ভাষা-সংস্কৃতি, ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদ ভুলে প্রেমের টানে সুদূর মরিশাস থেকে বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন তরুণী। নাম তার বিবি সোহেলা(২৬)। ২০১৯ সালে সুদূর প্রবাস মরিশাসে কাজের সুবাদে পরিচয় হয় বাংলাদেশি ছেলে মুস্তাকিন ফকির(২৭) এর সঙ্গে। পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই সম্পর্কের দুই বছরের মধ্যেই তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিবাহের দেড় বছর পর গত শনিবার ৪ই জুন স্বামীর বাড়ি বাংলাদেশের ফরিদপুরে বেড়াতে আসেন বিবি সোহেলা। স্বামী মুস্তাকিন ফকির ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের কৃষক খবির ফকিরের ছেলে। সমাজে ভালোবাসার টানে ঘর ছাড়ার ঘটনা অহরহ ঘটলেও প্রেমের সম্পর্কে ভিনদেশী ছেলেকে বিয়ে করে দেশ ছাড়ার ঘটনা এদেশে খুবই সামান্য। তবে সোস্যাল মিডিয়া (ফেসবুকের) বদৌলতে বিশ্বে এরকম প্রেম বা বিবাহের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আদিকাল থেকেই ভালবাসা বা প্রেমের সম্পর্ক বিদ্যমান আছে। লাইলী মজনু, শিরি ফরহাদ, দন্ডিদাস রজকিনী, রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্তের সাথে তাল মিলিয়ে হেটেছেন এ দেশ বা বিশ্বে কোটি কোটি যুগোল প্রেমিক। কারো কপালে জুটেছে যুগোল বন্দী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া আবার কারো কপালে জুটেছে হারানোর বেদনায় সারাজীবনের কান্না। সেরকম এক ঘটনা ঘটেছে গত ৪ ই জুন শনিবার সকালে মরিশাস থেকে বাংলাদেশের ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন বিবি সোহেলা। পরে স্বামী মুস্তাকিন তাকে তার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরে নিয়ে আসেন। বিদেশী বধু আসার খবরে আসপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নব-বধূকে দেখতে মুস্তাকিনের বাড়িতে ভীড় জমান উৎসুক জনতা। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মরিশাসের রাজধানী পোর্ট লুইস শহরের এক মুসলিম পরিবারে জন্ম সোহেলার।বাবা হারা দুই বোনের মধ্যে বিবি সোহেলা হলো ছোট। সেখানকার একটি ইউনিভার্সিটি থেকে ¯œাতক ডিগ্রী অর্জন করেন সোহেলা। বর্তমানে সে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। আর সেখান থেকেই পরিচয় হয় বাংলাদেশী তরুন মুস্তাকিনের সাথে। ভিনদেশী বধু ঘরে আসায় খুশির আমেজ বিরাজ করছে মুস্তাকিনের পরিবারের মাঝে। বিবি সোহেলা মিডিয়ার সামনে কথা বলতে রাজি হয়নি। এ ব্যাপারে মুস্তাকিনের বাবা খবির ফকির বলেন, তাদের সম্পর্ক ও বিয়ের ব্যাপারে তার ছেলে তাদেরকে আগেই জানিয়ে ছিলেন। পরে তারা মোস্তাকিনের সাথে পরিবারের সদস্যরা মিলে বিমানবন্দরে গিয়ে পুত্রবধূ সোহেলাকে গ্রহণ করেছেন। এ ব্যাপারে মুস্তাকিন ফকির বলেন, গত সাড়ে তিন বছর পুর্বে তাদের পরিচয় হয় মরিশাসে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। মুস্তাকিন ঐ দেশের একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে কাজ করতো। সেখান থেকেই তাদের পরিচয়। পরে টানা দুই বছর প্রেমের সম্পর্কের একপর্যায়ে পারিবারিক ভাবে তারা বিয়ে করেছেন। মুস্তাকিন আরো জানায় তার স্ত্রী এক মাসের জন্য এখানে বেড়াতে এসেছেন।