মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনৈতিক বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড বলেছেন, র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জটিল। এই নিষেধাজ্ঞা সহসাই উঠছে না এমন ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে, আরো আলোচনা হবে। নিষেধাজ্ঞা পরবর্তী ৩ মাসে বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রমে যে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে সেই অগ্রগতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন (নন-পেপার) যুক্তরাষ্ট্রকে শেয়ার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ নিয়ে আগামী দিনে বিভিন্ন বৈঠকে কথা হবে। তিন মাসের অগ্রগতিতে যুক্তরাষ্ট্র সন্তুষ্ট কি-না? এমন প্রশ্নে অবশ্য তিনি নীরব থেকেছেন। রোববার বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের অষ্টম অংশীদারি সংলাপ শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে অস্ত্র বিক্রির পথ সুগম করতে জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (জিসোমিয়া)-এর খসড়া বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড জানান, ইন্দো প্যাসিফিকের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে পাশে চায়।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারি সংলাপে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ।
তিন মাসে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি দেখতে পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র: গত তিন মাসে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি দেখতে পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তাছাড়া, র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে বলে জানায় তারা। গতকাল রবিবার (২০ মার্চ) বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র পার্টনারশিপ ডায়ালগ শেষে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের আন্ডার সেক্রেটারি (পলিটিক্যাল) ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড এসব কথা জানান।
দুই দেশের অষ্টম পার্টনারশিপ ডায়লগ ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং অন্যদিকে মার্কিন পক্ষে ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড।
নুল্যান্ড বলেন, আমরা জানি নিষেধাজ্ঞা একটি জটিল বিষয়। আমরা এটি নিয়ে আলোচনা করেছি তবে একই সঙ্গে বলতে চাই—এটি গোটা আলোচনার খুব ছোট একটি অংশ। তিনি বলেন, আপনারা জানেন র্যাবের কার্যকলাপ, আইন-বহির্ভূত হত্যা ও গুম নিয়ে আমাদের উদ্বেগ আছে। তবে আমরা গত তিনমাসে এই বিষয়গুলো সমাধানে উন্নতি দেখতে পেয়েছি। আমাদেরকে পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন—বাংলাদেশের সরকার এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। দায়বদ্ধতা ও বিচার নিয়ে সরকার কাজ করছে। আমাদেরকে আজকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সরকারের পরিকল্পনা জানিয়ে একটি ডকুমেন্ট দেওয়া হয়েছে। আমরা আলোচনা অব্যাহত রাখবো কারণ নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদ দমন আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে দুই দেশের সম্পর্ক কিভাবে অগ্রসর হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মানবাধিকার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র চুপ থাকবে না। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমরা আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি এবং আজকে একটি অনানুষ্ঠানিক পত্র তাদেরকে হস্তান্তর করেছি। উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে র্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, গণতান্ত্রিক চর্চা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, শ্রম অধিকার এবং ধর্মীয় সম্প্রীতির মতো বিষয়েও আমরা আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি। তাছাড়া বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর উপায় ও ব্লু ইকোনমিতে সম্ভাব্য সহযোগিতা গভীর করার বিষয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।