মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

কাঁদো বাঙালি কাাঁদো

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ৮ আগস্ট, ২০২১

শোকের মাস আগস্টের আজ নবম দিন। এই দিন এলেই মনের ক্যানভাসে ভেসে ওঠে বাংলাদেশের ক্ষতবিক্ষত ছবি। কবির ভাষায়,‘কফিনের দরজা খুলতেই চোখে পড়ল/ শুয়ে আছেন একটি লোক/ লোকটির নাম বাংলাদেশ।’ বাংলাদেশের হৃদয়সম ‘লোকটির’ অপমৃত্যুর মধ্য দিয়ে দেশদশের হৃদয় ক্ষতবিক্ষত হয়েছিল ১৯৭৫ সালের রক্তাক্ত ১৫ আগস্ট। ‘সেদিন আকাশে শ্রাবণের মেঘ ছিল, ছিল না চাঁদ’। সাংবাদিক মাহমুদ হাসান এ নিবন্ধে লিখেছেন, “ছিল না বৃষ্টি, ছিল না আঁধার বিদীর্ণ করা জ্যোৎস্না। শ্রাবণের কালো মেঘের আঁধারে ডুব দিয়েছিল বৃষ্টিহীন রুক্ষরাত। আর এই অমানিশার অন্ধকারে রচিত হয়েছিল ইতিহাসের কলঙ্কিত অধ্যায়। ভোরের আলো ফোটার আগেই ঘোর কৃষ্ণপ্রহরে হায়েনার দল বেরিয়ে আসে। ট্যাঙ্ক-মেশিনগানের গর্জনে নিদ্রাচ্ছন্ন নগরীর নীরবতাকে ছিন্নভিন্ন করে ওরা সংহার করে তাঁকে, ‘লোকটির নাম বাংলাদেশ। শেখ মুজিবুর রহমান।’ সেদিন ঘাতকের দল ইতিহাসের মহানায়ককে, বাঙালির জাতিরাষ্ট্রের স্রষ্টাকে, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতাকে হত্যা করে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালিকে সপরিবার হত্যাকা-ের মধ্যদিয়ে জাতির ললাটে লেপন করে কলঙ্কের কালিমা। সেই হত্যাযজ্ঞের মর্মস্পর্শী দৃশ্যপট চিত্রায়িত হয়েছে কবিতায় ‘তবু তোমার বুকেই গুলির পর গুলি চালালো ওরা/ তুমি কি তাই টলতে টলতে টলতে টলতে বাংলার ভবিষ্যৎকে/ বুকে জড়িয়ে সিঁড়ির ওপর পড়ে গিয়েছিলে?’ শেষ শ্রাবণের সেই মর্মন্তুদ দিনে বিশ্বাসঘাতকরা যাকে বিনাশ করতে চেয়েছিল সেই শেখ মুজিব মরেননি। বাঙালির হৃদয়-মননে অবিনাশী হয়ে রয়েছেন। ‘মুজিব ছিলো তো! মুজিব এখনো আছেন! ওই তাকে দেখা যায়।/ দেখা যায় ওই দিনের রৌদ্রে, রাতের পূর্ণিমায়।/…মুজিব! মুজিব! জনকের নাম এত সহজেই মোছা যায়!’ ইতিহাসই তাঁর স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছে, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। সেই সত্যটি উচ্চারিত হয়েছে কবিতায় ‘তার জন্য একটি জাতির উন্মেষ, নতুন দেশের অভ্যুদয়/ তার মৃত্যু অমোচনীয় কলঙ্ক, এক করুণ ট্র্যাজেডি/ বঙ্গোপসাগর শোভিত ব-দ্বীপে জ্বলজ্বল/ তার দুরপনেয় নাম শেখ মুজিবুর রহমান।’
ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনকে উৎসর্গ করে গেছেন মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য। স্বদেশের অবহেলিত দুঃখী মানুষের সার্বিক মুক্তির জন্য। তাঁর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীনের মাত্র চার বছরের মাথায় দেশি-বিদেশি চক্রান্তের শিকার হয়েছিলেন জাতির পিতা। ১৯৭১ এর ২৬ মার্চ ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের যে ঐতিহাসিক বাসভবন থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, সেই গৃহেই বুলেটে বিদীর্ণ করা হয়েছিল তাঁকে। অকুতোভয় শেখ মুজিব মৃত্যুবরণ করেও অমর, চিরঞ্জীব-চিরভাস্বর। কবিতার পঙক্তিমালায় বিধৃত হয়েছে তার অমরত্বের কথা ‘যতদিন রবে পদ্মা মেঘনা গৌরী যমুনা বহমান,/ ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।’
চোখের সম্মুখে আজ তিনি নেই, কিন্তু তাকে তো দেখি ‘সহসা দেখি আমার ছোট্ট ঘরখানির দীর্ঘ দেয়াল জুড়ে/ দাঁড়িয়ে আছেন শেখ মুজিব;/ গায়ে বাংলাদেশের মাটির ছোপ লাগানো পাঞ্জাবি/ হাতে সেই অভ্যস্ত পুরনো পাইপ/ চোখে বাংলার জন্য সজল ব্যাকুলতা।’ তিনিই আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক ‘একজন মানুষও কখনো হয়ে যায়/ অতুলন মহার্ঘ্য প্রতীক।/ তখন আমরা সবাই তাকে পতাকার মতো ওড়াই।/….যে আজ সমস্ত শরীর মেলে দিয়ে একান্ত মানচিত্র বাংলার,/ আপামর বাংলার। আজীবন হয়তো সমস্বর হয়ে গেছে।’
বঙ্গবন্ধু আমাদের সেই মহার্ঘ্য প্রতীক, আমাদের পতাকা, একান্ত মানচিত্র, আপামর বাংলার। তিনি রাজনীতির মহাকবি, বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্ন দিয়ে রচনা করেছেন স্বাধীনতা নামের মহাকাব্য। এই মহকাব্যের মহানায়কও স্বয়ং তিনি, শেখ মুজিবুর রহমান, তিনিই তো বাংলাদেশ।”




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com