মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭০, সিলেটেই ৪৮

খবরপত্র ডেস্ক
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন, ২০২২

সারাদেশে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭০ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ২৮ জন। সবচেয়ে বেশি ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে সিলেট বিভাগেই। বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

জেলাভিত্তিক মৃত্যুর সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে সুনামগঞ্জ। ১৭ মে থেকে ২৩ জুনের মধ্যে এখানে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সিলেট জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের। ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা ও জামালপুর জেলায় মৃত্যু হয়েছে পাঁচজন করে। কুড়িগ্রাম ও শেরপুরে তিনজন করে ও লালমনিরহাটে একজন মারা গেছেন।
বন্যায় আরও ২৮ জনের মৃত্যু: সারা দেশে বন্যায় আরও ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে সিলেট বিভাগেই রয়েছে ২৭ জন এবং আরেকজন রংপুর বিভাগের। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো বন্যা বিষয়ক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে ১৭ মে থেকে ২২ জুন পর্যন্ত মোট ৪২ জনের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ নিয়ে বন্যায় মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৭০ জন। এছাড়া বন্যার কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৪৮ জন। এরমধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ২ হাজার ৮৯৫ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, ১৭ মে থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত ময়মনসিংহ বিভাগে ১৮ জন, রংপুর বিভাগে ৪ জন এবং সিলেট বিভাগে ৪৮ জনের মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে সিলেট জেলায় ১৬ জন, সুনামগঞ্জে ২৬ জন, হবিগঞ্জে একজন, মৌলভীবাজারে ৩ জন, ময়মনসিংহে ৫ জন, নেত্রকোনায় ৫ জন, জামালপুরে ৫ জন, শেরপুরে ৩ জন, কুড়িগ্রামে ৩ জন এবং লালমনিরহাটে একজন রয়েছে।
পানি কমায় দাফন হলো বাক্সবন্দি আশরাফ আলীর লাশ: বন্যার পানি কমায় দাফন করা হলো সুনামগঞ্জের কবরস্থানে বাক্সবন্দি করে খুঁটিতে বেঁধে রাখা আশরাফ আলীর (৮৫) লাশ। গতকাল সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ শহরতলীর সুরমা ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর গ্রামের কবরস্থান কিছুটা শুকালে সেখানে তার লাশ দাফন করা হয়।
জানা গেছে, ভয়াবহ বন্যায় ঘরবাড়ি তলিয়ে গেলে রিকশাচালক ইব্রাহিম মিয়া তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আশ্রয় নেন একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এর মধ্যে ইব্রাহিমের বাবা আশরাফ আলী (৮৫) আশ্রয় কেন্দ্রে মারা যান। চারপাশে থই থই পানি। বাবার লাশ নিয়ে অপেক্ষা করেন বৃষ্টি ও পানি কমলে দাফন করবেন। কিন্তু বৃষ্টি তো কমা তো দূরের কথা, বন্যার পানি আরো বাড়তে থাকে। পরে নিরুপায় হয়ে বাবার মরদেহ পলিথিনে মুড়ে বক্সের ভেতর রেখে কবরস্থানের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন পাঁচদিন।
ইব্রাহিম বলেন, গত ১৭ জুন (শুক্রবার) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় বাবা মারা যান। সর্বত্র বন্যার পানি থাকায় বাবার মরদেহ দাফন করতে না পারায় তিনি বাক্সবন্দি করে রেখেছিলেন। পানি কিছুটা কমায় গতকাল সন্ধ্যায় বাবার লাশ দাফন করা হয়েছে।
বন্যা থাকা পর্যন্ত খাদ্যসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু সরবরাহ করা হবে: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়কমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের তালিকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে। যতদিন বন্যা থাকবে ততদিন খাদ্যসহ প্রয়োজনীয় সবকিছুর সরবরাহ করা হবে। বন্যা আরম্ভ হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীসহ সরকারের বিভিন্ন বাহিনী নিয়োগ করেন এবং বন্যাকবলিত মানুষের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দেন। সরকারের পাশাপাশি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও এর সব অঙ্গসংগঠন বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে থাকবে।‘
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার বন্যাকবলিত ১৫শ’ অসহায় পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছেন। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ দিন মন্ত্রী উপজেলার সুজানগর, তালিমপুর, দাসের বাজার, বর্ণি, দক্ষিণভাগ উত্তর, দক্ষিণভাগ দক্ষিণ, উত্তর শাহবাজপুর এবং নিজবাহাদুরপুর ইউনিয়নের বন্যাকবলিত বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন এবং সরকারের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় বন্যাদুর্গতদের মাঝে চাল, ডাল, আলু এবং শুকনো খাবার-সংবলিত ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। ত্রাণ বিতরণকালে অন্যদের মধ্যে বড়লেখা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সুন্দর এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা উবায়েদ উল্লাহ খান উপস্থিত ছিলেন। পরিবেশমন্ত্রী তার বক্তব্যে বন্যাদুর্গতদের সাধ্যমতো সহায়তা প্রদানের জন্য প্রবাসী এবং সমাজের সামর্থ্যবান মানুষের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ বন্যাপ্রবণ এলাকা, তাই আমাদের এ ধরনের দুর্যোগের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।’ তিনি এ সময় যেকোনও প্রয়োজনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ দলীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। প্রসঙ্গত, এর আগে পরিবেশমন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগদান করেন এবং প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com