ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার দ্বিতীয় দিনেই রাজধানী কিয়েভের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে রুশ সেনাবাহিনী। দফায় দফায় বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসছে সেখান থেকে। ভারী গোলাবর্ষণের সঙ্গে শহরের উপকণ্ঠে চলছে খ-যুদ্ধ, পালাচ্ছে মানুষ।
শহরের উপকণ্ঠেও ব্যাপক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে হামলা প্রতিহত করতে কিয়েভে ইউক্রেনের সেনাদের প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে। অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছেন সাধারণ লোকজন। শুক্রবার সাধারণ নাগরিকদের হাতে হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে ইউক্রেইন সরকার। পালিয়ে না গিয়ে দেশ রক্ষায় রুখে দাঁড়াবার আহ্বান জানানো হয়েছে পুরুষদের।
ইউক্রেইনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয়ের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবকদের ১৮ হাজার আগ্নেয়াস্ত্র দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি মলোটভ ককটেল বানিয়ে রাখার আহ্বান জানিয়ে লিফলেট বিলি করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ভাদিম ডেনিসেনকো বলেন, অস্ত্র হাতে আমাদের রাজধানীকে রক্ষা করতে চান, কিয়েভে এমন স্বেচ্ছাসেবীদের কাছে ১৮ হাজার মেশিনগান সরবরাহ করা হয়েছে। রুশ বাহিনীকে থামাতে ইউক্রেনের সামরিক সরঞ্জাম কিয়েভে প্রবেশ করছে বলে উল্লেখ করেন ডেনিসেনকো। শহরটির বাসিন্দাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, অনুগ্রহ করে ভিডিও করবেন না। তাদের (ইউক্রেন সেনাবাহিনী) গতিবিধি ভিডিও করবেন না। আমাদের শহরকে রক্ষা করার জন্য এটি জরুরি।
কিয়েভের সাধারণ বাসিন্দারা যখন যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখন অস্ত্র হাতে দেখা গেছে ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেনকোকে।
সিএনএনকে তিনি বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের যতই সেনা, ক্ষেপণাস্ত্র আর পারমাণবিক বোমা থাকুক, তিনি কখনোই ইউক্রেন দখল করতে পারবেন না। এর আগে রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে কিয়েভের বাসিন্দাদের প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানায় ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এক পোস্টে মন্ত্রণালয় জানায়, রুশ সেনাদের গতিবিধি সরকারকে জানাতে সাধারণ নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি মলতোভ ককটেল তৈরি করে শত্রুদের প্রতিহত করতে বলা হয়েছে। রুশ সেনারা কিয়েভের পার্লামেন্ট থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার উত্তরের শহর ওবোলনস্কিতে ঢুকে পড়েছে বলে আজ জানায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার রাত নানা আশঙ্কার মধ্যে কেটেছে কিয়েভের বাসিন্দাদের। চলছে কারফিউ। রাতভর দফায় দফায় ভেসে এসেছে বোমাবর্ষণের শব্দ। শুক্রবারও শহরের কেন্দ্র থেকে বড় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। বৃহস্পতিবারই কিয়েভের উপকণ্ঠে পৌঁছে যায় রাশিয়ার সেনারা। ওবোলনস্কির কাছে হোস্তোমিল বিমানঘাঁটিতে হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা চালায় রাশিয়া। অবশ্য হামলা প্রতিহত করার দাবি করেছে ইউক্রেন।