ঢাকাই ছবির সোনালি যুগের অবসানের পর নব্বই দশকের শেষ দিকে চলচ্চিত্রে অশ্লীল ছবির আগ্রাসন শুরু হয়। অশ্লীলতার যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে চলচ্চিত্রপ্রেমীরা হলবিমুখ হতে শুরু করেন। এ সময় ঢালিউডে ঝড় তোলেন সুঠাম দেহের অধিকারী এক নায়িকা, যার নাম ময়ূরী। চলচ্চিত্রে আগমনের পরই আলোচিত হন ময়ূরী। তখন এই অভিনেত্রীকে স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় বেশকিছু অশ্লীল ছবিতে দেখা যায়। এরপর প্রায় ১০ বছর দাপিয়ে অভিনয় করেন ময়ূরী। ২০০৫ সালের পর চলচ্চিত্র সুস্থ ধারায় ফিরলে অনেকটাই অন্তরালে চলে যান তিনি। তবে ময়ূরী নামটি বরাবরই ছিল দর্শকের আগ্রহের তুঙ্গে! কালেভাদ্র চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের মাঝে দেখা মেলে ময়ূরীকে। তাও পিকনিক বা নির্বাচনে!
বছর খানেক আগেও গণমাধ্যমকে ময়ূরী জানিয়েছিলেন, তিনি সংসার নিয়েই ব্যস্ত। স্বামী-সন্তান আর ধর্মকর্ম করে তার সময় কাটে। কিন্তু এবার জানা গেছে, অর্থ উপার্জনের জন্য সার্কাসে নাচেন তিনি। বছরের বিভিন্ন সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মেলা আয়োজিত হয়। সেই মেলায় অন্যতম আকর্ষণ থাকে সার্কাস। এসব সার্কাসেই নাচেন ময়ূরী। গণমাধ্যমকে তিনি নিজেই তথ্যটি জানিয়েছেন।
সিনেমার বাজার শোচনীয় বিধায় এই পথ বেছে নিয়েছেন ময়ূরী। তিনি বলেন, ‘পরিবার-পরিজন নিয়ে চলতে গেলে সংসারে টাকা লাগবে। পেটের জন্যই তো আমরা সবাই পরিশ্রম করি। বসে বসে খেলে রাজার ভাণ্ডারও একসময় শূন্য হয়ে যায়। সিনেমার বর্তমান বাজার খুবই শোচনীয় পর্যায়ে। তাই সার্কাসে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে সিনেমার জনপ্রিয় গানগুলোর সঙ্গে অভিনয় করি।’ ময়ূরী জানান, তিনি লায়ন অলিম্পিক সার্কাস দলের সঙ্গে পারফর্ম করেন। বললেন, ‘তারা আমাকে যোগ্য সম্মান দিয়ে অনুষ্ঠানে নেয়। হাজার হাজার মানুষের সামনে পারফর্ম করি। কেউ কখনো বাজে মন্তব্য করেনি। উল্টাপাল্টা ধারণা করে না।’ উল্লেখ্য, ময়ূরী অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘মৃত্যুর মুখে’ এবং সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘বাংলা ভাই’। নব্বই দশক থেকে এ পর্যন্ত ময়ূরী অভিনীত তিনশ ছবি মুক্তি পেয়েছে। নার্গিস আক্তার পরিচালিত ‘চার সতীনের ঘর’ (২০০৫) শিরোনামের ছবিতে চলচ্চিত্র অভিনেতা আলমগীরের স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছিলেন ময়ূরী।