প্রতিপক্ষের হামলায় হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হওয়া এক যুবক এবং দুই পা ভেঙে যাওয়া ইউপি সদস্য অভিযুক্ত এক জনপ্রতিনিধির গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে পিরোজপুর প্রেসক্লাবে বিচ্ছিন্ন হওয়া কব্জি নিয়ে ওই যুবক এবং প্রতিপক্ষের হামলায় দুই পা ভেঙে যাওয়া ইউপি সদস্য সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়। এ সময় লিখিত বক্তব্যে তারা জানায়, স্থানীয় আধিপত্যের বিস্তার নিয়ে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর পিরোজপুর সদর উপজেলার সিকদারমল্লিক ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ রুহুল আমীনের দুই পা ভেঙে দেয় প্রতিপক্ষ। নিজ বাড়ি উপজেলার খাউলবুনিয়া থেকে মোটরসাইকেলযোগে পিরোজপুর শহরে আসার পথে তার গতিরোধ করে তাকে পার্শবর্তী একটি বাগানের মধ্যে তুলে নিয়ে যায় প্রতিপক্ষরা। এরপর সেখানে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে তার দুই পা ভেঙে দেওয়া হয়। রুহুল আমীন সিকদারমল্লিক ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতিরও দায়িত্বে রয়েছে। এ ঘটনায় প্রথমে পিরোজপুর সদর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ তা গ্রহন করেনি। এরপর আদালতের নির্দেশে এ বছরের ২ জানুয়ারি পিরোজপুর সদর থানায় রুহুলের ভাই মোঃ কামরুল শেখ বাদী হয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে। এই মামলায় পিরোজপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম বায়েজিদ হোসেন, তার চাচা ও কদমতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শিহাব শেখ ও চাচা মোঃ ফারুক শেখ এবং মামা গোলাম রব্বানী ওরফে পিন্টুক আসামী। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এ বছরের ১৩ জানুয়ারি কদমতলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া হানিফ খান এর সমর্থক নাদিম খানকে তার এক বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে অ¯্র নিয়ে হামলা করে প্রতিপক্ষরা। এ সময় নাদিমের ডান হাত কেটে বিচ্ছিন্ন করে দেয় হামলাকারীরা। এ ঘটনায় নাদিমের আত্মীয় তামান্না বাদী হয়ে ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে পরের দিন পিরোজপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এই মামলায়ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বায়েজিদ, তার চাচা এবং মামা আসামী। দুটি মামলায়ই উচ্চ আদালত এবং নি¤œ আদালত থেকে জামিন নিয়ে জেলের বাইরে আছে অধিকাংশ আসামী। তবে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেওয়ার পর আর নি¤œ আদালতে হাজির হয়নি বায়েজিদ। এছাড়া পুলিশের সামনে সে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ালেও তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে ভূক্তভোগীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে পিরোজপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন হামলার শিকার ভূক্তভোগী রুহুল আমীন ও হাতের কব্জি বিচ্ছন্ন হওয়া নাদিম। এদের মধ্যে নাদিম বিচ্ছিন্ন হওয়া কব্জি নিয়ে এবং রুহুল আমীন অনেকটা পঙ্গু অবস্থায়ই সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেয়। তাদের অভিযোগ প্রকাশ্যে পুলিশের সাথেই ঘুরে বেড়ায় বায়েজিদ। এরপরও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না পুলিশ। দুইটি ঘটনার সময়ই বায়েজিদ ঢাকায় অবস্থান করছিল বলে জানান পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জাফর মোঃ মাসুদুজ্জামান। এ দুটি মামলায় পুলিশ এখনও অভিযোগপত্র না দিলেও, ঘটনার সাথে বায়েজিদের কোন সম্পৃক্ততা নাই বলে দাবি করেন ওসি মাসুদুজ্জামান। তবে বায়েজিদের চাচা ফারুক পলাতক রয়েছে এবং তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত আছে বলে জানান তিনি।