দেশের কৃষকেরা যে বাঁধাকপি সাড়ে ১৩ টাকা দরে বিক্রি করেন, সেই বাঁধাকপি ঢাকার বাজারে বিক্রি হয় ৩৮ টাকায়। যা কৃষক পর্যায় থেকেও তিন গুণ বেশি। সবজির বাজারে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য ও পুলিশের চাঁদাবাজির বিষয়ক কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের করা এক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।
শুধু বাঁধাকপি নয়, বেগুন, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি ও কাঁচা মরিচসহ সব বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দামে কৃষক পর্যায়ের থেকেও অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ঢাকার বাজারে। এর কারণ হিসেবে মধ্যস্বত্বভোগী, পরিবহন খরচ ও পুলিশের চাঁদাবাজিকে উল্লেখ করা হয়েছে। গত ১ থেকে ৩ জানুয়ারি ঢাকার কাওরান বাজার, বগুড়া, যশোর, রাজশাহী ও মেহেরপুর জেলার কৃষক, ফড়িয়া, পাইকার ও খুচরা বিক্রেতার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করে কৃষি অধিদপ্তর। এটি গত সপ্তাহে কৃষি মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে দেখা যায়, পাঁচটি সবজি বিক্রি করে সবচেয়ে বেশি মুনাফা করেন কৃষকেরা, সবজিভেদে ৩৭ থেকে ৪৭ শতাংশ। আর ফড়িয়ারা ৬ থেকে ৭, পাইকাররা ১১ থেকে ২১ ও খুচরা ব্যবসায়ীরা ৩৩ থেকে ৪৬ শতাংশ মুনাফা করেন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পণ্য পরিবহনে ট্রাকভাড়া, সংরক্ষণ ব্যয়, দোকানভাড়া ও নামানো-ওঠানোর কাজে শ্রমিকের মজুরি খরচ রয়েছে। পণ্য পরিবহন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সময় বিভিন্ন জায়গায় ব্যবসায়ীদের চাঁদা দিতে হয়।
এর ফলেই এসব পণ্যের দাম বেড়ে যায়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা রাজশাহী ব্যবসায়ীদের তথ্য অনুযায়ী, জেলাটির বানেশ্বর বাজার থেকে ঢাকার কারওয়ান বাজার পর্যন্ত পণ্য পরিবহনে ট্রাকভাড়া ১৭ হাজার টাকা। তবে রাজশাহীর আমচত্বর, বেলপুকুরিয়া, নাটোর বাইপাস, এলেঙ্গা বাইপাস, টাঙ্গাইল বাইপাস, কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে প্রায় দেড় হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। যশোর থেকে ঢাকার কারওয়ান বাজার পর্যন্ত ট্রাকভাড়া ২৪ হাজার টাকা। এই পথেও কয়েক জায়গায় চাঁদা দিতে হয়।