মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

ভোটকেন্দ্রে গোলাগুলিতে আ.লীগ নেতাসহ নিহত ২

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১

কক্সবাজারের কুতুবদিয়া ও মহেশখালীতে ভোটকেন্দ্রে গোলাগুলিতে আওয়ামী লীগ নেতাসহ দুজন নিহত হয়েছেন। সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) ভোট চলাকালে এসব ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- নৌকার এজেন্ট আবদুল হালিম (৩৫) ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক আবুল কালাম (৩৮)। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুতুবদিয়ার বড়ঘোপ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পিলটকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে আবদুল হালিম নিহত হন। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পিলটকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কুতুবদিয়া সরকারি কলেজকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ রয়েছে। আবদুল হালিম বড়ঘোপ ইউনিয়নের গোলদারপাড়া এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে এবং ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে। নির্বাচনে তিনি ৫নং ওয়ার্ডের পিলটকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কেন্দ্রে নৌকার এজেন্ট ছিলেন।
সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের মাঝে আহত ১৮ জনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক মো. শরীফ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কিছু লোক ভোটকেন্দ্রে উশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। এটি ঠেকাতে জটলার ভেতর ঢুকে যান হালিম। ছিনতাই ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক সদস্য গুলি চালালে গুলিতে আবদুল হালিম আহত হন। তাকে উদ্ধার করে কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। কুতুবদিয়া থানার ওসি মো.ওমর হায়দার ভোটকেন্দ্রে গোলযোগ সৃষ্টির চেষ্টা নিয়ন্ত্রণের সময় আবদুল হালিম নামে একজন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন। তার লাশ কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে হালিম নিহত হয়েছেন।
ঊড়গুপ ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তা জামশেদুল ইসলাম সিকদার বলেন, ওই কেন্দ্রে আপাতত ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত হলে পুনরায় ভোটগ্রহণ শুরু হবে। কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, গোলাগুলির ঘটনা শুনেছি। তবে কাদের গুলিতে নিহত হয়েছে, তা সঠিকভাবে এখনও জানা যায়নি। এদিকে মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নে নৌকার সমর্থকের গুলিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক সমর্থক নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম আবুল কালাম। তিনি স্থানীয় পশ্চিমপাড়ার ছোট মিয়ার ছেলে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ সাময়িক বন্ধ রাখা হয়। সূত্র জানায়, মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নের ভোটগ্রহণ সকাল ৮টায় শুরু হয়। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নৌকার প্রার্থী শেখ কামালের পক্ষে কিছু যুবক ভোটকেন্দ্রে এবং রাস্তায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালান। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশারফ হোসেন খোকন (চশমা) সমর্থিত লোকজন বাধা দিলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় নৌকা সমর্থিত লোকজনের গুলিতে চশমা সমর্থিত আবুল কালাম ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে উদ্ধার করে মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আহত আরও গুলিবিদ্ধ ১০ জন মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানা গেছে।
ঘটনার পর পরই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিজিবি ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পাশাপাশি কুতুবজোম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জামিয়া সুন্নাহ দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার ভোটগ্রহণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কুতুবজোম ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তা গোলাম মাসুদ কুতবী জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নৌকা ও চশমার সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় কয়েক ঘণ্টার জন্য ৪ ও ৫নং কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখা হয়। বর্তমানে বিজিবি ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন রয়েছে। পাশাপাশি ভোটগ্রহণও শুরু হয়েছে। মহেশখালী থানার ওসি আবদুল হাই জানান, বর্তমানে কুতুবজোম ইউনিয়নের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ভোটগ্রহণও চলছে। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে কঠোর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
১৬০ ইউপিতে ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা: সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও ভোট বর্জনের মধ্য দিয়ে দেশের ১৬০টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এখন চলছে গণনা। কিছু সময় পর থেকে ফলাফল ঘোষণা করা হবে। এতে কোনও প্রার্থীর মুখে হাসি ফুটবে, আবার কারও চোখে-মুখে দেখা যাবে পরাজয়ের বিষাদ।
সারাদেশ থেকে প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে নির্বাচনের সার্বিক চিত্র পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো: কক্সবাজারের মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় নির্বাচনি সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন দুই জন। সোমবার সকাল ১০টার দিকে মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নের নোয়াপাড়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় আবুল কালাম নামের একজন নিহত হন। এ ঘটনায় আরও সাত জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। কুতুবদিয়া উপজেলার পিলটকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখলের সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিতে আবদুল হালিম নামের আরেকজন নিহত হন। সহিংসতার ঘটনার পর দুই কেন্দ্রেই ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।
ব্যালট ছিনতাইয়ের ঘটনায় টেকনাফের উনছিপ্রাং ও লম্বাবিল কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। এ ঘটনায় রাস্তায় অবরোধ করে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু সুফিয়ান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইরফানুল হক চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
চট্টগ্রামের বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে নারী ভোটারদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। সোনাগাজীতে পুলিশ কেন্দ্রের গোপন কক্ষ থেকে নয়জন বহিরাগতকে আটকও করেছে। কেন্দ্র দখল, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং অনিয়মের অভিযোগ এনে নোয়াখালীতে ভোট বর্জন করেছেন নৌকার দুই প্রার্থী। ভোটগ্রহণ শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যেই নোয়াখালীর হাতিয়ার ৯ নম্বর বুড়িরচর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী (নৌকা প্রতীক) জিয়া আলী মোবারক কল্লোল, ১০ নম্বর জাহাজ মারা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী (নৌকা প্রতীক) এটিএম সিরাজ উল্যাহ ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
খুলনা বিভাগের ১৬ উপজেলার ১২০টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে অনেক কেন্দ্রে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ছাতা মাথায় ও বৃষ্টিতে ভিজে ভোটারদের কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোট দিতে দেখা গেছে। এদিকে, খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্রের বাইরে ককটেল হামলায় চারজন আহত হয়েছেন। বেলা ১২টায় ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। বারাকপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ আনসারের এক সমর্থককে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগও পাওয়া গেছে। এছাড়া বাগেরহাটে ভোট বর্জন করেছেন চেয়ারম্যান পদের দুই প্রার্থী। সারাদেশের ভোটকেন্দ্রগুলোতে নারী ভোটারদের উপস্থিতি বেশি ছিল জানিয়েছেন বাংলা ট্রিবিউনের জেলা প্রতিনিধিরা। এদিকে, আদেশের ৯টি পৌরসভা ও স্থানীয় সরকার পরিষদের কয়েকটি উপনির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়েছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com