চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে জিপ উল্টে দুই স্কুল শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় ঘাতক এই গাড়ী(জিপ) চালক মোঃ আলাউদ্দিনকে(২৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত রবিবার রাত পৌণে ১২ টায় নগরীর বায়জিদ থানা এলাকা থেকে তাকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ফটিকছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ রবিউল ইসলাম। ধুত আলাউদ্দিন উপজেলার নারায়নহাট ইউনিয়নের উত্তর শৈলকুপা এলাকার রুহুল আমিন প্রকাশ তনু ফকিরের পুত্র। হাইওয়ে পুলিশের কাছ থেকে বার্ষিক চার হাজার টাকার টোকেন সংগ্রহের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে লাইসেন্সবিহীন চাঁদের গাড়িটি (জীপ) চালিয়ে আসছেন বলে আটক আসামী আলাউদ্দিন ফটিকছড়ি থানায় পুলিশের প্রেসবিফ্রিংয়ে সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেন। হাইওয়ে পুলিশের সার্জেন্ট এর তাড়া খেয়ে মোটরসাইকেল কে বাঁচাতে গিয়ে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় বলে স্বীকার করে সে। পরে সে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গিয়ে আতœগোপনে চলে যায়। এ ব্যাপারে ফটিকছড়ি থানা ওসি রবিউল ইসলাম জানান, ‘নিহত নিশু আক্তারের চাচা মোঃ আইয়ুব আলীর করা মামলায় প্রধানই আসামী আলাউদ্দিনকে ধরতে আমরা অভিযান অব্যাহত রাখি। গতকাল (রবিবার) রাত পৌণে ১২ টায় সিএমপির বায়জিদ থানা এলাকা হতে আসামীকে আটক করতে সক্ষম হই। এঘটনায় ট্রাফিক পুলিশের টিআই নিখিল চাকমা ও সার্জেন্ট আলামিনকে ক্লোজড করেছেন মাননীয় পুলিশ সুপার মহোদয় এবং তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।’ উল্লেখ্য, গত ৯ ফেব্রুয়ারী(বুধবার) দুপুর সাড়ে ১২ টায় এস্যাইমেন্ট জমা দিয়ে স্কুল থেকে ফেরার পথে পেলাগাজি দীঘির সংলগ্ন এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিশামনি ও মিশু আকতার নামের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। তারা পাইন্দংস্থ মোল্লার বাড়ীর আবুল বশরের কন্যা মিশু আকতার(১৫) ও একই এলাকার তুফান আলীর বাড়ীর লোকমানের কন্যা নিশা মনি(১৫)। তারা ঘটনা স্থলেই নিহত হয়। স্থানীয়রা গাড়ীর নিচ থেকে তাদের উদ্ধার করে ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করে। পুলিশের টিআই নিখিল চাকমা ও সার্জেন্ট আলামিন তাদের মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করে। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর অপর একটি আগুন জ্বালিয়ে দেয়। ঐ দিন দুপুরে প্রায় দুই ঘন্টা চট্টগ্রাম- খাগড়াছড়ি মহাসড়ক, ফটিকছড়ি- হেঁয়াকো সড়ক, পেলাগাজি- বারৈয়ারঢালা সড়ক অবরোধ করে রাখে বিক্ষোভকারীরা। পরে এডিশনাল এসপি শাহাদাত হোসাইন, ফটিকছড়ি নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মুহাম্মদ মহিনুল হাসান, ফটিকছড়ি থানার ওসি রবিউল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার দুই দিন পরে ট্রাফিক পুলিশের টিআই নিখিল চাকমা ও সার্জেন্ট আলামিনকে ক্লোজড করা হয়। বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম জেলা পুুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক।