পশু খাদ্য তৈরিতে ভুট্টার ব্যবহার সবচেয়ে বেশি হওয়ায় সারাবছর ভুট্টার চাহিদা থাকে। ফলে কৃষকেরাও এ ফসল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্টার চাষে খরচ হয় খুব কম তবে, লাভ হয় বেশি। আর সে কারণে এই ভুট্টো চাষে আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে চাষিদের। সব জায়গার মত এই চাষে অধিক হারে আগ্রহ বাড়ছে পাবনার চাটমোহরের চাষিদের। আর আবহাওয়া ও জমি চাষের উপযোগী হওয়ায় ফলনও বেশ ভালো পাচ্ছেন তারা। গত মৌসুমে ভুট্টা চাষে লাভ হওয়ায় এই বছর ব্যাপকহারে ভুট্টা চাষ করেছেন সেখানকার চাষিরা। বর্ষার পানি চলে যাওয়ায় এর উর্বর পলিমাটিতে সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে কৃষি আফিসের পরামর্শে আধুনিক পদ্ধতির চাষাবাদ করছে। লক্ষ্যে পৌঁছাতে এরইমধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় বিভিন্ন প্রকল্প, পুষ্টি প্রকল্প, ও সরকারি ভাবে বীজ ও সার বিতরণ, বীজ ও বালাইনাশক সরবরাহকারী বিভিন্ন কম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি অফিস। আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি ও সুষম সারের ব্যবহার সর্ম্পকে প্রশিক্ষণ প্রদান, বালাই দমনে কোয়ালিটি সমৃদ্ধ বালাইনাশক এবং হাইব্রিড জাতের বীজের সরবরাহ নিশ্চিতকরণের মতো কাজ করে যাচ্ছেন তারা। ফলে কৃষকদের মধ্যে ভুট্টা চাষের আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। সরেজমিনে চাটমোহর উপজেলায় গুনাইগাছা ,হরিপুর,ছাইকোলা ও হান্ডিয়াল ইউনিয়ন বিভিন্ন গ্রামে দেখা যাই কৃষকরা ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। গতবার ভুট্টা চাষে লাভের মুখ দেখায় এবার তাঁরা ব্যাপকভাবে ভুট্টাচাষ শুরু করেছেন।মাঠে গেলে ভুট্টা চাষের দৃশ্য চোখে পড়ে। রোপণকৃত ক্ষেত পরিচর্যায় কৃষককে বেশ ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায়। কথা হয় হরিপুর ইউনিয়নের গোপালপু গ্রামের কৃষক মোঃ আব্দুল্লাহ(৩০) বলেন, বীজ, সার, পানি, জমি প্রস্তুত, লাগানো, শ্রমিক মজুরি, কাটা-মাড়াইসহ প্রতি বিঘায় তাদের খরচ হয় সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকা। ভুট্টা বিঘাতে গড়ে ৪০-৪২ মণ হয়। এবং বাজারে অনেক চাহিদা আর দামও মোটামুটি ভালো। আমি এবার ৭ বিঘা জমিতে ভুট্টা বীজ রোপন করছি আশা আছে ভালো মুনাফা পাবো। ধুলাউড়ি গ্রামের চাষি মোঃ ছলিম বলেন, ‘ফলন ভালো পাই। পাশাপাশি ভুট্টার কোন কিছুই ফেলে দিই না। এর পাতা গরুকে খাওয়াই, ডাটা, কা- ও মোচা লাকড়ি হিসেবে ব্যবহার করি। বাজারে চাহিদা ও দামও ভালো তাই আমি ৪ বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছি। এ বছর যদি আশানুরূপ ফলন ও দাম পাই তাহলে আগামী বছরো ১০ বিঘা চাষ করবো ইনশাআল্লাহ। এ বিষয় হরিপুর ব্লক উপ সহকারী কৃষি অফিসার মোঃ আরিফুল ইসলাম জানান, গত বছর ভুট্টার দাম ভালো পাওয়াই গত বছরের তুলনায় এ বছর ভুট্টা চাষ অনেক বেড়েছে, গত বছর হরিপুর ইউনিয়ন ব্লক এ ১২ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছিলো এ বছর ৪০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করছে। এ বছর ভুট্টা চাষের উপযুক্ত আবহাওয়া থাকায় ভুট্টা গাছে পোকামাকড় আক্রমণ ও রোগ বালাই কম। আমার নিয়মিত কৃষক এর জমি পরিদর্শন করে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করি এবার ফলন অনেক ভালো হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এ এ মাসুমবিল্লাহ বলেন,বহুবিধ ব্যবহার থাকায় দেশে ভুট্টার চাহিদা অনেক। মানুষের খাবারের পাশাপাশি ভুট্টা থেকে গো, মাছ ও হাঁস মুরগির খাদ্য তৈরি হয়। কৃষি অফিসের পরামর্শে ভুট্টা চাষে ঝুঁকেছেন শিক্ষিত বেকার যুবকেরাও। চাষিদের যাবতীয় কারিগরি সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। অনুকূল আবহাওয়া থাকলে এবার ভালো ফলনের বিষয়ে আশাবাদী। তিনি আরো জানান, চলতি বছরে উপজেলায় ৪৭৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে।