দুপুরের ঘটনা। চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ নিয়ে দোকানে এলেন এক বৃদ্ধ ভ্যানচালক। নাম তার রাধাকান্ত। দোকানে এসেছেন ঠিকই, কিন্তু তার কাছে টাকা কম। তাই তিনি শুধু চা খেতে চাইলেন। কিন্তু তাকে দেখেই দোকানী সুব্রত নাথ বুঝতে পারেন তিনি ক্ষুধার্ত। তাই দোকানের সামনে থাকা ‘খুশির ঝুড়ি’ থেকে এক প্যাকেট বিস্কুট তুলে নিতে বলেন। ওই ভ্যানচালককে একটা মাস্কও পরিয়ে দেন সুব্রত নাথ। ঝুড়ি থেকে এক প্যাকেট বিস্কুট পেয়ে খুবই খুশি বৃদ্ধ।
এভাবেই অসহায়-অভাবী ও ক্ষুধার্ত মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন সুব্রত নাথ ও তার স্ত্রী প্রিয়া নাথ। ঘটনাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বনগাঁর চম্পক সরণি মোড়ে। ‘খুশির ঝুড়ি’ নিয়ে খোঁজ করতে গিয়ে জানা গেল, পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দা দম্পতি সুব্রত নাথ। চম্পক সরণি মোড়ে তাদের একটি চায়ের দোকান রয়েছে। সেখানে ঝুড়িতে খাদ্যসামগ্রী রাখেন তিনি। কোনো ক্ষুধার্ত, পথচারী, কিংবা ভবঘুরে দোকানে এসে চা চাইলে তাদের বিনা পয়সায় ওই ঝুড়ি থেকে খাবার তুলে দেন। অনেকেই সেখানে এসে দাঁড়িয়ে থাকলেও মুখ ফুটে খিদের কথা বলতে পারেন না। তাদের মুখ দেখেই বুঝে নেন সুব্রত। ঝুড়ি থেকে খাবার তুলে দেন। সবই বিনামূল্যে। এভাবে দিনে অন্তত ২০ জন ক্ষুধার্ত মানুষের পেট ভরিয়ে থাকেন সুব্রত ও প্রিয়া।
এই দম্পতির নিজেদের বাড়ি নেই, থাকেন ভাড়া বাসায়। ছোট্ট চায়ের দোকান চালিয়ে কোনো রকমে সংসার চলে যায়। কিন্তু তাতে যেন দুঃখই নেই তাদের। সুব্রত বলেন, স্ত্রী প্রিয়া অতীতে অভাব-অনটনের মধ্যে কাটিয়েছেন। তাই এর যন্ত্রণা তিনি বুঝতে পারেন। স্ত্রীর ইচ্ছাতেই এই ‘খুশির ঝুড়ি’র উদ্যোগ। সুব্রত বলেন, মানুষ যখন সামান্য কিছু খেয়ে খুশি হন, তাদের চোখ দেখে তৃপ্তি অনুভব করি। কিন্তু এই খাবারগুলো দেন কারা? এমন প্রশ্নে তিনি জানালেন, দোকানে এসে অনেক ক্রেতাই খুশির ঝুড়িতে খাবার কিনে রেখে যান। এছাড়া কয়েকজন ভবঘুরের খাবারের ব্যবস্থা নিজেই করেন। খবর: সংবাদ প্রতিদিন