শারীরিক সুস্থতায় ভেষজ উপাদান দারুন উপকারী। প্রাচীনকাল থেকে এমনই কিছু ভেষজ আজও বিভিন্ন রোগ সারাতে ব্যবহৃত হয়। তেমনই এক উপাদান হলো কারি পাতা। অনেকেই বিভিন্ন রান্নায় স্বাদ ও ঘ্রাণ বাড়াতে কারি পাতা ব্যবহার করেন। জানেন কি, এই পাতার রস বিভিন্ন রোগের দাওয়াই। কারি পাতায় থাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন, কপার ও ভিটামিন। এ ছাড়াও কারি পাতা ভিটামিন এ, বি, সি ও বি২ সমৃদ্ধ। পাতা নিয়মিত ব্যবহারে শরীর এসবের ঘাটতি পূরণ হয়। শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে এটি বেশ কার্যকর। কারি পাতার রস তৈরি করা বেশ সহজ। এজন্য একটি পাত্রে এক গ্লাস পানিতে কয়েকটি কারি পাতা সেদ্ধ করে নিন। এরপর ছেঁকে পানিতে অল্প লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে চায়ের মতো পান করলেই মিলবে সুফল। জেনে নিন কারি পাতা কোন কোন রোগ সারায় সহজেই-
> কারি পাতায় আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি কোষের নষ্ট হওয়া প্রতিরোধ করে শরীরকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখে। রোগ সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
> কারি পাতা ওজন কমাতেও সাহায্য করে। খাবারে নিয়মিত কারি পাতা ব্যবহার করলে কিংবা এর রস পান করলেও ওজন কমে দ্রুত।
> মস্তিষ্ককে সজাগ রাখতেও কারিপাতার জুড়ি মেলা ভার। বিজ্ঞান বলছে, কারিপাতা অ্যামনেশিয়া (স্মৃতিশক্তিজনিত সমস্যা) নিয়ন্ত্রণে দারুণ কাজ দেয়।
> দৃষ্টিশক্তির জন্যও কারি পাতা অনেক উপকারী। কারি পাতায় উপস্থিত ভিটামিন এ’র প্রভাবেই চোখের কর্নিয়া ভালো থাকে।
> পেটের বিভিন্ন সমস্যায় কারি পাতা ব্যবহার করা যেতে পারে। কারি পাতার গুঁড়া বাটারমিল্কে মিশিয়ে খেলে ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য ও আমাশয় থেকে সহজেই নিস্তার পাবেন। কারি পাতা অন্ত্রের হজমকারী অ্যানজাইমগুলোকে উদ্দীপিত করে।
> ব্যাকটেরিয়া দূর করতেও এই পাতা বেশ কার্যকর। কারি পাতায় থাকা কার্বাজোল অ্যালকালয়েড, যা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি ক্যানসার ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যযুক্ত।
এক পাতায় সারবে নানা রোগ: এই পাতায় লিনোলল যৌগও (যেটি কারি পাতায় ঘ্রাণ দেয়) থাকে। এসবের কারণেই এই পাতা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে সহজেই। এটি শরীর থেকে ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিক্যাল দূর করতেও সাহায্য করে।
> কারি পাতা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কার্যকরভাবে কমাতে পারে। এতে থাকা তামা, লোহা, দস্তা ও লোহার মতো খনিজগুলোই এ কাজ করে। তাই ডায়াবেটিস রোগী নিয়মিত খাদ্যতালিকায় এই পাতা রাখতে পারেন। > মানসিক চাপ কমাতেও সাহায্য করে কারি পাতা। এতে থাকা লিনালুল যৌগ যা ঘ্রাণ সৃষ্টি করে। মানসিক চাপ কমাতে ব্যবহার করতে পারেন কারি পাতার তেল।
> কারি পাতা বেটে ওই পেস্ট ক্ষত ও পোড়া স্থানে লাগালে দ্রুত সেরে যায। এজন্য আক্রান্ত স্থানে এই পাতার পেস্ট লাগিয়ে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে সারারাত রাখুন।
দেখবেন ব্যথা ও জ্বালাপোড়া কমে যাবে। কারি পাতার কার্বাজোল অ্যালকালয়েড যৌগ খুব বেশি গভীর নয় এমন ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে।
> কারি পাতা চুলের জন্যও অনেক উপকারী। চুল পড়ার সমস্যা থেকে শুরু করে খুশকি, ফ্ল্যাকি স্ক্যাল্প, অকাল পাকা ইত্যাদি সমস্যা প্রতিরোধ করে। সূত্র: এনডিটিভি