১৩ বছর ধরে বিএনপির আন্দোলনের ‘নিষ্ফল আহ্বান যেমনি ব্যর্থ হয়েছে, বর্তমান প্রয়াসও তেমন নিষ্ফল হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) নিজ বাসভবনে ব্রিফিংয়ে এমন মন্তব্য করেন মন্ত্রী। ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের আইন-আদালতের তোয়াক্কা না করে মনগড়া কথা বলাই বিএনপির স্বভাব। ভাবনায় এবং চর্চায় বিএনপির একমুখী দর্শন তাদের রাজনৈতিক অস্তিত্বের শেকড়কে দিন দিন দুর্বল করে দিচ্ছে। ‘সরকার বেগম জিয়াকে ভয়ে বিদেশ যেতে দিচ্ছে না’Íবিএনপি মহাসচিবের এমন অভিযোগের ব্যাপারে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রকৃতপক্ষে বিএনপিই বেগম জিয়ার চিকিৎসা চায় কিনা, তা নিয়ে জনমনে সন্দেহ আছে। যারা তাদের নেত্রীর মুক্তির জন্য একটি মিছিলও করতে পারে না, তাদের মুখে মায়াকান্না মানায় না।
শেখ হাসিনা সরকার বেগম জিয়া কিংবা ‘ক্ষয়িষ্ণু বিএনপি’কে ভয় পায় না জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বরং তার (খালেদা জিয়া) বয়স এবং স্বাস্থ্যের ওপর নজর দিয়ে সাজা স্থগিত করেছে চতুর্থবারের মতো। এ উদারতা একমাত্র শেখ হাসিনাই দেখিয়েছেন।’ বিএনপি শেখ হাসিনার উদারতাকে দুর্বলতা ভাবলে ভুল করবে বলেও হুঁশিয়ার করেন সেতুমন্ত্রী। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংবিধান সম্মতভাবেই পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে। নির্বাচন ও নির্বাচনি পরিবেশ বিনষ্টের জন্য বিএনপি প্রস্তুতি শুরু করেছে। এর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিআরটিসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। সভায় মন্ত্রী বলেন, লকডাউনের পরে আবারও পরিবহনে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে, এ অবস্থায় যাত্রী সাধারণের চলাচলে সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে রাজধানীর উত্তরায় চক্রাকার বাস সেবা পুনরায় চালু করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেওয়ার পর ধানমন্ডি এলাকায়ও চক্রাকার বাস সেবা পুনরায় চালুর প্রস্তুতি রয়েছে বলেও জানান তিনি। বিআরটিসির মতো সেবা প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি যাতে বাসা বাঁধতে না পারে; সেদিকে কঠোর নজর দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতির বিষয়ে শেখ হাসিনা সরকার জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করেছে। সুতরাং যেকোনও মূল্যে বিআরটিসিকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে। বিগত সরকারের সময়ে বিআরটিসি ‘দুর্নীতির আখড়া’ ছিল বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
এ সময় নিজ মন্ত্রণালয়ে তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়েও তদন্ত করতে পারেন। এতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনও বাধা দেওয়া হবে না। কোনও দুর্নীতি থাকলে ব্যবস্থা নিন। দুর্নীতিবাজদের প্রতি প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, জীবনকে উপভোগ করতে কত টাকা, কত সম্পদ দরকার? মৃত্যুর পরে তো এ সম্পদ সঙ্গে নিতে পারবেন না। তখন এসব সম্পদের কী হবে? লোভ লালসায় যারা বেপরোয়া, তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি করে যাচ্ছে। তাই প্রত্যেক সেক্টরেই সতর্ক থাকার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।