ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে ২ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।বিদ্যালয়টিতে মাত্র একটি বুথের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হচ্ছে।ফলে দেখা দিচ্ছে নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা। শিক্ষার্থী এবং টিকা প্রদানের কাজে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। শুধু তাই নয়, মেয়ে শিক্ষার্থীরা টিকা দিতে এসে রীতিমতো ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছে। এযেনো দেখার কেউ নাই।এভাবে টিকাদান কর্মসূচির চলমান থাকার একপর্যায়ে ১১ জানুয়ারি কালীগঞ্জ আলহাজ্ব আমজাদ আলী ও ফাইজুর রহমান মহিলা ডিগ্রি কলেজে আরেকটি কেন্দ্র স্থাপন করে সেখানেও শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু করা হয়েছে।বর্তমানে কালীগঞ্জের এই দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টিকাদান কেন্দ্রে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে নানা ধরনের যানবাহনে করে স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীরা আসছেন টিকা দিতে। কোমলমতি এইসব শিক্ষার্থীদেরকে আবার অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান টিকা দিতে কেন্দ্রে আনার জন্য নি¤œমানের ঝুঁকিপূর্ণ এবং মালবাহী ট্রাক ব্যাবহার করছে। আজ সরজমিনে কালীগঞ্জ মেইন বাসস্ট্যান্ড কোটচাঁদপুর রোডে বেলা ২ টার দিকে দেখা যায়,টিকা নিয়ে ফিরে যাচ্ছে মেয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি একটি ট্রাক (সাধারণ পরিবহন সীতাকু- সবজি ভান্ডার,ঢাকা মেট্র- ট- ১৮-৭২৬৩)।কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পরিবহনে কিভাবে ট্রাক ব্যবহার করলেন ঐ প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক? কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইপিআই শহিদুল ইসলামের নিকট এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেনি। কোভিড-১৯ এর টিকাদান কর্মসূচিতে প্রথম থেকেই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি স্বেচ্ছাসেবীরা দেশের সকল স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কালীগঞ্জ ইউনিটের উপ দলনেতা প্রত্যয় হোসেন জানান, প্রথম থেকেই আমরা টিকাদান কর্মসূচির সাথে জড়িত।কালীগঞ্জে শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে একটি মাত্র বুথ হওয়ায় আমাদেরকে বেশ চাপে পড়তে হচ্ছে। আজও প্রায় ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আসা শিক্ষার্থীদেরকে টিকা দেওয়া হয়েছে। বুথ সংখ্যা ও ঐ সকল বুথে স্বেচ্ছাসেবীর সংখ্যা বাড়ালে শৃংখলার সাথে শিক্ষার্থীদের টিকাদান করা সম্ভব হবে বলে মনে করি।স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদেরকে কোভিড-১৯ এর ফাইজারের টিকা প্রদান করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান। বর্তমানে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর অমিক্রণ ভেরিয়েন্ট এর প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। যে কারণে টিকা প্রদান ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা কার্যক্রমকে চালিয়ে নেওয়ার জন্যই মূলত বাংলাদেশে সরকারের শিক্ষামন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদেরকে দ্রুত টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অথচ এই টিকাদান কার্যক্রমের বিশৃঙ্খলা অবস্থা দেখে অভিভাবক মহল অত্যন্ত সংকিত।তাদের মধ্যে অনেকে মনে করেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান যদি দায়িত্বহীনের মতো মাল টানা ট্রাকে শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে আনা নেওয়ার সময় কোনো দূর্ঘটনার শিকার হয় তবে এর দায় কি উনি নিবেন? ঐ প্রতিষ্ঠানের পরিচয় সনাক্ত করে তার প্রধান শিক্ষককে এই ধরনের কাজের জন্য জবাবদিহিতার আওতায় আনা এবং এই ধরনের হীন কাজের জন্য উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা উচিত।