জামালপুর সদর উপজেলার মাছিমপুরে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে দুবৃর্ত্তদের হাতে নিহত মাইক্রোবাস চালক আরিফ হোসেন(৩২) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে জামালপুর সদর থানা পুলিশ। গত ২৮ আগষ্ট জামালপুর সদর উপজেলার হামিদপুর এলাকার জামালপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে আরিফের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত আরিফ হোসেনের বাবা বদিউজ্জামান বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে জামালপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত ২৮ আগষ্ট সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার হামিদপুর এলাকার ব্রহ্মপুত্র নদে লাশ দেখে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। নিহত আরিফ হোসেন জামালপুর সদর উপজেলার মাছিমপুর এলাকার বদিউজ্জামানের ছেলে। তিনি পেশায় মাইক্রোবাস চালক।পরিবারের লোকজন জানান, গত রাত থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। আরিফুজ্জামান মাইক্রোবাস চালাতে সকালে বাড়ি থেকে বের হন। গত ২৮ আগষ্ট রাতে মাইক্রোবাসটি নান্দিনায় পার্কিং এ রেখে জামালপুর সদর উপজেলার মাছিমপুরে তার বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ি ফেরার পথে তাকে হত্যা করে জামালপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে ব্রহ্মপুত্র নদে লাশটি ফেলে দেন। ২৯ আগষ্ট সকালে স্থানীয় লোকজন নদীতে লাশটি ভাসতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।পরে লাশের ময়না তদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এই ঘটনায় নিহতের বাবা বাদি হয়ে জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম খান জানান, হত্যাকান্ডের পর মোবাইল রেকর্ডের সূত্র ধরে হত্যার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়। পরে বুধবার রাতে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে জামালপুর পৌর শহরের টিউবওয়েলপাড়া এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে মোহাম্মদ আলী(২১), মুসলিমাবাদ এলাকার মৃত ফারুকের ছেলে সাব্বির হোসেন (২০), নূর হোসেনের ছেলে সবুজ হোসেন(২১) এবং বাদশা মিয়ার ছেলে বরিনকে গ্রেফতার করে।পরে তাদের স্বীকার উক্তিতে জানা যায়, আসামীরা সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারি। রাতের আঁধারে সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দেশীয় অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাই করতো। গত ২৮ আগষ্ট রাতে সদর উপজেলার মাছিমপুর এলাকার জামালপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ছিনতাইয়ের জন্য অবস্থান নেয়। রাতে নান্দিনায় পাকিংএ মাইক্রোবাস রেখে মোটরসাইকেল যোগে মাছিমপুরে তার বাড়ি ফেরার পথে মাইক্রোবাস চালক আরিফ হোসেনের পথরোধ করে ছুড়ি ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় তার মোবাইল ফোন এবং টাকা ছিনিয়ে নেয়। মাইক্রোবাস চালক আরিফ হোসেনের মোটরসাইকেল টহল পুলিশ রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখে। পরে কাউকে না পেয়ে টহল পুলিশ মোটরসাইকেলটি থানায় নিয়ে আসে। এ সময় হত্যাকারীরা আরিফের লাশ রাস্তার পাশে ব্রহ্মপুত্র নদে ফেলে চলে যায়। পরে আরিফ হোসেনের বাবা বদিউজ্জামান বাদি হয়ে গত ২৯ আগষ্ট অজ্ঞাত আসামী করে জামালপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মাইক্রোবাস চালক আরিফ হোসেনের ঘরে ৫বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। মাইক্রোবাস চালক আরিফ হোসেন হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও ৪জনকে গ্রেফতারের বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টায় জামালপুর পুলিশ সুপারের কার্যলয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেছে পুলিশ সুপার নাসির উদ্দিন আহম্মেদ। এ সময় হত্যাকান্ডের বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা ছিনতাইকারি। মাইক্রোবাস চালক আরিফ হোসেনের মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে তাকে হত্যা করেছে। আটক ৪ হত্যাকারী হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তাদেরকে হত্যা মামলার আসামী করে আদালতে সোপর্দ করা হবে।