জামালপুর জেলার ইসলামপুরের গোয়ালেরচর পরিত্যক্ত ভাঙা ব্রিজে ধান শুকাচ্ছে গৃহীনিরা। গোয়ালেরচর ইউনিয়নের পাকা রাস্তা আছে ব্রিজ নেই। ফলে যাতায়াতে কয়েক লাখ মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হয়ে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটি পরিত্যক্ত থাকার কারণে এলাকার গৃহীনিরা হেলেপাড়া ব্রিজেই ধান শুকাতে দিয়েছেন। এছাড়াও পুরো এ্যাপোচ জুড়ে উঠতি ইরি-বোরো ধানের খড় শুকানো হচ্ছে। জানা গেছে, জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার গোয়ালেরচর ইউনিয়নের বোলাকিপাড়া থেকে গোয়ালেরচর ইউনিয়ন পর্যন্ত ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে একটি পাকা রাস্তা নির্মাণ হয়। রাস্তাটি নির্মাণ হওয়ায় চরাঞ্চলের সাথে ইসলামপুর উপজেলার শহরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হয়। কিন্তু বিগত ২ বছর আগে বন্যায় এই সড়কের ৩টি পাকা ব্রিজ ভেঙ্গে যায়। পাকা রাস্তা থাকলেও ব্রিজ ৩টি সংস্কার বা পুন:নির্মাণ করা হয়নি। ব্রিজ না থাকায় চরাঞ্চলের প্রায় আড়াই লাখ মানুষ সড়ক পথে চলাচলে দারুণ বিঘœ ঘটছে। চরাঞ্চল থেকে উপজেলা ও জেলা শহরে য়াতায়াতে চরম দুভোগের শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। বেকার হয়ে পড়েছে রাস্তা নির্ভর পরিবহন শ্রমিকরা।আরো জানা যায়, ইসলামপুর উপজেলার গোয়ালেরচর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর-মালমারা বাজার সড়কে গতবছর বন্যায় একটি ব্রিজ ভেঙ্গে বিধ্বস্ত হয়ে যায়। এতে এক বছর ধরে দুই বাজারের ব্যবসায়ীদের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ যানবাহন চলাচল বন্ধ অঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ চরম দূর্ভোগে রয়েছে। দীর্ঘ এক বছর সড়কটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকলেও নজরে আসেনি কর্তৃপক্ষের।এলাকাবাসীর অভিযোগ স্থানীয় এক ব্যক্তি ব্রিজের সামনে বাশের আড়াআড়ি বাঁধ দেওয়ায় বন্যার পানির প্রচন্ড স্রোতে ভেঙে চুরমার হয়ে যায় ব্রিজটি। এতে এ অঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ এবং দুই বাজারের শ শ ব্যবসায়ী চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। পথচারী আব্দুস সামাদ জানান, এ রাস্তায় মোটরসাইকেল নিয়ে এসে চরম বিপদে পড়েছি। মোটরসাইকেল এখন বোঝা হয়েছে। এমকে বিশ্বাস অভিযোগ করেন, গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বৃষ্টি এক বছর আগে ভেঙে গেলেও স্থানীয় প্রকৌশল বিভাগ কোন নজর দেয়নি। এ ব্যাপারে বোলাকিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, উপজেলা শহর থেকে বোলাকিপাড়া পর্যন্ত রাস্তা পাকাকরণ করা হয়েছে। কিন্ত ব্রিজের অভাবে সাধারণ মানুষ স্বাভাবিকভাবে য়াতায়াত করতে পারছে না। কৃষকরা তাদের কৃষিপন্য হাটবাজারে নিয়ে ন্যায্য মূল্যে বেচাকেনা করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ইজি বাইক চালক রহিম জানান, ব্রিজ ৩টি নির্মাণ হলে এই সড়ক নির্ভর পরিবহন শ্রমিকদের বেকারত্বের অবসান হবে। শ্রমিক পরিবারে আয় বৃদ্ধি পাবে। ব্রিজ না থাকায় পাকা সড়কটি জনগনের কোন কাজেই আসছে না। ধান শুকাতে দেয়া গৃহীনি বলেন, ব্রিজ ভেঙে যাবার ফলে পরিত্যক্ত রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। বাড়িতে গাছের ছায়া পড়ে। তাই এ হেলেপড়া ব্রিজের উপরে ধান শুকাতে দিয়েছি। তিনি ছাড়াও অনেকই এখানে ধান শুকান। সে আরো জানান, অল্প সময়ের মধ্যেই ধান শুকে যায়। তাই যে সুযোগ পায় সেই ধান-খড় শুকিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।এ ব্যাপারে ইসলামপুর উপজেলা প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম জানান, ব্রিজ ৩টি নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্ধ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্ধ পেলেই নির্মাণ কাজ শুরু হবে।