মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

সয়াবিন তেল: ১৫ দিনে ১০০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ, ২০২২

বাংলাদেশে সয়াবিন তেলের বাড়তি দাম নিয়ে ১৫ দিনে আনুমানিক প্রায় ১০০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এই তথ্য দিয়েছে। গত বুধবার ঢাকায় ভোজ্য তেল মিল মালিক এবং ডিলারদের নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠক থেকে বলা হয়েছে, তেলের দাম বৃদ্ধি এবং সরবরাহের সংকট সৃষ্টির সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করা হবে। এছাড়াও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের টিম আগামিকাল থেকে তেল মিলগুলোতে গিয়ে সয়াবিন তেলের সরবরাহ নিশ্চিত করবে। একই সাথে মিল মালিকদের দেয়া তিন মাসের সরবরাহের তথ্য ঐ টিম যাচাই করে দেখবে। দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ হঠাৎ করেই কমে গেছে।
এই অভিযোগ তুলে খুচরা এবং পাইকারি বাজারে তেলের বেশি দাম নেয়া হয় দুই সপ্তাহ ধরে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামানের নেতৃত্বে ভোজ্য তেল মিল মালিক ও ডিলারদের নিয়ে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে মি: সফিকুজ্জামান তথ্য দিয়েছেন যে, তেলের বাড়তি দাম নিয়ে গত ১৫ দিনে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মি. সফিকুজ্জামান বলেছেন, প্রতিদিনের ভোজ্য তেলের চাহিদার সাথে তুলনা করে তারা অনুমানিক এই পরিসংখ্যান পেয়েছেন।
“প্রতিদিন যদি ৫০০০ টন ভোজ্য তেলে চাহিদা থাকে, তাতে লিটারে ১০ টাকা করে বাড়লে মোট অংকটা অনেক বড় হয়। এভাবে আনুমানিক একটা পরিসংখ্যান আমরা দিয়েছি,” বলেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। বাজারে এই পরিস্থিতি কারা সৃষ্টি করেছে-তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে ঐ বৈঠকে। তেলের বাজারে কারসাজিতে জড়িত কারা: তবে কিছু ডিলার এবং অসাধু ব্যবসায়ী মিলে এই সংকট সৃষ্টি করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এই অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মি. সফিকুজ্জামান বলেন, “অসাধু চক্র এটা করেছে। কয়েকটা পর্যায় থেকে এই পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে।” “এরমধ্যে যারা ডিলার, তাদেরও কেউ কেউ এখানে জড়িত। আবার পাইকারি পর্যায়ে জড়িত,” বলছেন তিনি। “আমরা আগে মিলগুলোর সরবরাহের তথ্য যাচাই করে তারপর সুনির্দিষ্ট ডিলারদের চিহ্নিত করবো। এরপর সরবরাহের তেল কোথায় গেছে-তাও বের করবো।”
মিলগুলোতে সরবরাহ তদারকি করবে সরকারি টিম: মাত্র ছয়টি মিল সয়াবিন তেল এবং পামওয়েলসহ ভোজ্য তেল রিফাইন বা পরিশোধন করে দেশের বাজারে সরবরাহ করে থাকে। এই মিলগুলো বড় বড় শিল্প গ্রুপের প্রতিষ্ঠান। মিলগুলো থেকে সরবরাহে সংকট তৈরি করা হয়েছে নাকি ডিলারদের কারসাজি – এমন প্রশ্নেও নানা আলোচনা চলছে।
তবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেছেন, তাদের বৈঠকে মিল মালিকরা গত তিন মাসের সরবরাহের তথ্য বা তালিকা দিয়েছেন। “দেশে বছরে ভোজ্য তেলের চাহিদা ২০ লাখ মেট্রিক টন। সে অনুযায়ী তিন মাসের চাহিদা এক লাখ ৫০ হাজার টনের মতো। মিল মালিকরা যে তথ্য বা তালিকা আমাদের দিয়েছে, তাতে তারা চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহের কথা বলেছে,” জানান মি. সফিকুজ্জামান। তিনি উল্লেখ করেন, মিল মালিকদের দেয়া এই তথ্য যাচাই করা হবে। “আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের সমন্বয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরের যৌথ টিম বৃহস্পতিবার থেকে মিলগুলোতে গিয়ে সরবরাহের তথ্য যাচাই করবে।” ভোজ্য তেলের দাম বাড়িয়ে সংকট সৃষ্টির সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করার কথা বলছে সরকার।
তবে প্রাথমিকভাবে কিছু ডিলার বা কিছু পাইকারী বিক্রেতা সরবরাহে সংকট সৃষ্টি করতে পারে বলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর যে সন্দেহ প্রকাশ করেছে সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন একাধিক ডিলার। তবে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতে রাজি হননি।
সরবরাহে ঘাটতি নেই, দাবি মিল মালিকদের: মিল মালিকদের প্রতিনিধি যারা সরকারের সাথে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, তাদের মধ্যে মেঘনা গ্রুপের উপ-উপদেষ্টা মোহাম্মদ শফিউর রহমান বলেছেন, তেল সরবরাহে সংকটের সাথে মিলগুলো জড়িত নয়।
“আমাদের সরবরাহ কখনই বন্ধ নাই।” তবে মি. রহমান বলেছেন, “আমাদের সয়াবিন তেলের একটু সমস্যা হয়েছিল। কারণ তেল নিয়ে একটা জাহাজ একটু দেরিতে এসেছিল।” “কিন্তু পামওয়েল ভোজ্য তেলে ৭০ শতাংশ চাহিদা পূরণ করে থাকে। এবং আমাদের পাওয়েল সরবরাহ কখনও বন্ধ হয়নি বা কখনও এর সংকট হয়নি। ডিলাররাও সরকারের সাথে বৈঠকে এটা স্বীকার করেছে,” জানান মোহাম্মদ শফিউর রহমান। তিনি উল্লেখ করেন, তারা গত তিন মাসের তেল সরবরাহের যে তথ্য সরকারকে দিয়েছেন, তা সরকার যাচাই করে দেখবে। তাতে তাদের আপত্তি নেই। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলেছে, সরবরাহের ব্যাপারে তথ্য প্রমাণ যাচাই করার পর তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে বাজারে সয়াবিনসহ ভোজ্য তেলের সরবরাহ নিশ্চিত করতে ঢাকাসহ সারাদেশে যে অভিযান শুরু হয়েছে-তা অব্যাহত থাকবে। এছাড়া ভোজ্য তেল আমদানিতে শুল্ক কমানোর বিষয়ও সরকার বিবেচনা করছে।- বিবিসি বাংলা, ঢাকা




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com