মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে ১১০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
তিনি বলেছেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্ফান দেশের উপকূলের ২৬ জেলায় তাণ্ডব চালিয়েছে। কয়েক ঘণ্টার তাণ্ডবে ঘরবাড়ি, কৃষি, জনজীবন তছনছ করে দিয়ে গেছে। ঝড়ের সময় গাছ চাপা, নৌকা ডুবি ও বাতাসের দশ জনের মৃত্যু ঘটেছে।’
বৃহস্পতিবার ( ২১ মে) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য তুলে ধরেন।
এর আগে, আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে করণীয় কী সে বিষয়ে আলোচনা হয়।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের উপকূলীয় ২৬ জেলায় ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আঘাত হেনেছে। ১০ জন নিহতের মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের একজন সেচ্ছাসেবীও রয়েছেন। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী গ্রামের সিপিপি ইউনিট লিডারের মা সাহারা খাতুন জনগণকে সচেতন করতে গিয়ে নৌকা ডুবিতে নিহত হন। তার পরিবারকে ৫ লাখ টাকা সহায়তা দেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয় সরকারের অধীনে থাকা ১১০০ রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০০ ব্রিজ কালভার্ট, ২৩৩ টি স্থানীয় সরকার কার্যালয়ও ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তবে বাগেরহাট, সাতক্ষীরা খুলনায় ক্ষতি হয়েছে বেশি। এসব এলাকায় টিউবওয়েলের ক্ষতি হওয়া পানি সংকট তীব্র হয়েছে। সেসব জায়গায় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দেওয়া হয়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষির মধ্যে চলতি মৌসুমে বোরো ধানে তেমন ক্ষতি না হলেও মৌসুমি ফলে ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। আম, লিচু, কাঁঠাল সব ঝরে পড়েছে। আমের ক্ষতি হয়েছে ১৫০ কোটি টাকার সমান। তবে এই আম মানুষকে ত্রাণ হিসেবে দেওয়ার চিন্তা করছে সরকার।’
তিনি বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ১৫০ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৮৪ টি জায়গার বাঁধে ফাটল ধরেছে। ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকা লাগবে সেসব মেরামত করতে। সেজন্য ৪ লাখ ব্যাগ প্রয়োজন হবে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বন্ধ অনেক জায়গায়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কথা বলেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। তখন ডাক ও টেলিযোগাযোগ চালু হবে।’
সাতক্ষীরা, বরগুনা, পটুয়াখালী ১ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ চিংড়ি ঘেরে পানি বেড়ে ৩৪০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রাণিসম্পদে ১৪০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে কতো সংখ্যক ঘরবাড়ি ভেঙেছে তা এখনো জানা যায়নি, তবে সংখ্যা নিরূপণ চলছে। সে কাজে এক সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানান তিনি। যেসব ঘরবাড়ি ভেঙেছে তা তৈরি করতে প্রতি জেলায় ৫ শ বান্ডেল টিন ও ১৫ লাখ টাকা নগদ এবং চাল ও নগদ টাকাও বরাদ্দ রাখা হয়েছে।’
এমআর/প্রিন্স