জেলার মুরাদনগর উপজেলার বোরারচর গ্রামে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মধু চাষ। ঘরের কাজের পাশাপাশি বাড়তি খরচ ছাড়াই একবার পুঁজি খাঁটিয়ে বারবার আয় করতে পারায় মধু চাষে ঝুঁকছেন ওই এলাকার চাষিরা। গ্রামেই মধু বিক্রি করে সংসারে বাড়তি আয় করছে কয়েকটি পরিবার।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পুকুর পাড়ে, বাড়ির উঠানে, দেয়ালের পাশে কিংবা সরিষাসহ বিভিন্ন সবজি খেতের মাঝে কাঠের বাক্স রাখা। সেই বাক্সে মৌমাছি রেখে মধু চাষ করছেন চাষিরা। মৌচাষিরা জানান, এক একটি কাঠের বাক্স বা কলোনি বানাতে খরচ হয় ৩ হাজার টাকা। তা ছাড়া রাণী মৌমাছি সহজে পাওয়া যায় না। যারা জঙ্গল থেকে রাণী মৌমাছি সংগ্রহ করেন তারাও চড়া দামে বিক্রি করে থাকেন।
মৌ চাষী সাইফুল ইসলাম বাসসকে বলেন, চার বছর আগে একটি রাণী মৌমাছিকে পাঁচ’শ টাকায় কিনে নিয়ে এসে বাড়িতে একটি কাঠের বাক্সে রেখে দিই। কয়েক দিনের মধ্যে সেই কাঠের বাক্সের চারপাশে মৌমাছি আসা শুরু করে। মৌমাছিরা সারা দিন বন-জঙ্গল ঘুরে মধু সংগ্রহ করে এই বাক্সে জমা করে রাখে। প্রথম বছর ৩ লিটার মধু বিক্রি করে ৩ হাজার ৬০০ টাকা পেয়েছি। পরের বছর আরও একটি বাক্স বাড়াই। বর্তমানে ১০ বাক্স থেকে বছরে ২০ কেজির বেশি মধু পেয়ে থাকি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার নাজমুল আলম বলেন, মধুর মধ্যে রয়েছে প্রচুর খাদ্যগুণ, আছে প্রচুর ভিটামিন কে, ফ্রুক্টোজ,আরো আছে মাজারি এন্টিসেপ্টিক গুণ। কেটে যাওয়া বা পুড়ে যাওয়া জায়গায় মধু লাগিয়ে রাখলে কোন রকম ইনফেকশান হয়না,বরং কিছুক্ষণের মধ্যেই জ¦ালা পোড়া ভাব কমে যায়।
মুরাদনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন আহমেদ বাসসকে বলেন, মধু চাষে তেমন কোনো পরিচর্যা করতে হয় না। খরচ কম, লাভ বেশি। শুধু দরকার একটি রাণী মৌমাছি ও একটি বাক্স। ঘরের কোণে কিংবা উঠানে মৌমাছির রাণী নিয়ে বাক্স বসিয়ে দিলেই মৌমাছি চলে আসে। সে জন্য অসচ্ছল ব্যক্তিদের জন্য এই চাষ খুবই সুবিধাজনক। এছাড়াও মৌমাছি ফসলে পরাগায়ন সৃষ্টি করে যার ফলে কৃষি জমিতে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। মধু চাষিরা তাদের মৌচাক বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করায় মধুর পাশাপাশি এই এলাকার কৃষকরা অধিক ফসল ঘরে তুলতে পারছে।