সিলেট-সুনামগঞ্জে ভয়াবহ বন্যার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধন উৎসবের নামে শত শত কোটি টাকা ওড়ানো হচ্ছে। অথচ সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও উত্তরাঞ্চলসহ বন্যা উপদ্রুত এলাকাসমূহে পানিবন্দি মানুষের জন্য যে সরকারি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা একেবারেই অপ্রতুল। গতকাল রোববার (১৯ জুন) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, এমন মহা দুর্যোগের করাল গ্রাসে যখন মানুষ বিপর্যস্ত-বিপন্ন, তখন সরকার পদ্মা সেতু উদ্বোধনের উৎসব আনন্দে আত্মহারা। এ সময় পদ্মা সেতু নিয়ে উৎসব বন্ধ করে বন্যাকবলিত অঞ্চলকে দুর্গত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানান রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আমরা অবিলম্বে সরকারকে বন্যাকবলিত এলাকায় গিয়ে দুর্গত মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে ওইসব অঞ্চলে যেন আর বন্যা না হয়, তার জন্য উদ্যোগ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ১২২ বছরের ইতিহাসে সিলেট ও সুনামগঞ্জে এমন ভয়ংকর বন্যা আর হয়নি। সবকিছু হারিয়ে মানুষ এখন সর্বশান্ত। ত্রাণের জন্য গোটা বন্যাদুর্গত এলাকা হাহাকার করছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জে শুকনো মাটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সারাদেশ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে জেলা দুটি।
‘এই বন্যার আরও কারণ আছে। হাওর ও নদীগুলোতে বাঁধ এবং সেতু দেওয়া হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। সেখানে এত দুর্নীতি হয়েছে যে, সব বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে এবং নতুন করে যেসব রাস্তা তৈরি করা হয়েছে, তাও ভেঙে যাচ্ছে। সবকিছু সয়লাব হয়ে যাচ্ছে। সেজন্য আজকে এমন একটা অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে আমাদের দেশে।’ ‘এরই মধ্যে সিলেট মহানগর, সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলা বিএনপি বন্যাদুর্গতদের সাহায্যার্থে কাজ করে যাচ্ছে। তারা স্যালো নৌকা ও ট্রলার দিয়ে দুর্গত এলাকার লোকজনদের নিরাপদ স্থলে আনতে সহযোগিতা শুরু করেছে। বন্যার্তদের মাঝে বিএনপির পক্ষ থেকে ত্রাণ-সামগ্রীও বিতরণ করা হচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্তিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক অব্দুস সালাম আজাদ ও স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ।