পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় যে বাহিনী প্রয়োজন সে বাহিনী মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি। তিনি বলেন পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ফিরিয়ে আনতে র্যাবসহ আরো বেশি পুলিশ মোতায়েন করা হবে। তিনি বলেন আমাদের পুলিশ অনেক সক্ষম পুলিশ এখন যে কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে প্রস্তুত। পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রত্যাহারকৃত সেনা ক্যাম্পগুলোতে আর্মড পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হবে এমন মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার আগে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায় পুলিশের এপিবিএন হেডকোয়ার্টার স্থাপন করা হবে। পরবর্তীতে প্রত্যাহারকৃত সেনা ক্যাম্পগুলোতে এপিবিএন পুলিশের ক্যাম্প সম্প্রসারনের কাজ শুরু হবে। পার্বত্য অঞ্চলের সন্ত্রাসীদের প্রতি ইঙ্গিত করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা জলদস্যু ও চরমপন্থী মুক্ত করেছি, সেই জায়গায় এখানেও আমরা শান্তিশৃঙ্খলা সবার প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত করব, যেখানে যা প্রয়োজন হয় তা করা হবে, সরকার পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বদ্ধ পরিকর বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। বুধবার (২৫ মে) রাতে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে তিন পার্বত্য জেলার আইন শৃংখলা সংক্রান্ত বিশেষ সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাত পৌনে ৮টার দিকে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊশৈসিং এমপি, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় সন্তু লারমা, খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি, খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, সংরক্ষিত আসনের মহিলা সংসদ সদস্য বাসন্তি চাকমা, মন্ত্রী পরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদ, র্যাবের মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ মামুন, ডিজিএফআই প্রধান মেজর জেনারেল আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানগণ, তিন পার্বত্য জেলা প্রশাসকগণসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে তিন পার্বত্য জেলার প্রতিনিধি, সেনা, পুলিশ, বিজিবির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে অনুষ্ঠিত উক্ত বিশেষ বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আরো বলেন, পাহাড়ে শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আমি ২ বছর আগে রাঙ্গামাটিতে এসে হেডম্যান, কার্বারী, জনপ্রতিনিধি ও তিন পার্বত্য জেলার রাজা উনাদের নিয়ে আলাপ আলোচনা করেছি তাদের একটা অনুরোধ ছিলো এই এলাকার শান্তির জন্য, তারা নানান ধরণের সাজেশন দিয়েছিলেন, তাদের ভয়ংকর পরিস্থিতির কথা বলছিলেন, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী এবং দল উপদলের মারামারি কথা বলছিলেন। আমরা আজকে ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছি, তিন জেলায় তিনটি আর্মস পুলিশ ব্যাটালিয়ন আসবে, যার সদর দপ্তর হবে রাঙ্গামাটি। এই তিন ব্যাটালিয়নের পুলিশ সদস্যরা ধীরে ধীরে পরিত্যক্ত ক্যাম্পগুলোতে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করবে। আপাতত আমরা ৩০টি অস্থায়ী ক্যাম্পে পুলিশ মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্রথমধাপে তিনটি ক্যাম্প বসানো হবে, বৃহস্পতিবার (২৬ মে) এর ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করা হবে। এর আগে রাঙ্গামাটি সার্কিট হাউজে সন্ধ্যা ৬টার দিকে পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেএসএস সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় সন্তু লারমার সাথে একান্ত বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।