কুমিল্লার দেবিদ্বারে গোমতী নদীর দুই পাড়ে মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। শীত আসার পরপরই দুই পাড়ের প্রায় ৭০ কিলোমিটার বাঁধজুড়ে রাত-দিন শত শত ট্রাক্টর ওঠানামা করছে। নদীর ভেতরের মাটি কাটার কারণে হুমকির মুখে পড়েছে বাঁধ, সড়ক ও সেতু। এমন অভিযোগের ভিত্তিত্বে মঙ্গলবার দুপুরে গোমতী নদীর বেগমাবাদ এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে গোমতী নদী থেকে মাটি কাটার সময় একটি ট্রাক্টর জ্বালিয়ে দেওয়া হয় এবং আটককৃত তিন ব্যক্তির কাছ থেকে নগদ সাড়ে তিন লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এসময় ঘটনাস্থলে মাটি বহনকারী একটি ট্রাক্টরকে ধাওয়া করলে চালক ট্রাক্টর ফেলে পালিয়ে যায়। পরে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশিক উন-নবী তালুকদার’র নির্দেশে ট্রাক্টরটি আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়। ইউএনও অফিস সূত্রে জানা যায়, গোমতী নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটা ও ট্রাক্টরের মাধ্যমে নদীর মাটি অন্যত্র সরানোর দায়ের একটি ট্রাক্টরকে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় এবং তিন ব্যক্তিকে আটক করা হয়। অভিযুক্ত ব্যাক্তিরা হলেন, চরবাকর গ্রামের ময়নাল হোসেন’র পুত্র সোহাগকে ১ লক্ষ টাকা, বজলুর রহমানের পুত্র আব্দুল মজিদকে ১ লক্ষ টাকা, কবির হোসেন’র পুত্র শরীফকে ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকাসহ ৩ জন থেকে মোট ৩লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। গোমতী নদীর আশপাশের একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, প্রতি বছর শীত আসলে এ এলাকায় ধুলাবালিতে আচ্ছন্ন হয়ে যায়। ঘর-বাড়ি বিছানাপত্রে বালুর স্তুপ পড়ে। দুর্ভোগ পোহাতে হয় রাস্তা ঘাটে চলাচল করা মানুষের। তাঁরা অভিযোগ করে আরও বলেন, গোমতী নদীর মাটি কাটার পিছনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু অসাধু চক্র জড়িত। তাঁরা মাটি কাটার সিন্ডিকেট থেকে প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। আমরা স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে আবেদন করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছিনা। ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানেও তা থামছেনা। ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশিক উন-নবী তালুকদার’র বলেন, বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ৪ ধারায় আটক ব্যক্তিকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের জেল দেওয়া হবে। গোমতী নদীকে বাঁচাতে আরও কঠোর হবে উপজেলা প্রশাসন। যারা মাটি কাটার সাথে জড়িত এদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এই অভিযান চলমান থাকবে।