েছে। অপরদিকে সময়ের আলোচিত ও শান্তি প্রিয় নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ রব সিকদার ঠান্ডা মাথায় ভোটারদের আর্শীবাদ নিয়ে চূড়ান্ত চমক সৃষ্টি করে বিজয়ের হাসি হেসেছে। হিন্দু পরিবারের সদস্যরা মনে প্রানে সাপোর্ট দিয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ রব সিকদারকে। পাশাপাশি স্থানীয় রাজনীতির মাঠে একটা অংশ সরাসরি শুভ্রত ঠাকুরের বিরোধিতা করেছেন। বিগত সময়ে বছরের পর পর একক রাম রাজত্বের কারণে সাধারণ ভোটাররা সুকৌশলে ভোটের মাধ্যমে চমৎকার জবাব দিয়েছে।নাম না প্রকাশের শর্তে বহু হিন্দু পরিবারের সদস্যরা বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান শুভ্রত ঠাকুর বিগত সময়ে চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে সাধারণ মানুষকে মানুষ মনে করতেন না আর হিংসা ছিল মনে মনে।সব কিছু মিলিয়ে ঠান্ডা মাথায় হিন্দু মুসলিম ভোটাররা তিল তিল করে শক্ত অবস্থান তৈরি করে ভোটের মাধ্যমে উপযুক্ত জবাব দিতে ভুল করেনি।এ ব্যাপারে পরাজিত চেয়ারম্যান শুভ্রত ঠাকুরের সাথে কথা বলার চেষ্টা করে গণ মাধ্যম কর্মীরা। তবে মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। এদিকে সময়ের আলোচিত ও সাদা মনের মানুষ বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ রব সিকদারের সাথে কথা হয় গণ মাধ্যম কর্মীদের। তিনি অকপটে বলেন, আসলে এবিজয় হিন্দু মুসলিম ভোটারদের বিজয়। তবে আমি একজন খাদেম হিসেবে নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। মিডিয়ার আর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। আর হিংসা পতনের মূল কারণ আর সেই আলোকে আগামীর জন্য পথ চলবো সকলকে সাথে নিয়ে। ভোটাররা আমার প্রাণ আর আমার অন্তরের অন্তস্তলের ভালবাসার ফসল।