অনেক স্বপ্ন ও বুকভরা আশা নিয়ে জমিতে রোপণ করেছিলেন ইরি-বোরো ধান। ফলনও হয়েছিল বেশ ভালো। আর মাত্র ২/৩ সপ্তাহ পরেই নতুন ফসল কেটে ঘরে তুলবেন। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, রৌদ্রে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে যে ফসল তারা ফলিয়েছিলেন সে স্বপ্ন তাদের অধরাই রয়ে গেল। সর্বনাশা ইটের ভাটা তাদের সমস্ত আনন্দ ম্লান করে দিলো নিমিশেই। ইটভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাসে ৩টি গ্রামের কৃষকের ৩০০ বিঘা জমির আধাপাকা ধান পুড়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার লোকেরপাড়া ইউনিয়নে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ক্ষতিপূরণ চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ইউএনও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে কৃষকদের আশ্বস্ত করেছেন। তিন গ্রামের ১১৫ জন কৃষক স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, উপজেলার লোকেরপাড়া ইউনিয়নের গৌরিশ্বর মৌজায় অবস্থিত ‘এমএসটিথ ইটভাটা। এর চারপাশে রয়েছে গৌরিশ্বর, বিল গৌরিশ্বর ও দশানি বকশিয়া নামে ৩টি গ্রাম। পুরো গ্রামজুড়ে রয়েছে কৃষকের দুই ফসলি ধানের জমি। কৃষকের অভিযোগ ইটভাটা থেকে নির্গত গরম বিষাক্ত গ্যাসের কারণে তিন গ্রামের কৃষকের তিন শত বিঘা জমির ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। তবে এমএসটি ভাটার মালিক ফজলুল হক তালুকদার বলেন, কৃষকের ধান নষ্ট হওয়ার ঘটনা সঠিক। তবে এটা ভাটার কারণে না পোকার আক্রমণ বা অন্য কোনো কারণে হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত না। ইটভাটার কারণে ধানের ক্ষতি হলে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলশাদ জাহান বলেন, সরজমিন গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে, ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়া ও গ্যাসের কারণেই ক্ষেতের ধান নষ্ট হয়েছে কিনা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিয় চৌধুরী বলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে নিয়ে সরজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।