ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার রায়গ্রাম ইউনিয়নের আগমুন্দিয়া স্কুলের সামনে থেকে ট্রেন লাইনগামী ৭০০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি রাস্তার কাজ করা হচ্ছে দীর্ঘদিন যাবত। যশোর অঞ্চল গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে রাস্তাটির কাজ শুরু হয় ১৮-২-২০২০ তারিখ। তখন থেকে রাস্তাটি নির্মাণের জন্য থেমে থেমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করলেও সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত (১৮- ৮- ২০২১ তারিখ) সময়ের মধ্যেও তা শেষ করেননি।রাস্তাটির প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয়েছে ২,০৪,০১,৭৩৯ টাকা, চুক্তি মূল্য টাকা হলো ১,৭৪,১৯,৯০৯.৫৬৫ টাকা এবং স্যালভেজ টাকা হলো ২,৮৮,৫১৭,১৫০ টাকা।শুরু থেকেই নি¤œমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে রাস্তাটি করার অভিযোগ করে আসছিল স্থানীয় এলাকাবাসী। কয়েকদিন আগে রাস্তার কাজ শুরু হলে এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ইটভাটায় পড়ে থাকা গ্রেটবিহীন আধলা ইট রাস্তায় ফেলানো হয়েছে। ঐদিনই ব্যাপারটি উপজেলা প্রকৌশলীকে অবহিত করলে তিনি তখনই রাস্তার কাজ পরিদর্শনে আসেন এবং মানহীন ইট রাস্ত থেকে উঠিয়ে নিতে বলেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা ব্যাক্তিকে।মঙ্গলবার সকালে পুনরায় ওই রাস্তায় গেলে দেখা যায়, ২/১ টি জাইগা থেকে অল্প কিছু ইটও খোয়া তোলা হলেও সব জাইগার ইট বা খোয়া তোলা হয়নি বরং ঐ ইটের উপর দিয়েই রুলার করা হচ্ছে।এ ব্যাপারে রাস্তাটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স খন্দকার শাহীন আহমেদ- সময় এন্টারপ্রাইজ জেভির স্বত্বাধিকারীর নিকট একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে রাস্তাটির দেখভাল করার কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি নয়ন হোসেন জানান, নির্মাণব্যয় অত্যাধিক বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছু স্থানে অল্প কিছু ইট আমারা ফেলেছিলাম, এখন আমরা তা সরিয়ে ফেলব। অনেক দিন হয়ে গেলেও রাস্তাটি এখনো শেষ করতে পারিনি।এখন যদি আপনারা ঝামেলা করেন তাহলে হয়ত কাজই বন্ধ হয়ে যাবে। রায়গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপু জানান, আগমুন্দিয়া গ্রামের রাস্তা নিন্মমানের ইট, বালি দিয়ে করা হচ্ছে এমন অভিযোগ আমিও পেয়েছি।রাস্তার কাজে অনিয়ম করা ঠিক হচ্ছে না। এমনিতেই রাস্তাটি স্থানীয় এলাকাবাসীকে চরম ভোগান্তি দিচ্ছে। আমি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলব। কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ জানান,রাস্তার কাজে অনিয়ম মানা হবে না।তাছাড়া আমি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিন্মমানের ইট, বালি রাস্তা থেকে অপসারন করতে বলার পরেও তা কেনো করা হলো না, সেটাও আমি জানবো। আমার স্পষ্ট কথা, শিডিউল এর বাইরে গিয়ে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই, করলেও সে ক্ষেত্রে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন এই রাস্তাটি নিয়ে। রাস্তার কাজে অধিক সময় লাগায় তারাও এখন রীতিমতো বিরক্ত। কেননা, চলাচলে অনুপোযুক্ত এই রাস্তার কারণে করা যাচ্ছে না কৃষি কাজ। আবার কেউ অসুস্থ হলেও তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।তাই এলাকাবাসীর এখন দাবী নিন্মমানের সামগ্রী রাস্তা থেকে অপসারন করে উল্লিখিত মান সম্মত ইট, বালি ব্যাবহার করে অতি সত্তর রাস্তার কাজ সম্পন্ন করার।