বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী, ক্যালিওগ্রাফার ও কাটুর্নিস্ট এবং নান্দনিক লেখক ইব্রাহীম মন্ডলের এক অনন্য সৃষ্টি ‘চারু-কারু পাঠ’ বইটি। কাকতালীয়ভাবে বইটি আমার কাছে আসে এবং মনোযোগের সাথে বইটি পড়া শুরু করি। বইটি পড়ে আমার কাছে মনে হয়েছে, ‘চারু-কারু পাঠ’বইটি প্রথম শ্রেণি থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পড়ার উপযোগী; যা প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর জন্য প্রয়োজন বৈকি। আর নিজে নিজে যদি কেউ আঁকাআঁকি শিখতে চান তবে তাকে আমি বইটি কেনার অনুরোধ করছি। বিশেষ করে যারা শিল্প-সাহিত্য নিয়ে সাধনা করেন কিংবা করতে চান তাদের জন্য এটি আরও বেশি অপরিহার্য্য বলে মনে করি। যারা ছবি আঁকা শুরু করেছেন বা করবেন বলে ভাবছেন তাদের জন্য বইটি কেনা ‘ফরজে আইন’ বলবো। আচ্ছা চলুনতো দেখি ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রাচ্যকলা বিভাগের অনারারী প্রফেসর আব্দুস সাত্তার কি বলছেন, ইব্রাহীম মন্ডলের ‘চারু-কারু পাঠ’ বইটি নিয়ে। গুণি এই শিক্ষাবিদের বক্তব্য হলো- যদি বলি, যিনি শিল্পকলা সম্পর্কে জানতে চান, শিখতে চান তিনি গ্রন্থটি অনুসরণ করলে জানতেও শিখতে পারবেন। বইটি আগ্রহী পাঠকদের তৃষ্ণা মেটাবে।শিল্পকলা বিষয়ক গ্রন্থ ‘চারু-কারু পাঠ’ শিল্পী ও লেখক ইব্রাহীম মন্ডল জাতিকে উপহার দিয়ে গরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
বইটির ভূমিকা এরকম লেখা হয়েছে —- ছবি আঁকার, শেখার সাধারণ কিছু নিয়ম কানুন এখানে দেওয়া আছে। আছে চিত্র শিল্পের নানান মাধ্যমের কথা। দেশ-বিদেশের খ্যাতিমান শিল্পী ও তাদের শিল্পকর্মের কথা। শিল্পকলা চর্চা করতে যারা আগ্রহী, যারা শিল্পী হতে চান এবং শিল্পের কিছু ব্যাকরণ নিয়ম-কানুন ও বিখ্যাত শিল্পী এবং তাদের শিল্পকর্মের সাথে পরিচিত হতে চান; তাদের এই বইটি সহায়তা করবে বলে আশা করি। স্থাপত্যকলা ভর্তির ক্ষেত্রেও শিক্ষার্থীদের জন্য বইটি কাজে আসবে। এতে আরও বলা হয়েছে— ছবি আঁকার বয়সের কোন ধরা-বাধা বয়স নাই। সব বয়সের মানুষ ছবি আঁকতে পারে। অনেক দেশেই চাকুরী থেকে অবসর নেওয়ার পর ছবি আঁকা শুরু করেন। এবং আমৃত্যু পর্যন্ত অব্যাহত রাখেন। শিল্পের কার্যকারীতার জন্য এর চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে সবার কাছে। স্কুলগুলোর পাঠ্যসুচিতে বাধ্যতামূলক অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে চারু-কারু পাঠ। পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় -গুলোতে ফ্যাকাল্টি চালু করা হচ্ছে।
বইটির সূচিপত্রে নজর দিলে দেখা যায়, ছবির কথা, ছবি আঁকার শুরুর কথা,চারুকলা, ছবি আঁকার সাধারণ নিয়ম, ছবি আঁকার উপকরণসহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সহজবোধ্য আলোচনা রয়েছে। আরও আছে জল রং, তেল রং, ছাপচিত্র, লিথোচিত্রসহ প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ। দেশের খ্যাতিমান ছয়জন শিল্পীর কথা তুলে ধরতে ভুল করেননি লেখক। দিয়েছেন বিশ্ব বিখ্যাত শিল্পীদের পরিচয়। বাংলাদেশের চারু শিল্পের ইতিহাস ওঠে এসেছে ইব্রাহীম মন্ডলের ‘চারু-কারু পাঠ’ বইয়ে এছাড়াও কার্টুন আঁকার পদ্ধতি, ক্যালিওগ্রাফি, নকশাকলা, সিরামিক আর্ট, পোস্টার, ইলেস্ট্রেশন ।
সবশেষ চারু-কারু বিষয়ে ভর্তি হতে ইচ্ছুকদের নির্দেশনা দিতে ছাড়েননি খ্যাতনামা এই কার্টুনিস্ট ও সুরুচিবোধের এই লেখক। পিদিম প্রকাশনী প্রকাশিত ২৩২ পৃষ্ঠার বইটি ৮০ গ্রাম আর্ট পেপারে রঙে ছাপা। দাম রাখা হয়েছে ৪৫০ টাকা। চমৎকার মলাটে মোড়ানো এবং সাবলিল ভাষায় লেখা বইটি বুকসেলফের শোভা বর্ধন করবে। একইসাথে রুচিবোধের পরিচয় বহন করবে বলেও আমার বিশ্বাস। বইটি পাওয়া যাবে অমর একুশে বই মেলার ৫৪৩ নম্বর স্টলে দেশজ প্রকাশনীতে। যোগাযোগ -০১৭০৮১৬৯৩৩৮। আমি বইটির বহুল প্রচার কামনা করি। আলোচনা: আবু লানিকা