নরসিংদীর মনোহরদী পোস্ট অফিসে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঘুষ না দিলে কালক্ষেপণ ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন। জানা যায়, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের কষ্টার্জিত অর্থ পোস্ট অফিসে সঞ্চয় করতে গেলে বা মেয়াদ শেষে লভ্যাংশ আনতে গেলে গ্রাহকের লাভের অংশে ভাগ বসান পোস্ট অফিসের লোকজন। সরেজমিনে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লভ্যাংশ এবং আমানতের টাকা উত্তোলন করতে গেলে হয়রানি করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এমনকি লভ্যাংশের টাকা উঠাতে গেলে পোস্ট মাস্টারের সহযোগী সিরাজ উদ্দিন ও সেলিমকে পরিমাণ ভেদে দিতে হয় পাঁচশ থেকে সাত হাজার টাকা। সংবাদ সংগ্রহ করতে পোস্ট অফিসে সাংবাদকর্মীদের উপস্থিতি দেখতে পেয়ে কর্মকর্তাদের সামনেই গ্রাহকরা ওই অফিসের ঘুষ লেনদেনের কথা বলেন। এ সময় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোন ধরণের প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি। ভূক্তভোগী রোজিনা আক্তার জানিয়েছেন, পাঁচ লাখ টাকা পাঁচ বছর মেয়াদি আমানত রাখেন পোস্ট অফিসে। প্রতিমাসে লভ্যাংশ তুলতে গেলে তাকে এক হাজার থেকে ৫০০ করে টাকা দিতে হয় পোস্ট মাস্টারের সহযোগীদের। চাঁন মিয়া নামের এক গ্রাহক বলেন, পোস্ট অফিসে তিন বছর মেয়াদে ১৮ লাখ টাকা আমানত রেখেছিলাম। মেয়াদ শেষে তিন মাস পার হলেও টাকা দেই দিচ্ছি বলে ঘুরাতে থাকে। অফিসের ঝাড়–দার সেলিম পোস্ট মাস্টারের কথা বলে আমার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছে। এখনো টাকা পাইনি। উপস্থিত অনেক গ্রাহকরা জানান, সঞ্চয় টাকার উপর লাভের অংশ উত্তোলন করতে গিয়ে পোস্ট অফিসের হিসাব বিভাগের দায়িত্বে থাকা সিরাজউদ্দিন ও ঝাড়–দার সেলিমকে ঘুষের টাকা বুঝিয়ে দিয়ে হিসাব নিতে হয়। অভিযুক্ত সেলিম বলেন, আমি কারো কাছ থেকে টাকা নেইনা। সময় মতো টাকা না পেলে গ্রাহকরা আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেন। অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা পোস্ট মাস্টার মো.মিরাজ উদ্দিন বলেন, ‘অফিসের কেউ টাকা নেয় সেটা আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’ নরসিংদী পোস্ট অফিস পরিদর্শক আনজু মনোয়ারা বলেন, ‘মনোহরদী পোস্ট অফিসের অনিয়ম ও ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ খবর নিয়ে অনিয়মের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’