মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

কৃত্রিমতায় হারিয়ে গেছে বিয়ের আনন্দ

প্রদীপ কুমার দেবনাথ বেলাব (নরসিংদী) :
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৫ আগস্ট, ২০২১

অর্থের গরম, আধুনিকতা, সামাজিকতার অভাব, রুচির পরিবর্তন সর্বোপরি মানসিকতার বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে বিয়ে বাড়ির প্রকৃত আনন্দ। আগে সকল ধর্মের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল সাধ্যের মধ্যে প্রকৃতত আনন্দে ভরপুর। বাড়ি-ঘর, পাড়া প্রতিবেশী, আত্মীয় স্বজন সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আর হাসি ঠাট্টার মধ্য দিয়ে সকল কাজ সম্পাদন একটা ঐতিহ্যবাহী উৎসব ছিল। তখন বিয়ে বাড়ির সাজসজ্জা, পোশাক-আশাক, আনন্দ-উল্লাস, বিয়ে আচার পালন সবকিছু ছিল শালীনতার। কি আন্তরিকতা!, কি সামাজিকতা! কি নিয়ম-নীতি! কি শ্রদ্ধাবোধ! সবকিছু একটা সিস্টেমে, বিশেষ রসায়নে, পারিবারিক সিদ্ধান্ত মোতাবেক হত। পাত্রী দেখা, পাত্র নির্বাচন, পাত্র/পাত্রীর ভবিষ্যৎ নিরূপণ এসব নিয়ে চলত দুপরিবারের দীর্ঘদিনের যোগাযোগ। ঘটকের দৌড়াদৌর অন্ত নেই, বাড়ির মুরুব্বীদের ঘুম নেই, যেন মহাদুশ্চিন্তায় দিন কাটত তাদের। পাত্র পাত্রীও স্বপ্ন বুনত সেই মহা সৌভাগ্যের দিনটির অপেক্ষায়। একসময় বিয়ের তারিখ চলে আসতো। ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধব মিলে হাত দিত বিয়ে বাড়ির সাজসজ্জায়। বিয়ে বাড়ির গেইট, পাত্র-পাত্রীদের বসার স্থান, অতিথিদের বিশ্রামের স্থান অভ্যর্থনা গেইট চমৎকার ভাবে, শিল্পীর শৈল্পিক কারুকার্যে তৈরি করা হত নারিকেল পাতা, বাঁশ ও বেত দিয়ে। বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে এ হস্তশিল্পের মাধ্যমে পুরো বিয়েবাড়ি সজ্জিত হতো। রঙিন কাগজ আর বিভিন্ন গাছের পাতায় মঞ্চের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হতো। প্রাকৃতিক ফুলের মালা আর আলাদা ফুলে নতুন অতিথিকে বরণ করা হতো। মেহেদী পাতা পাটায় পেস্ট করে রঙিন হতো কনেসহ উপস্থিত মেয়েদের হাত। ঘোড়ার গাড়ি, পালকি, গরুর গাড়িতে আসতো বরের বিশাল টিম। আনন্দে সোরগোল শুরু হতো। চলতো বিয়ের নৃত্য, গান আরো কত কি? গল্প, কথায়, বাহারি খাবারে এক চমৎকার আবহ তৈরী হত বিয়ে বাড়িতে। কিন্তু, অধুনা কৃত্রিমতা আর অতি আধুনিকতা, যান্ত্রিক সভ্যতা বিয়ের সেই আনন্দ ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। আর সেই সানাই, বাঁশি, ঢাক বাজেনা, বাজে উচ্চস্বরে সাউ- সিষ্টেম। সেই হাতের কারুকার্যের পরিবর্তে দেখা যায় কৃত্রিমভাবে বানানো হাজার অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা একই ডেকোরেশন, প্রাকৃতিক মেহেদীর পরিবর্তে কোম্পানির উৎপাদিত মেহেদী, গন্ধহীন চাষ করা বা তৈরি করা ফুল, বিউটি পার্লারের কারিশমায় প্রকৃত চেহারার পরিবর্তে বিকৃত চেহারা। এখনকার বিয়ে মূলত আসা, খাওয়া আর যাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। প্রকৃতপক্ষে আনন্দহীন ভূরিভোজনের উৎসব। কিছুক্ষেত্রে ঐতিহ্য রক্ষা করা আমাদের অত্যধিক প্রয়োজন ছিল। যাতে বাঙালির আদি দীর্ঘদিনের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ঐতিহ্যটা ফুটে উঠে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com