করোনা সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় ১ জুলাই থেকে সারাদেশে কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। লকডাউনের কারণে রংপুরের গঙ্গাচড়ার হাট-বাজারগুলোতে আগের মতো মানুষজন না থাকায় আয় রোজগার কমে গিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। চলমান লকডাউনের মাঝে কীভাবে পরিবার-পরিজন নিয়ে চলবেন সেই দুঃশ্চিতায় পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। গতকাল মঙ্গলবার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, হাট-বাজারে মানুষজন তেমন নেই, যার কারণে কাজ না থাকায় নিশ্চুপ কাস্টমারের অপেক্ষায় জুতা-ছাতার কারিগররা। কোনো কাজ এলে যাই যে দাম বলুক সেটি আর ঘুরিয়ে না দিয়ে কাজ করে দিচ্ছেন। অপরদিকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে রিকশা, অটো চালকরা। যাত্রীর আশায় বসে আছেন কিন্তু যাত্রী ততটা নেই। অন্যদিকে কাজ না থাকায় দিনমজুর বাড়ীতে বসেই আছেন কারণ লকডাউন। তারা চিন্তা করছেন কিভাবে লকডাউনের মাঝে তাদের সংসার চলবে। গঙ্গাচড়া সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাচীরের পাশে জুতার কারিগররা তাদের কর্ম করেন। দ্বিচরন দাস ব্যাঙ্গা বলেন, লকডাউনের কারণে কোনো কাজ কর্ম নেই। একেবারে অলসের মতো বসে আছি। এরপর বৃষ্টির কারণে বাজারে লোকজন নেই, মানুষজন যদি না থাকে তাহলে কাজ হবে কোথা থেকে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ৭০-৮০ টাকা ইনকাম করেছি। এই টাকা দিয়ে কী হবে? না চাল কিনতে পারব, না মেয়ের জন্য ওষুধ কিনতে পারব। আমার পরিবারে ৫ জন খানেওয়ালা। সবাই আমার উপর নির্ভরশীল। তাই বসে আছি আর যদি কিছু কাজ হয়। তা দিয়ে অন্তত মেয়ের ওষুধ কিনতে পারি। লকডাউনের আগে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম হতো। তাই দিয়ে কোনো রকমে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়াসহ সংসার চলত। অটোচালক মানিক জানান, পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাঝে মধ্যে অটো চালাই। দিনে কোনো রকমে শত টাকা রোজগার করি তা দিয়ে সংসার চলে না। চা দোকানী আলম বলেন, লকডাউনের কারণে আমার চায়ের দোকান বন্ধ। বউ-ছইল নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। দিনমজুর আশেক আলী, আফছার আলীসহ কয়েকজন জানান, লকডাউনে শহরে কাজ নেই, বাড়ীতে বসে আছি। আগের লকডাউনে মাঝে মধ্যে কাজ করেছি। এবারেই কোনো কাজ নেই। রিকশা চালক মনছুর জানান, আমার বয়স বেশি তাছাড়া আমার রিকশায় মটর নেই, দুপা দিয়ে বিশা চালাই। যাত্রী আমার রিকশায় বেশি চরে না। অতিকষ্টে দিনযাপন করছি। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জানান, সরকারি ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতূল।