ভবঘুরেদের আনাগোনা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে মাধবদীতে। তাদের চলাফেরা, কথা-বার্তা দেখে-শুনে প্রথমে মানসিক প্রতিবন্ধী মনে হলেও, প্রকৃতপক্ষে তা নয়। ফলে এসব ভবঘুরেদের আনাগোনায় শঙ্কিত মাধবদীর সাধারণ মানুষ। তাছাড়া তাদের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য নেই প্রশাসনের কাছে। এমন কি তথ্য নেই মাধবদী পৌরসভাতেও। সরেজমিনে দেখা যায়, মাধবদী পৌর শহরের নতুন ও পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, পোস্ট অফিসের মোড়, পৌরসভার মোড়, বড় মসজিদ রোড, বটতলা, ম্যানচেস্টার চত্তর, শিতলা বাড়ি রোড, আনন্দী মোড়, স্কুল মার্কেট, সহ বাজারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এ ধরণের ব্যক্তি রয়েছেন যাদের কোনো নির্দিষ্ট ঠিকানা নেই। সারাদিন পথে পথেই থাকেন। বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরার সামনে খাবারের জন্য দাঁড়িয়ে থাকেন। কেউ কিছু দিলে খান, না দিলে চলে যান। রাত হলে অন্যত্র চলে যান। মাধবদী হাই স্কুলের বড় মাঠে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বসে নাম পরিচয়হীন এ ধরনের একজনকে দেখা যায়, নায়িকাদের ভিউ কার্ড (ছবি) হাতে নিয়ে মনের সুখে বিরহের গান গেয়ে যান। গরুর হাট মোড় এলাকার এক মহিলা ব্যক্তি সিগেরেট খাবেন আর ভিড় ভিড় করে কথা বলেন। পোস্ট অফিস মোড় এলাকার ব্যক্তিটি কল্পিত কোনো ব্যক্তির উদ্দেশ্যে অশ্রাব্য গালিগালাজ করেন। পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এমন একজনকে প্রায় সময় দেখা যায় যিনি ইংরেজিতে কথা বলে টাকা খুজেন। শিতলা বাড়ি মোড়ে প্রাইম জেনারেল হাসপাতালের সামনে নাম পরিচয়হীন এ ধরনের একজন মহিলাকে সারাদিন দেখা যায় যে নিজে নিজেই কথা বলছেন এবং যেখানে সেখানেই দাড়িয়ে প্রসাব করছেন। জানা গেছে, সাধারণ মানুষ ‘পাগল’ মনে করে তাদের নিয়ে খুব বেশী আগ্রহ দেখান না। তবে তারা কোথা থেকে এসেছে এবং কেন নির্দিষ্ট কতগুলো এলাকা বেছে নিয়ে সেখানেই রাতদিন অবস্থান করেন এবং মাঝে মাঝে লাপাত্তা হয়ে যান- এ প্রশ্নের উত্তর কারো কাছে মেলেনি। মাধবদী পৌর শহরের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, মাঝে মাঝে একজনকে দেখি,‘ভিনদেশী’ ভাষায় কথা বলে। কিছু খেতে দিলে খায়, না হলে চুপ করে চলে যায়। রাতে বিভিন্ন মার্কেটের বারান্দায় ঘুমায়। কখনো কখনো কয়েক দিনের জন্য লাপাত্তা হয়ে যায়, আবার ফিরে আসে। এ ব্যাপারে মাধবদী পৌর মেয়র হাজ্বী মোশাররফ হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, নানা ধরণের সীমবদ্ধতার কারনে ইচ্ছে থাকলেও ভবঘুরেদের কোন তালিকা বা পুনর্বাসনের কিছু করতে পারিনি। আমাদের কাছে এর সুনির্দিস্ট কোন তথ্য নেই। তবে যারা চোখে পরছে তাদেরকে দেখে পাগল বলেই মনে হয়। মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দুজ্জামানের কাছে এব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাধবদী শহরের ভাসমান ভবঘুরেদের বিষয়ে কোনো তথ্য আমাদের হাতে নেই। আপনারা সাংবাদিক আপনাদের কাছে সন্দেহজনক কাউকে মনে হলে আমাদের জানাবেন। সন্দেহজনক কাউকে মনে হলে তাকে আমরা আইনের আওতায় এনে থাকি।