কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে ঢাকায় যাওয়ার জন্য রংপুরে শত শত মানুষ মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। এসব মানুষ বিভিন্ন পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। চাকরির কারণে তাদের ঢাকায় যেতে হবে। তাই তারা রংপুর শহরের মডার্ন মোড় এলাকায় সমবেত হয়েছেন। তারা পণ্যবাহী ও খালি ট্রাকে চড়ে রওনা দেন, তবে পুলিশ তাদের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শত শত মানুষ জড়ো হয়ে কোনো না কোনো যানবাহনে চড়ছেন। এর মধ্যে কিছু ট্রাক রয়েছে। রয়েছে থ্রি–হুইলার, ভটভটি, পিকআপ ভ্যান। সকালের দিকে কিছু গাড়ি রংপুর শহরের মডার্ন মোড় থেকে ছেড়েও গেছে। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ বাড়তে থাকে। শেষে পুলিশ এসে এসব যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে উপায় না পেয়ে ঢাকা যাওয়ার জন্য বের হওয়া শত শত নারী–পুরুষ ওই এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেছেন।
গতকাল শনিবার বেলা ২টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলছিল। ফলে মহাসড়কের দুই পাশে যানবাহনও আটকা পড়েছে। এ অবস্থা চলে আসছে দুপুর ১২টা থেকে।
রংপুরের বুড়িরহাট এলাকা থেকে ঢাকা যাওয়ার জন্য এখানে এসেছেন সুমী বেগম (৩০)। তিনি ঢাকার একেএস গ্রুপ পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। চাকরির কারণে তাকে ঢাকা যেতেই হবে। প্রতিদিনই যাওয়ার জন্য চেষ্টা করেছেন। কিন্তু পরিবহণের নানা সমস্যার কারণে যেতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের অনেকে ঢাকা গেছেন। তাহলে আমরা কেন যেতে পারব না? আজকে ভোর থেকে মহাসড়কে দাঁড়িয়ে আছি। যানবাহন যেটা পেয়েছি সেটাতেই চড়েছি।’ শহরের মডার্ন মোড় এলাকায় দেখা যায়, শত শত মানুষ গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন। প্রচ- রোদের কারণে কেউ গাছের নিচে, কেউ দোকানের শেডে বসে আছেন। তাদের অধিকাংশই পোশাকশ্রমিক। ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় চাকরি করেন। সকাল থেকে ইতিমধ্যে কিছু মানুষ চলেও গেছেন। বেলা ১১টার পর মানুষ যখন বাড়তে থাকে, তখন পুলিশ যান চলাচলে বাধা দেয়। এমন অবস্থায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। তাদের একটাই দাবি, চাকরির কারণে তাদের ঢাকায় যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
রংপুরের পীরগাছা উপজেলার শারমিন আক্তার (৩২)। তিনি সাভারের এবিএস পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকার যাবার না পারলে খুব অসুবিধা হবে। যেমন করি হউক যাওয়া লাগবে। চাকরি চলি যাওয়ার ভয় আছে। তখন কী করি খামো?’ রংপুর শহরের সর্দারপাড়া এলাকার ইয়াছিন আলী (৩৫)। তিনি ঢাকার একেএস গ্রুপের পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তিনি বলেন, ‘মালিকপক্ষ ঢাকায় যেতে বলেছে বলেই ছুটে যাচ্ছি। রাস্তাত তো অনেক গাড়ি চলে। কষ্ট করে হলেও মাননুষজন যাচ্ছেন। তাই দুই সন্তান ও স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে কষ্ট হলেও যাওয়ার চেষ্টা করছি।’ কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রশিদ বলেন, কঠোর বিধনিষেধের কারণে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বাধা দেওয়া হয়েছে। তাই কিছু করার নেই।