বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আজকে বাংলাদেশকে নিয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় দেশের জ্ঞানীগুণী যারা আছেন তাদেরকে সাহসীকতার পরিচয় দিয়ে এর মোকাবেলা করতে হবে। দেশ বিরোধী সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবেলায় শিক্ষকদেরকে সাহসী ভূমিকা রাখতে হবে। এখানে চিন্তার বিনিয়োগ করতে হবে, গবেষণার বিনিয়োগ করতে হবে, সর্বপরি দেশ গঠনে আপ্রাণ প্রচেষ্টা অব্যহত রাখতে হবে। আমাদেরকে শিক্ষার কারিকুলাম সিলেবাস সবকিছু নিয়ে ভাবতে হবে। আজ জাতি নৈতিকতা বিবর্জিত হয়ে এমন এক অবস্থায় পরিণত হয়েছে যে, মানুষ না ধর্ম মানে না দুনিয়া মানে! না অন্য মানুষকে সম্মান করে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো আজ চরম ব্যর্থতা রোদন করছে। এটাকে পরিবর্তন করতে কিছু সাহসী মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। আল্লাহর দেয়া কুরআনের বাস্তবিক প্রয়োজন সবখানে ছড়িয়ে দিতে হবে। এই শিক্ষা যেদিন আমরা জাতির সন্তানদের হাতে তুলে দিতে পারবো সেদিন জাতি প্রকৃত পক্ষেই এক একটা সোনার মানুষ পাবে। তখনই কেবল সোনার বাংলাদেশ গড়া প্রকৃত পক্ষে সম্ভব হবে। আজ পশু ও পাশবিকতা নিয়ে যারা বেড়ে উঠছে তাদেরকে দিয়ে সোনার দেশ গঠন করা তো সম্ভবই না বরং এই বাংলাদেশকে তারা একটা জঙ্গলে পরিণত করবে।
গত ১৫ অক্টোবর শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত “শিক্ষক সম্মেলনে” প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনটি ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. মু. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কোরবান আলী, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া। এসময় আরও বক্তব্য রাখে শিক্ষক প্রতিনিধি প্রফেসর নূর নবী মানিকসহ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আজ দেখা যাচ্ছে একজন শিক্ষিত ব্যক্তি মোটর সাইকেলে বসে নিজ বাবার শরীরে লাথি মারছে। আজ এই শিক্ষা আমাদেরকে তাহলে কি উপহার দিচ্ছে? পিতা মাতা সন্তানকে শিক্ষিত করে তবে কি আশায়? আজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কি দেখছি আমরা, বই কলম খাতা থাকার কথা ছিলো, প্রযুক্তির বিভিন্ন যন্ত্রপাতি থাকবে প্রতিষ্ঠানে। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য সেখানে আজ মাদক পাওয়া যাচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আজকে অস্ত্র পাওয়া যায়। সেই সাথে দেশে আমরা কি দেখছি বুয়েটের মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একজন দেশপ্রেমিক নামাজী ছাত্রকে তারই সহপাঠীরা সাপ পিটিয়ে মারার মত করে পিটিয়ে হত্যা করে। এই তো আজকের বাংলাদেশের দৃশ্য। এভাবে সমাজ রাষ্ট্র দেশ চলতে পারে না। যেখানে মা বোনের ইজ্জতের কোন নিরাপত্তা নেই। মানুষের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই। আমার সম্পদের কোন নিরাপত্তা নেই। বিচারের কাছে গিয়ে মানুষ আজ নিভৃতে নিরবে কাঁদে। এই সমাজকে আমরা পাল্টাতে চাই, এই স্রোতকে আমরা সঠিক দিকে প্রবাহিত করতে চাই। এজন্য দেশের প্রত্যেক নাগরিকদের সর্ব স্থান হতে এক সাথে এগিয়ে আসতে হবে। সেখানে শিক্ষকদের ভূমিকা সবার আগে, আপনারাই জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষকদেরকেই আগামীর সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আমরা চাই চলমান ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা ব্যবস্থায় জাতির যে কুফল বয়ে আনবে তা গোটা বাংলাদেশের নাগরিকদের অবহিত করবেন শিক্ষকেরা। আমি শিক্ষকদের আহবান জানাতে চাই, বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সঠিক পথে পরিচালিত করার স্বার্থে আপনারা বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করুন। আমরা আমাদের নৈতিক শক্তিতে বলিয়ান হয়ে দেশ গড়তে চাই। আমরা শিক্ষকেরা পেশাদারিত্বকে আরও সমুন্নত করি। প্রফেশনালিজম প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করি। পাশাপাশি আল্লাহর জমিনে তাঁর দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যও ভূমিকা রাখি। আপনারই প্রকৃত অর্থে নবী রাসূলদের উত্তরসূরী জ্ঞানের ধারক বাহক। আপনাদের যোগ্যতা দিয়ে দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য উদাত্ত আহবান জানাই। প্রেসবিজ্ঞপ্তি।