ভালবাসা মানে না কোন বাঁধা-বিপত্তি! গোপন অভিসার একদিন প্রকাশ হয়ে যায়। এটা প্রকৃতির নিয়ম। তাই পরকীয়া প্রেমের খেসারত দিতে হলো মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুব মহিলালীগের সাধারণ সম্পাদিকা ফারহানা ইয়াসমিনকে।
সম্প্রতি স্বামীহারা ফারহানা ইয়াসমিন সকলের অজান্তে মেহেরপুরের বুড়িপোতা ইউনিয়নের হরিরামপুর গ্রামের আনছারুল হকের ছেলে সরোয়ার হোসেন সবুজের (৩০) সাথে চুটিয়ে প্রেম-প্রেম খেলায় মেতে উঠেছিল। সকলের সন্দেহের দানা বেঁধে উঠলেও ফারহানা পরিবার, সমাজ ছাড়াও তার একমাত্র মেয়েকে আড়াল করে পরকীয়া প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন।
মঙ্গলবার সকাল ১১ টার সময় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন গাংনী পৌর এলাকার চৌগাছা গ্রামের পূর্বপাড়াস্থ তার ভাড়া বাড়ীতে অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার সময় বেরশিক জনতার হাতে ধরা পড়েন। পরবর্তীতে কেলেংকারীর খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে, সাথে সাথে গাংনী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেহেরপুর জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ, খালেক,গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওবাইদুর রহমান, গাংনী পৌরসভার মেয়র আশরাফুল ইসলাম,পৌর কাউন্সিলর নবীরউদ্দীনসহ অসংখ্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
প্রথমতঃ পরকীয়া প্রেমের কথা দু’জন অস্বীকার করলেও নানা জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে স্বীকার করেন। ঘটনার তদন্ত করতে অভিযুক্ত সবুজ ও ফারহানার মোবাইল ফোন সার্চ করে তাদের পরকীয়ার তথ্য বেরিয়ে আসে। মোবাইল ফোনের ম্যাসেঞ্জারে তাদের অনৈতিক মেলামেশা ও গোপনীয় আলাপচারিতার অডিও ভিডিওর চিত্র পাওয়া গেছে।
ফারহানা জানান, উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের পর থেকে সবুজের সাথে আমার পরিচয়। সে আমার ছোট দেবরের মত। আমার বাড়ীতে প্রায়ই বেড়াতে আসে। আমার প্রয়াত স্বামী শাহাব উদ্দীন জীবিত থাকাকালীন সময় থেকে আমার বাসায় যাতায়াত করতো। অন্যদিকে সবুজ জানায়, আমি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। রাজনৈতিক নানা কর্মসূচীতে তার সাথে আমার পরিচয়। আমি তার ছোট ভাই হিসাবে সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলাম। পরবর্তীতে সে আমাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেছে। এসময় তার একমাত্র ছোট মেয়ে বহু লোকজন ও সাংবাদিকদের জানায়, অনেক আগে আমার মা সবুজ আঙ্কেলকে মোটর সাইকেল কিনে দিয়েছে।
ঘটনার পোষ্ট মর্টেম শেষে উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ খালেক অভিভাবক হিসাবে ও গাংনী পৌরসভার মেয়রের প্রস্তাবে উভয়ে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২ টার সময় গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান ও গাংনী পৌরসভার মেয়রের উপস্থিতিতে ২০ লাখ টাকা দেন মোহরে তাদের ২য় বিয়ে পড়ানো হয়। এসময় ছেলে পক্ষের পিতা ও নিকটাত্মীয়, গাংনী পৌর সভার কাউন্সিলর আসাল উদ্দীন, শ্রমিক নেতা মনিসহ অনেক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যনকে সকলেই ভাবী সম্বোধন করতো। তাই শরৎ চন্দ্রের ভাষায় ‘বৌদির বিয়ে’ হওয়ায় শহরে নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছ্। এনিয়ে স্বামী শাহাবউদ্দীনের মৃত্যু নিয়ে নানা সন্দেহ দানা বেঁধে উঠছে।
অনেকেই মন্তব্য করে বলছেন, এই পরকীয়া প্রেমের কারণেই শাহাব উদ্দীনকে প্রাণ দিতে হয়েছ্। এই দু’জনকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে মৃত্যু রহস্য উদঘাটিত হতে পারে বলে অনেকেই বলাবলি করছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান এমএ খালেক জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নইলে উচ্ছৃংখল বেরসিক লোকজন বেপরোয়া হয়ে শৃংখলা ভঙ্গ করতো।
এমআইপি/প্রিন্স