মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

মেঘনা নামে কুমিল্লা ও পদ্মা নামে ফরিদপুর বিভাগ হবে: প্রধানমন্ত্রী

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২১

মেঘনা নদীর নামে কুমিল্লা ও পদ্মা নদীর নামে ফরিদপুর বিভাগ হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১০ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এসময় কুমিল্লা ও ফরিদপুর বিভাগ করার ইস্যু নিয়ে আলোচনা হলে এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভায় ১ হাজার ৫৩৮ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘কুমিল্লা সিটি করপোরেশন সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার সময় কুমিল্লা ও ফরিদপুর বিভাগ করার ইস্যুটি নিয়ে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। দুটি বিভাগের বিষয়টি প্রসঙ্গে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, একনেক সভায় কুমিল্লা ও ফরিদপুর বিভাগের বিষয়ে অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মেঘনা নদীর নামে কুমিল্লা ও পদ্মা নদীর নামে ফরিদপুর বিভাগ করার কথা বলেছেন।’
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সোমবার জনগণের মধ্যে সংযুক্তি, ব্যবসা, বাণিজ্য এবং দু’দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগের উপর মনোনিবেশ করে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে কাজ করার জন্য পুনরায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের গুরুত্বে বিশ্বাস করে চলেছি। একই সঙ্গে এই বর্ষপূর্তি আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তি এবং সামনের পথ চলা সম্পর্কে চিন্তা করার সুযোগ এনে দিয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী গতিশীল অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করার জন্য নিজেদের পুনরায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করার জন্য ও এটি একটি উপলক্ষ। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মূল বিষয় এখন জনগণের মধ্যে সংযুক্তি, বাণিজ্য, ব্যবসা ও যোগাযোগে মনোনিবেশ করা দরকার, যা উভয় পক্ষের জন্য পর্যায়ক্রমে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী মৈত্রী দিবস বা ফ্রেন্ডশিপ ডে উপলক্ষে বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রচারিত দুই মিনিটের ভিডিও বার্তায় এ সব কথা বলেন।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ওয়ার্ল্ড এফেয়ার্স (আইসিডাব্লিউএ) ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে ভারতের স্বীকৃতি প্রদান করার প্রেক্ষিতে ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে সোমবার নয়াদিল্লীতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা, নয়াদিল্লীতে বাংলাদেশের হাই কমিশনার মুহাম্মদ ইমরান এবং আইসিডাব্লিউএ মহাপরিচালক বিজয় ঠাকুর সিং অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের ২৬ থেকে ২৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাষ্ট্রীয় সফরকালে আমরা ঢাকা ও নয়াদিল্লীর পাশাপাশি নির্ধারিত ১৮টি শহরে যৌথ উদযাপনের বিষয়ে একমত হয়েছি এবং ৬ ডিসেম্বরকে ‘মৈত্রী দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছি। বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে আজ (৬ ডিসেম্বর) ঢাকা ও নয়াদিল্লীতে এবং বেলজিয়াম, কানাডা, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, কাতার, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জাপান, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইজারল্যান্ড, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ১৮টি দেশে বন্ধুত্বের দিন পালন করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করছে। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের যাত্রায় এটি একটি মাইলফলক। ভারত ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। শেখ হাসিনা বলেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী যে দুই দেশ এবং দেশের জনগোষ্ঠী একত্রে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও ধারণাকে বাস্তবতায় পরিণত করে চলবে।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের অংশীদারিত্ব চুক্তি, সমঝোতা স্মারক, দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় যা আমাদের কাজের সম্পর্কের আনুষ্ঠানিক কাঠামো প্রদান করে। আজ, আমাদের বিশাল অংশীদারিত্ব পরিপক্ক হয়েছে, গতিশীল, ব্যাপক এবং কৌশলগত আকার নিয়েছে এবং সার্বভৌমত্ব, সমতা, বিশ্বাস এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভাষা এবং ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র এবং অন্যান্য অগণিত অভিন্নতার যৌথ মূল্যবোধে পরিগণিত।
তিনি বলেন, নিয়মিত উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক মতবিনিময় ও আদানপ্রদান সা¤প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের বন্ধুত্বের বন্ধন আরও শক্তিশালী, বৈচিত্রময় ও প্রসারিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে আরোপিত বিধিনিষেধ সত্ত্বেও সমস্ত স্তরে সম্পর্ক স্থিতিশীল এবং শক্তিশালী রয়েছে। তিনি অভিমত প্রকাশ করেন, কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় আমাদের চমৎকার সহযোগিতা ও সম্পৃক্ততায় এটি স্পষ্ট ছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করেছেন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর এক ভাষণের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। সম্পর্কটি বন্ধুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্ব আমাদের হৃদয়ে রয়েছে। বন্ধুত্বের বন্ধন দৃঢ় এবং দীর্ঘস্থায়ী থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আমি প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এবং তাঁর সরকার, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং সামগ্রিকভাবে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি ভারতের জনগণের উদারতার কথা স্মরণ করছি। তিনি বলেন, ভারত তখন বাংলাদেশ থেকে যাওয়া এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় প্রদান করেছে, মুজিবনগর সরকারের জন্য জায়গা দিয়েছে এবং বাংলাদেশের পক্ষে কূটনৈতিক প্রচারণা চালিয়েছে।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা এবং ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ায় ভারত ও ভারতের জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, পারস্পারিক সমঝোতা ও সহযোগিতার মাধ্যমে উভয় দেশ আসন্ন সব ধরনের অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় সেনাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী ভারতীয় সৈন্যদের প্রতি সম্মান জানানোয় তিনি বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান। এ সময় তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন খাতের ভারতের সহযোগিতা এবং দুটি বন্ধু-প্রতিম দেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি স্থল সীমান্ত চুক্তি, সমুদ্র সহযোগিতা, সুনীল অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, পানি ব্যবস্থাপনা এবং বাংলাদেশের জন্য ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ প্যাকেজের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে আগামী দিনগুলোতে ভারত বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে আগ্রহী। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মাইলফলক অতিক্রম করেছে।
শ্রিংলা বলেন, দুটি বন্ধুপ্রতিম দেশের মঙ্গলের স্বার্থে ভারত বাংলাদেশের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী দিনগুলোতে এই সম্পর্ক আরো জোরদার হবে। সীমান্ত ইস্যু সম্পর্কে তিনি বলেন, আরো উন্নত সীমান্ত ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ভারত কাজ করে যাবে।
ভারতীয় রাষ্ট্রপতির আসন্ন ঢাকা সফরের ব্যাপারে তিনি বলেন, মহামারির পর এটি হচ্ছে বিদেশে ভারতের রাষ্ট্রপতির প্রথম সফর। এই মহামারির সময়ে দেশ দুটির মধ্যকার দৃঢ়তর সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া গেছে । পরে, একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশের সাবেক তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি, এশিয়ান কনফ্লুয়েন্সের নির্বাহী পরিচালক সব্যসাচী দত্ত ও ইকোনমিক টাইমস এর কূটনীতি বিষয়ক সম্পাদক দ্বিপাঞ্জন রায় রঞ্জন চৌধুরী এতে অংশ নেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com