মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

দ. এশিয়ায় আ লিক বাণিজ্যে উজ্জ্বল সম্ভাবনা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২১

প্রায় দুইশ কোটি মানুষের বসবাস আমাদের দক্ষিণ এশিয়ায়। গত দশকে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনৈতিক অ ল হয়ে উঠেছে এটি। তবে এখানকার আন্তঃআ লিক বাণিজ্য এখনো প্রত্যাশিত মাত্রায় পৌঁছাতে পারেনি। এ থেকে স্পষ্ট, দক্ষিণ এশিয়ার কিছু দেশে বাণিজ্যিক সুবিধা এখনো সীমিত। তবে এই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। বৈদেশিক বিনিয়োগে বাধা দূরীকরণ, পারস্পরিক বিশ্বাস বাড়ানো, জ্ঞান ও নেটওয়ার্কিংয়ের ঘাটতি পূরণ করা গেলে দক্ষিণ এশিয়ার আ লিক বাণিজ্যের পরিধি আরও বাড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি নিয়ে বিশ্বব্যাংক সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২০ থেকে ২০২৩ সালে এ অ লে গড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। এটি করোনা মহামারি আসার আগের চার বছরের তুলনায় বেশ কম।
দক্ষিণ এশিয়ার অন্তর্মুখী ও বহির্মুখী আন্তঃআ লিক প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) মাত্র ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার, যা সারা বিশ্বের অন্তর্মুখী এফডিআই’র তুলনায় অন্তত এক শতাংশ কম। নারী নেতৃত্বাধীন ব্যবসা, আন্তঃআ লিক বিনিয়োগের মতো অন্য সূচকও খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়।
বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার অনেকাংশে নির্ভর করছে বৈশ্বিক, আ লিক ও স্থানীয় পর্যায়ে বাণিজ্যিক সুযোগ-সুবিধার সর্বোত্তম ব্যবহারের ওপর। কারণ, এখানে আজও মোট বাণিজ্যে আ লিক সম্পৃক্ততা মাত্র পাঁচ শতাংশে সীমাবদ্ধ। সেই তুলনায় পূর্ব এশিয়ায় আন্তঃআ লিক বাণিজ্য প্রায় ৫০ শতাংশ এবং ইউরোপে এর হার ৬০ শতাংশের কাছাকাছি।
আ লিক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মহামারির মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে আন্তঃআ লিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান সেবা খাতে। এ অ লে পণ্য ও সেবার ক্রমবর্ধমান চাহিদা দক্ষিণ এশিয়ার ব্যবসায়ীদের সামনে বিনিয়োগের দারুণ সুযোগ তৈরি করেছে। তবে প্রতিবেশী দেশগুলোর অর্থনীতি ও বিনিয়োগ সুবিধা সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞানের অভাব, পারস্পরিক আস্থার ঘাটতি, ব্যয়বৃদ্ধি এবং সামাজিক বিধিনিষেধ এখনো বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ায় ব্যবসার সুযোগ, সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ তার বিনিয়োগ শাখা ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) সহযোগিতায় একটি ওয়েবিনারের আয়োজন করেছিল। এতে এ অ লের বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় বিনিয়োগকারী এবং নীতিনির্ধারক অংশ নেন। দক্ষিণ এশিয়ায় কীভাবে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও প্রবৃদ্ধির গতি বাড়ানো যায় তা নিয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেছেন তারা।
বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক ‘রিজিওনাল ইনভেস্টমেন্ট পাইওনিয়ার্স ইন সাউথ এশিয়া’ প্রতিবেদনে প্রতিবেশী দেশগুলোর সম্পর্ক, আন্তঃআ লিক বিনিয়োগের সম্ভাবনা ও সীমাবদ্ধতার নানা বিষয় উঠে এসেছে। ওই প্রতিবেদনের অন্যতম লেখক ও উইলসন সেন্টারের ফেলো সঞ্জয় কুমার বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় একটি সুপ্ত সম্ভাবনা রয়েছে, যা আ লিক বাণিজ্যের জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি এটি বিশ্ব বাণিজ্যকেও সমৃদ্ধ করতে পারে। এ অ লকে আরও গভীরভাবে অনুসন্ধানের জন্য আগ্রহ ও শক্তির পাশাপাশি নতুন প্রেরণা থাকা দরকার। কারণ, আ লিক বাণিজ্যের সুবিধা আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে।
২০১৭ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় আন্তঃআ লিক বিনিয়োগ হয়েছে মাত্র ৩০০ কোটি ডলার। বৈশ্বিক অন্তর্মুখী ও বহির্মুখী বিদেশি বিনিয়োগে এ অ লের অবদান যথাক্রমে মাত্র ০.৬ শতাংশ ও ২ দশমিক ৭ শতাংশ। তবে এর মধ্যেও কিছু লক্ষণীয় বিষয় রয়েছে। যেমন- ছোট ব্যবসার ক্ষেত্রে লিয়াজোঁ অফিসে বিনিয়োগ করা যাচ্ছে। বিনিয়োগ বাড়ছে উৎপাদন ও সেবা খাতেও।
দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিতে ভারত এখনো আধিপত্য ধরে রাখলেও তুলনামূলক ছোট দেশগুলো থেকেও বিনিয়োগ বাড়ছে। এ অ লের প্রতিষ্ঠানগুলো আন্তর্জাতিক পরিসরে উৎপাদনে নজর দিচ্ছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় আ লিক বিনিয়োগে অবদান রাখা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম পাকিস্তান। সেই ১৯৫১ সালে শ্রীলঙ্কায় হাবিব ব্যাংকের শাখা খোলার মাধ্যমে আন্তঃআ লিক বিনিয়োগ শুরু করেছিল দেশটি। তবে পাকিস্তানেও অন্তর্মুখী এফডিআই প্রত্যাশার তুলনায় কম হয়েছে।
পাকিস্তান বিনিয়োগ বোর্ডের সেক্রেটারি ফারিনা মাজহারের কথায়, পাকিস্তান যথেষ্ট বিদেশি বিনিয়োগ পায়নি। সেখানকার সন্ত্রাস ও জ্বালানি ঘাটতি অতীতে বিনিয়োগকারীদের প্রধান উদ্বেগ ছিল। তবে এসব সমস্যা সমাধান হয়েছে বলে দাবি করেছেন এ পাকিস্তানি কর্মকার্তা।
ফারিনা মাজহার বলেন, পাকিস্তান আরও বিনিয়োগ পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী; বিশেষ করে বিশেষ অর্থনৈতিক অ লগুলোতে। সেখানে শুল্কমুক্ত যন্ত্র আমদানির পাশাপাশি ১০ বছর আয়কর ছাড়ের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার আ লিক বাণিজ্যে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ঠিকই সাফল্যের মুখ দেখেছে। এদের মধ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ‘ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ব্র্যান্ড’ প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ অন্যতম। করোনাকালীন সংকটের মধ্যেও প্রতিষ্ঠানটির বিশাল পণ্যসম্ভারের ভোক্তার সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে।
১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠালাভের পর থেকে কৃষকদের ন্যায্যমূল্য দেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের কৃষিব্যবসায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। দিল্লি সরকার বাংলাদেশ থেকে সরাসরি বিনিয়োগে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সাত বছরের মাথায় ২০১৫ সালে ত্রিপুরায় একটি উৎপাদন কারখানা চালু করে প্রতিষ্ঠানটি। চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে নদীপথেও ভারতে পণ্য রপ্তানি শুরু করেছে প্রাণ।
ওয়েবিনারে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী বলেন, ভারতকে আমি দেশ নয়, মহাদেশ মনে করি। বাংলাদেশি ছোট একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য ভারত একটা গোটা দুনিয়া, যা আমরা অনুসন্ধান করছি। তিনি জানান, নেপালে শিগগির প্রাণ-আরএফএলের একটি কারখানা চালু হবে। প্রতিষ্ঠানটি আফগানিস্তানে চলমান অস্থিরতার মধ্যেও প্রচুর পরিমাণে ভোগ্যপণ্য রপ্তানি অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া, পাকিস্তানেও ব্যবসায়িক বিনিয়োগ বাড়ানোর আশা করছেন তারা। আহসান খান চৌধুরী বলেন, আমি মনে করি, মানুষ কী চায় সে সম্পর্কে উন্মুক্ত মানসিকতা রাখা গেলেই এ অ লে ব্যবসার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে বিস্ময়কর একটি পৃথিবী রয়েছে, যা খুঁজে বের করতে হবে। আমরা অবশ্যই আরও বেশি আ লিকভাবে সংযুক্ত হতে পারি। সূত্র: ব্যাংকক পোস্ট




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com