মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

নদীভাঙনে ৫৫ হাজার পরিবার নিঃস্ব

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই, ২০২১

ভাঙনে উজাড় হচ্ছে জমি। বিলীন হচ্ছে হাজারো বসতবাড়ি। এক তালিকা তৈরি শেষ হতেই নতুন করে কড়া নাড়ছে বন্যা। গতবছরের বন্যায় দেশের ২৯টি জেলায় দেখা দেয় তীব্র ভাঙন। আর তাতেই ১০৯টি উপজেলার ৫৫ হাজার ২২১টি পরিবারের জমিজমা ও বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সহায়তা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে ২০২০ সালের শেষের দিকে একটি তালিকা করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর। তাতেই উঠে এসেছে এ তথ্য। এদিকে তালিকা প্রকাশ পেতে না পেতেই ফের বন্যার আশঙ্কায় তীরবর্তী নুষের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে তৈরি করা ওই তালিকায় দেখা যায়, দেশের প্রধান প্রধান নদীগুলোর তীরবর্তী জেলার মানুষই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নদীভাঙন রোধে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ১০৬টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকার কাজ হবে প্রকল্পগুলোতে। মন্ত্রণালয়ের দাবি, প্রকল্পের কাজ শেষ হলে আগের তুলনায় নদীভাঙনের ক্ষতি কম হবে।

তালিকা অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ভোলায়। এই জেলার ১২ হাজার ৬৯টি পরিবার ভাঙনের শিকার। এরপরই আছে কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা ও নোয়াখালী।
অধিদফতরের তালিকা: পরিবার ধরে ক্ষতিগ্রস্তের তালিকা করেছে অধিদফতর। ক্ষতির শিকার হয়েছে- মুন্সীগঞ্জের পাঁচ উপজেলার ৮১৮টি পরিবার। চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিন উপজেলার ১১৭৭টি। লালমনিরহাটের চার উপজেলার ৭৬৮টি। বগুড়ার তিন উপজেলার ১২৪৫টি। মাদারীপুরের চার উপজেলার ১৪৪৯টি। গাইবান্ধার চার উপজেলার ৩৯৮৯টি। রাজবাড়ীর চার উপজেলার ১১১৭টি। কিশোরগঞ্জের সাত উপজেলার ১১১০টি। নোয়াখালীর দুই উপজেলার ৩২৯৯টি। বাগেরহাটের দুই উপজেলার ৩৯৩টি। জামালপুরের সাত উপজেলার ৫৬১টি। ফরিদপুর চার উপজেলার ৮৫৪টি। চাঁদপুরের তিন উপজেলার ১২৯২টি। ঢাকার দুই উপজেলার ৭২৬টি। পাবনার এক উপজেলার ১৩৫টি। মানিকগঞ্জের পাঁচ উপজেলার ৮৭৩টি। টাংগাইলের ছয় উপজেলার ৪১৬০টি। ঝালকাঠির চার উপজেলার ৬৫৯টি। গোপালগঞ্জের এক উপজেলার ২৫৩টি। লক্ষ্মীপুরের চার উপজেলার ২৭৮৬টি। সিরাজগঞ্জের পাঁচ উপজেলার ৪৪৯৮টি। রংপুরের তিন উপজেলার ৮৮৩টি। নীলফামারীর এক উপজেলার ২৭টি। পিরোজপুর ছয় উপজেলার ১৫২০টি। নড়াইলের দুই উপজেলার ৩৭০টি। শরীয়তপুরের চার উপজেলার ৭৬৪টি। কুড়িগ্রামের ছয় উপজেলার ৪৫৫৮টি ও বরিশালের আট উপজেলার ২৮৬৮টি পরিবার। প্রতিবছরই মেঘনার ভাঙনের কবলে পড়ে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চলের ফসলি জমি, রাস্তা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ঘর-বাড়ি বিলীন হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ- ভাঙন রোধে নেওয়া হচ্ছে না স্থায়ী কোনও ব্যবস্থা। চরাঞ্চলের এসব ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ নিজেরাই বালির বস্তা, বাঁশ ও বেড়া দিয়ে কোনোভাবে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চলের ৮ ইউনিয়নের চাঁনপুর, চরমধুয়া, মির্জার চর ও শ্রীনগর ইউনিয়ন মেঘনার ভাঙনের কবলে পড়েছে। এ চার ইউনিয়নের ১৫ গ্রামে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙনে বিলীন হয়েছে চাঁনপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের ৩৫ বসতভিটা। এর আগেও ওই ইউনিয়নের ৬টি গ্রাম- সওদাগরকান্দি, ইমামদিকান্দি, কুড়েরপাড়, মোহিনীপুর, চানঁপুর ও কালিকাপুরের কয়েক শ’ একর জমি, বাজার, রাস্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়ি বিলীন হয়েছে। অনেক গ্রামের প্রায় ৬০ শতাংশও বিলীন হয়েছে বলে জানা গেছে। চরমধুয়া গ্রামের বাসিন্দা খলিলুর রহমান রানা বলেন, ‘প্রতিবছর ভাঙনের কবলে পড়ে এলাকার ভৌগলিক চিত্র পাল্টে যাচ্ছে। নদীর সঙ্গে যুদ্ধ করে আমরা নিঃস্ব, ক্লান্ত।’
মূলত ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত অতি দরিদ্র ও দুস্থ পরিবারগুলোকে আর্থিক সহযোগিতা ও তাদের জীবনমান উন্নয়নে এ তালিকা করেছে সরকার। ঘর নির্মাণ, প্রতিবন্ধী ও নারী-শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ সামজিক বেষ্টনীর আওতা বাড়ানো হবে তালিকার ভিত্তিতে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচবিকে সভাপতি করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কর্মকর্তাসহ ১৫ সদস্যের একটি জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি করা হয়েছে। তারা জেলা প্রশাসকদের নেতৃত্বে স্থানীয় কমিটিকে নির্দেশনা দিবেন।
সংস্কারের জায়গা থেকেও বালু উত্তোলন: পানি উন্নয়ন বোর্ড যেসব নদীর তীরের সংস্কার করে, সেসব নদী থেকেও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হয় বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। তিনি বলেন, ‘আমরা সকল জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়েছি, যাতে কোনও নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা না হয়। কিন্তু তারপরও রাতের আঁধারে কিছু অসাধু লোক বালু তুলছে। এমনকি যেসব তীর আমরা সংস্কার করেছি, সেখান থেকেও উত্তোলন করা হচ্ছে। এটা কেবল পুলিশ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সদস্যরা ঠেকাতে পারবে না। স্থানীয়দেরও সচেতন হতে হবে। বাধা দিতে হবে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের।’- বাংলা ট্রিবিউন




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com