বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিজয়ের ৫০ বছরেও মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এখনো পর্যন্ত পাইনি। আমরা আশা করছি, জনগণ আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জেগে উঠবে এবং কর্তৃত্ববাদী সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার, জনগণের পার্লামেন্ট এবং একটা মুক্ত রাষ্ট্র, সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবেন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ সব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে চিকিৎসক শিক্ষক সাংবাদিক প্রকৌশলীসহ অসংখ্য মেধাবী বুদ্ধিজীবীদের পাক হানাদার বাহিনী নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধকালীন সময়ে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে। জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে তারা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ৫০ বছর পূরণ করতে চলেছি এই বছরে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের কথা ১৯৭১সালে যে লক্ষ্য নিয়ে আমরা স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু করেছিলাম এবং আমাদের অগণিত শহীদ প্রাণ দিয়েছেন, আমাদের বুদ্ধিজীবী মহল প্রাণ দিয়েছেন। দুভাগ্যক্রমে সেই মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য গণতান্ত্রিক একটা রাষ্ট্র এখন পর্যন্ত পাইনি। শুধু তাই নয় আমাদের জনগণের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল, মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা ছিল, সবকিছু ভূলুণ্ঠিত করে দিয়ে এখন এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য বর্তমান শাসকগোষ্ঠী বিভিন্নভাবে এদেশের মানুষের উপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা অসংখ্য মানুষকে খুন করেছে, গুম করেছে।
তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে কয়েক বছর ধরে মিথ্যা মামলায় আটক করে রাখা হয়েছে। এখন এই মুহূর্তে তিনি অসুস্থ হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছেন। আমরা বারবার বলেছি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করার জন্য। কিন্তু এই গণবিরোধী সরকার শুধু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নয়, কাউকেই তারা এখানে রাজনীতি করতে দিতে চান না। এদেশে তারা বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে একদিকে যেমন তারা বন্দি করে রেখেছেন চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না, অন্যদিকে সমস্ত দেশপ্রেমিক মানুষের উপর তারা অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আজকের এই দিনে আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। এবং আমরা আশা করছি জনগণ আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জেগে উঠবেন এবং কর্তৃত্ববাদী সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার জনগণের পার্লামেন্ট এবং একটা মুক্ত রাষ্ট্র সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবেন। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহবায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী সহ বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।