সহনশীল আচরণ মুমিনের ভূষণ। সহনশীল আচরণের মাধ্যমে শত্রুকে বন্ধুতে রূপান্তরিত করা যায়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘উৎকৃষ্ট দ্বারা মন্দ প্রতিহত করো, তাহলে যাদের সঙ্গে তোমার শত্রুতা আছে, সে হয়ে যাবে অন্তরঙ্গ বন্ধুর মতো। ’ (সুরা : হামিম সিজদা, আয়াত : ৩৪) সহনশীলতা ও ভালোবাসা আল্লাহর নিয়ামত। মহান আল্লাহ তাঁর বিশেষ নেক বান্দাদের এই নিয়ামত দান করেন। ফলে তারা শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই মানুষের সঙ্গে সহনশীল আচরণ করে। মানুষকে আল্লাহর জন্যই ভালোবাসে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনে এবং সৎ কাজ করে পরম করুণাময় অবশ্যই তাদের জন্য (বান্দাদের হৃদয়ে) ভালোবাসা সৃষ্টি করবেন। ’ (সুরা : মারইয়াম, আয়াত : ৯৬)
আর যারা সহনশীল আচরণ করে, তাদের জন্য আছে জান্নাতের সুসংবাদ। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, আমি কি তোমাদের জানিয়ে দেব না, কোন ব্যক্তির জন্য জাহান্নাম হারাম এবং জাহান্নামের জন্য কোন ব্যক্তি হারাম? যে ব্যক্তি মানুষের কাছাকাছি (জনপ্রিয়), সহজ-সরল, নম্রভাষী ও সদাচারী। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৪৮৮) অনেক সময় সহনশীল থাকার কারণে মানুষকে অন্যদের দ্বারা আক্রান্ত হতে হয়। সহনশীলতার সুযোগ নিয়ে অনেকেই তাদের কষ্ট দেয়, ঠকায়, কোণঠাসা করে রাখে। এর বিনিময়ে মহান আল্লাহ তাদের মর্যাদা আরো বৃদ্ধি করে দেন, তাদের সহযোগিতায় ফেরেশতা নিয়োজিত করে দেন।
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), আমার আত্মীয়-স্বজন আছে। আমি তাদের সঙ্গে সদাচরণ করি; কিন্তু তারা আমাকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে। আমি তাদের উপকার করে থাকি; কিন্তু তারা আমার অপকার করে। আমি তাদের সহনশীলতা প্রদর্শন করে থাকি, আর তারা আমার সঙ্গে মূর্খসুলভ আচরণ করে। তখন তিনি বলেন, তুমি যা বললে, তাহলে যদি প্রকৃত অবস্থা তা-ই হয়, তুমি যেন তাদের ওপর জ্বলন্ত অঙ্গার নিক্ষেপ করছ। আর সর্বদা তোমার সঙ্গে আল্লাহর তরফ থেকে তাদের বিপক্ষে একজন সাহায্যকারী (ফেরেশতা) থাকবে, যতক্ষণ তুমি এ অবস্থায় বহাল থাকবে। (মুসলিম, হাদিস : ৬৪১৯)