স্ট্রোক একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা। হঠাৎ করেই যে কারও স্ট্রোক হতে পারে। তাৎক্ষণিক এর সঠিক চিকিৎসা না করলে রোগী প্যারালাইসড হতে পারেন। এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। তবে তাৎক্ষণিক স্ট্রোকের রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া গেলে তার ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের। অনেকেই স্ট্রোকের সাথে হার্ট অ্যাটাককে গুলিয়ে ফেলেন। তবে মনে রাখবেন এই দুটি বিষয় সম্পূর্ণ ভিন্ন।
স্ট্রোক কী? স্ট্রোক আঘাত হানে মানুষের মস্তিষ্কে। ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, মস্তিষ্কের কোনোঅংশে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে মস্তিষ্কের কোষগুলো মরে গেলে স্ট্রোক হয়। সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য শরীরের প্রতিটি কোষে রক্ত সঞ্চালন প্রয়োজন। এই রক্তের মাধ্যমেই শরীরের কোষে কোষে অক্সিজেন পৌঁছায়। স্ট্রোক মূলত ২ প্রকার। একটি ইস্কেমিক স্ট্রোক, যা রক্ত নালিতে ক্লট বা জমাট বাঁধার কারণে হয়। অন্যদিকে যদি রক্তনালি ছিঁড়ে যায়, ছড়িয়ে পড়া রক্তগুলো মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টি করে ও মস্তিষ্কে ঠিকমতো রক্ত পৌঁছায় না, তাকে বলা হয় হেমোরেজিক স্ট্রোক।
এর মধ্যে ইস্কেমিক স্ট্রোক দেখা যায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের ক্ষেত্রে। এ ধরনের স্ট্রোকের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, এর কোনো নির্দিষ্ট লক্ষণ হয় না। এজন্য সাবধান থাকা জরুরি। তবে কিছু সূক্ষ্ম উপসর্গ আছে। যা অনেকেই সাধারণ ভেবে অবহেলা করেন। যদি কেউ এসব ছোটখাট লক্ষণ চিনতে পারেন তাহলে পরিস্থিতি অনেকটা সামলে নেওয়া যেতে পারে।
কোন কোন লক্ষণে টের পাবেন? এই স্ট্রোক হওয়ার আগে হাত ও পা দুর্বল-শিথিল হয়ে যেতে পারে। স্ট্রোকের অন্যান্য সমস্যা হঠাৎ দেখা দেয়। তবে এই উপসর্গটি দেখা দেয় বাকি সব লক্ষণ জানান দেওয়ার আগেই। এক্ষেত্রে হাত-পা নাড়াতে সমস্যা হয়। প্যারালিসিসের শুরু হয় এ সময় থেকে। কোনো কাজ করতে গেলেই হাত-পা বাঁধা তৈরি করতে পারে। চেষ্টা করা স্বত্ত্বেও প্রয়োজনমাফিক হাত-পা নড়াচড়া করা যায় না। এর পেছনের মূল কারণ হলো, আমাদের সব ধরনের নড়াচড়ার সংকেত আসে মস্তিষ্ক থেকে। মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল কমতে শুরু করলে তা পেশিতেও প্রভাব ফেলে। এর ফলে পেশি শক্ত হয়ে যেতে শুরু করে। তাই হাত-পা নাড়াতেও তখন সমস্যা হয়। কখনো যদি এমন সমস্যা বোধ করেন তাহলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হন। না হলেই ঘটতে পারে বিপদ। সূত্র: বিবিসি/টাইমস অব ইন্ডিয়া/ওয়েব এমডি